এক সপ্তাহ আগে মোটরসাইকেলটি কিনেছিলেন মেহেদী by মরিয়ম চম্পা
ছয়
ভাই এক বোনের মধ্যে সবার ছোট মেহেদী হাসান (২৬)। ছিলেন পরিবারের সবার
আদরের। না চাইতে সব চাহিদা পূরণ করতেন বড় ভাইয়েরা। এক মাস আগে বড় ভাইয়ের
কাছে ১ লাখ টাকা চেয়েছিলেন। ছোট ভাইয়ের সে আবদারও পূরণ করেছেন বড় ভাই।
মাত্র ১ সপ্তাহ আগে সখ করে একটি মোটরবাইক ক্রয় করেন মেহেদী। কিন্তু সেই
মোটরবাইকেই যে তার মৃত্যু হবে এটা ভাবতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। গত
বুধবার সন্ধ্যায় বনশ্রীর আল রাজি হাসপাতালের সামনে কাভার্ড ভ্যানের চাপায়
নিহত হন তিনি। নিহত মেহেদী মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। মেহেদীর বন্ধু ইকবাল
হোসাইন মানবজমিনকে বলেন, সে আমার ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী এবং ভালো বন্ধু
ছিল। মেহেদী ঢাকা কলেজে অনার্সে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ফাইনাল
ইয়ারের শিক্ষার্থী ছিলেন। সবেমাত্র পরীক্ষা শেষ হয়েছে। শিগগিরই ফল
প্রকাশের কথা রয়েছে। ফাস্ট ইয়ার থেকে থার্ড ইয়ার পর্যন্ত সে অনেক ভালো
রেজাল্ট করেছে। বিসিএস পরীক্ষা দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক
লাইব্রেরীতে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত পড়তে যেতেন মেহেদী। ভর্তি হয়েছিলেন
ব্রিটিশ কাউন্সিলের ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাবে। গুলশান থেকে যাতায়াতে সুবিধার
বিষয়টি মাথা রেখে মাত্র এক সপ্তাহ আগে নতুন মোটরবাইকটি ক্রয় করেন মেহেদী।
রেজিস্ট্রেশন হয়েছে গত ২০শে মে। বন্ধুরা কেউ কেউ জানলেও পরিবারের সদস্যরা
তার মোটরসাইকেল ক্রয়ের বিষয়টি জানতেন না। অথচ তাকে নিয়ে কিছু গণমাধ্যমে
নিউজ করা হয়েছে সে নাকি পাঠাও চালক। যে ছেলে গুলশানে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা
বেতনে চাকরি করতো সে পাঠাও চালাবে কোন দুঃখে।
ঢাকা কলেজের আরেক বন্ধু বলেন, ব্যক্তি হিসেবে সে সবার সাথে খুব আন্তরিক ছিল। বছরখানেক আগে তার সঙ্গে আমি প্রায় একবছরের মতো রুমমেট হিসেবে ছিলাম। গ্লোরি এজেন্সিতে চাকরি হওয়ার পর সে গুলশানে চলে যায়। পরে বাড্ডার গুদারাঘাটে থাকতো। সর্বশেষ আমরা একটি ট্যুরে গিয়েছিলাম। সেখানে ওর সঙ্গে অনেক মজা করেছি। ব্যক্তি হিসেবে সে সত্যিই খুবই মিশুক ছিল।
রুমমেট ও ভাতিজা ওবায়দুল্লাহ বলেন, কাকা আর আমি একই রুমে থাকতাম। ঘটনার দিন সকালে আমরা একত্রে বেরিয়েছি। দুপুরের দিকে মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে আমার সর্বশেষ কথা হয়। এসময় কাকা আমাকে বলেন, গুলশানে আছি। একটু কাজ আছে। কাজ শেষ করে ফিরবো। আগে গুলশানের একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে সে চাকরি করতো। ফাইনাল পরীক্ষার আগে চাকরি ছেড়ে দেয়। সুস্থ মানুষটা বাসা থেকে বেরিয়ে এভাবে লাশ হয়ে ফিরবে এটা ভাবতেই পারছিনা।
মেহেদীর বড় ভাই গাড়িচালক মিরাজ কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের জিয়ানগর থানায়। বাবার নাম আব্দুস সোবাহান হাওলাদার। তিনি কৃষি কাজ করেন। মা রহিমা বেগম গৃহিনী। ৭ ভাইবোনের মধ্যে সে ছিল সবার ছোট। ভাইয়ের কোনো চাওয়া আমরা অপূর্ণ রাখিনি। গত মঙ্গলবার ওর সাথে আমার শেষবারের মতো কথা হয়। আমি বলেছি, তুই কি বাড়িতে আসবি। তখন মেহেদী বলে, হ্যা ভাইয়া। এসময় আমি বলি, ঠিক আছে। আমি গাড়ির ট্রিপ নিয়ে ঢাকায় আসবো। ওই গাড়িতেই তুই আমার সাথে যাবি। মারা যাওয়ার আগে গ্রামে থাকা ব্যবসায়ী আরেক ভাইয়ের কাছে মেহেদী ১ লাখ টাকা চায়। টাকা দিয়ে কি করবে এটাও আমরা জানতে চাইনি। ভাইয়ের সব আবদার পুরন করে ভাইকে মানুষের মতো মানুষ করতে চেয়েছি। আর সেই ভাইয়ের লাশ আজ আমার কাধে বইতে হবে। এতো কষ্ট কোথায় রাখবো আল্লাহ।
এলাকার বন্ধু আবীর হোসেন বলেন, বন্ধু হিসেবে সে ছিল বেস্ট। একজন মানুষের মধ্যে মানবীয় যতগুলো গুনাবালী থাকা দরকার তার সবগুলোর সমন্বয়ে সে ছিল শ্রেষ্ঠ। ১ সপ্তাহ হয়েছে নতুন বাইক কিনেছে।
