উস্কানি বক্তব্য ট্রাম্পের নির্বাচনী কৌশল

বিতর্ক, উত্তেজনা ও উস্কানিকে কৌশল হিসেবে নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান মনোনয়ন প্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প। চরমপন্থা-সন্ত্রাসবাদের আমেরিকানদের ভীতি ও সিরীয় শরণার্থীদের ঘিরে অজানা আতংককে পুঁজি করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চান তিনি। বুধবার বার্তাসংস্থা এএফপির এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এসব বিতর্কিত বক্তব্য পরিকল্পনামাফিক ও ইচ্ছাকৃত। মনোয়নপ্রাপ্তিতে নির্বাচনের প্রাথমিক ধাপে তিনি এতে সফলতাও পেতে পারেন। গত সপ্তাহে ক্যালিফোর্নিয়ায় মুসলিম দম্পতির বন্দুক হামলাকে সূত্র ধরে ট্রাম্প সোমবার সবচেয়ে চরমপন্থী বক্তব্য রেখেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের প্রবেশে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞার দাবি করেছেন তিনি। ক্যালিফোর্নিয়া হামলার নিন্দায় পুরো দুনিয়ার মুসলিমরা সরব হলেও নির্বাচনী বিতর্ক সৃষ্টিতে এটাকেই মোক্ষম সুযোগ হিসেবে নিলেন তিনি। দক্ষিণ ক্যারোলিনায় তার জনসভায় সমর্থকরা এতে খুশি হয়ে উল্লাসও প্রকাশ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী ১ ফেব্র“য়ারি আইওয়াতে ও তার আট দিন পর হ্যাম্পশায়ারে মনোনয়ন ভোট রয়েছে। নির্বাচন পর্যন্ত যে কোনো মূল্যে আলোচনায় থাকতে চান ট্রাম্প।
এর আগে মেক্সিকো সীমান্তে বেড়া দিয়ে অভিবাসী ঠেকানোর প্রস্তাব দিয়ে অতি রক্ষণশীলদের কাছে টানতে চেয়েছিলেন। তাদের ভয় দেখিয়েছিলেন, আমেরিকার চাকরি-বাকরি ও সুবিধা বিদেশীরা দখল করছে। উপরন্তু ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ১০ হাজার সিরীয় শরণার্থী নেয়ার প্রস্তাবে অনেক মার্কিনিই ভীত সন্ত্রস্ত। আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেনিফার লনেস বলেন, শুধু অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বলে কাজ না-ও হতে পারে। কিন্তু অভিবাসীদের যদি সন্ত্রাসবাদ, পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে জুড়ে দেয়া যায় তবে সহজেই ভীত আমেরিকানদের পক্ষে টানা যাবে। ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ডেভিড সিগেল বলেন, সন্ত্রাসী ঝুঁকি নিয়ে আমেরিকানরা চিন্তিত। এমতাবস্থায় কেউ একজন সমাধানের পথ দেখালে (যদিও তা ভুল) সাময়িকভাবে হলেও অনেকে ভালো আইডিয়া হিসেবে গ্রহণ করবেন। আমেরিকানদের এই অজানা আতংককে কাজে লাগাতে চান ট্রাম্প। জরিপ বলছে, এতে রিপাবলিকান ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের সমর্থন ক্রমশই বাড়ছে। কিন্তু ধর্মবিশ্বাসের ভিত্তিতে কাউকে নিষিদ্ধ করতে যাওয়া আমেরিকান সংবিধানের পরিপন্থী। তবে ট্রাম্পের সমর্থকরা গভীরভাবে না ভেবে এটাকে তার সন্ত্রাসবিরোধী নীতি হিসেবে দেখছে।

No comments

Powered by Blogger.