খিলগাঁও থানার ডিউটি অফিসার এসআই নাজমুল বলেন, বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টায় খিলগাঁও থানার বনশ্রী এলাকার আলরাজী হাসপাতালের একটি কাভার্ড ভ্যান মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ছিটকে পড়েন মেহেদী। পরে কাভার্ড ভ্যানটি তার মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে চালক মেহেদী হাসান ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ কাভার্ড ভ্যানটিকে আটক করে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার বাদি হয়ে মামলা করেছে। গাড়ি চালককে ইতোমধ্যে কোর্টে চালান করা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার শেষবারের মতো প্রিয় প্রাঙ্গন ঢাকা কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে মেহেদীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে লাশবাহী এম্বুলেন্সে করে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক গোরোস্থানে দাফন করা হয়।
ঢাকা কলেজের আরেক বন্ধু বলেন, ব্যক্তি হিসেবে সে সবার সাথে খুব আন্তরিক ছিল। বছরখানেক আগে তার সঙ্গে আমি প্রায় একবছরের মতো রুমমেট হিসেবে ছিলাম। গ্লোরি এজেন্সিতে চাকরি হওয়ার পর সে গুলশানে চলে যায়। পরে বাড্ডার গুদারাঘাটে থাকতো। সর্বশেষ আমরা একটি ট্যুরে গিয়েছিলাম। সেখানে ওর সঙ্গে অনেক মজা করেছি। ব্যক্তি হিসেবে সে সত্যিই খুবই মিশুক ছিল।
রুমমেট ও ভাতিজা ওবায়দুল্লাহ বলেন, কাকা আর আমি একই রুমে থাকতাম। ঘটনার দিন সকালে আমরা একত্রে বেরিয়েছি। দুপুরের দিকে মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে আমার সর্বশেষ কথা হয়। এসময় কাকা আমাকে বলেন, গুলশানে আছি। একটু কাজ আছে। কাজ শেষ করে ফিরবো। আগে গুলশানের একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে সে চাকরি করতো। ফাইনাল পরীক্ষার আগে চাকরি ছেড়ে দেয়। সুস্থ মানুষটা বাসা থেকে বেরিয়ে এভাবে লাশ হয়ে ফিরবে এটা ভাবতেই পারছিনা।
মেহেদীর বড় ভাই গাড়িচালক মিরাজ কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের জিয়ানগর থানায়। বাবার নাম আব্দুস সোবাহান হাওলাদার। তিনি কৃষি কাজ করেন। মা রহিমা বেগম গৃহিনী। ৭ ভাইবোনের মধ্যে সে ছিল সবার ছোট। ভাইয়ের কোনো চাওয়া আমরা অপূর্ণ রাখিনি। গত মঙ্গলবার ওর সাথে আমার শেষবারের মতো কথা হয়। আমি বলেছি, তুই কি বাড়িতে আসবি। তখন মেহেদী বলে, হ্যা ভাইয়া। এসময় আমি বলি, ঠিক আছে। আমি গাড়ির ট্রিপ নিয়ে ঢাকায় আসবো। ওই গাড়িতেই তুই আমার সাথে যাবি। মারা যাওয়ার আগে গ্রামে থাকা ব্যবসায়ী আরেক ভাইয়ের কাছে মেহেদী ১ লাখ টাকা চায়। টাকা দিয়ে কি করবে এটাও আমরা জানতে চাইনি। ভাইয়ের সব আবদার পুরন করে ভাইকে মানুষের মতো মানুষ করতে চেয়েছি। আর সেই ভাইয়ের লাশ আজ আমার কাধে বইতে হবে। এতো কষ্ট কোথায় রাখবো আল্লাহ।
এলাকার বন্ধু আবীর হোসেন বলেন, বন্ধু হিসেবে সে ছিল বেস্ট। একজন মানুষের মধ্যে মানবীয় যতগুলো গুনাবালী থাকা দরকার তার সবগুলোর সমন্বয়ে সে ছিল শ্রেষ্ঠ। ১ সপ্তাহ হয়েছে নতুন বাইক কিনেছে।
খিলগাঁও থানার ডিউটি অফিসার এসআই নাজমুল বলেন, বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টায় খিলগাঁও থানার বনশ্রী এলাকার আলরাজী হাসপাতালের একটি কাভার্ড ভ্যান মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ছিটকে পড়েন মেহেদী। পরে কাভার্ড ভ্যানটি তার মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে চালক মেহেদী হাসান ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ কাভার্ড ভ্যানটিকে আটক করে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার বাদি হয়ে মামলা করেছে। গাড়ি চালককে ইতোমধ্যে কোর্টে চালান করা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার শেষবারের মতো প্রিয় প্রাঙ্গন ঢাকা কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে মেহেদীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে লাশবাহী এম্বুলেন্সে করে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক গোরোস্থানে দাফন করা হয়।
No comments