চট্টগ্রামে ঈদবাজারে চোরাই সোনা by মহিউদ্দীন জুয়েল
এই
ঈদে সারা দেশের গহনার বাজারে বেশির ভাগ সোনা চোরাই পথে আনা হচ্ছে। এক একজন
গহনা ব্যবসায়ী ৫০ থেকে ১০০ কোটি টাকার সোনার চাহিদা দিচ্ছেন দুবাইয়ে। ঢাকা
ও চট্টগ্রামে গত ৬ মাসে ধরা পড়েছে ২০০ কোটি টাকার বেশি সোনার বার। কেবল
মাত্র শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়েই ২০টির বেশি চক্র এসব চালান
মধ্যপ্রাচ্য থেকে এনে সারা দেশে পাচার করছে। বেশ কিছু চালান ধরা পড়ার ঘটনায়
গ্রেপ্তারকৃতরা গোয়েন্দা পুলিশকে জানিয়েছেন এমনি তথ্য। তারা বলেছেন, রোজার
ঈদে সারা দেশে চোরাই সোনার বিশাল চাহিদা রয়েছে। আর তা মেটানোর জন্য
কারবারীরা দুবাইয়ে অর্ডার দিচ্ছেন। এই কাজে তারা সহযোগিতা নিচ্ছেন হুন্ডি
ব্যবসায়ীদেরও। অপরাধীদের এমন তৎপরতায় নড়েচড়ে বসেছে চট্টগ্রাম শাহ আমানত
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বাড়ানো হয়েছে নজরদারিও।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের নথি ঘেঁটে দেখা যায়, চট্টগ্রামে যেসব চালান ধরা পড়ছে সেগুলোর সবক’টিরই চাহিদা ঈদকে ঘিরে। দেশীয় সোনার বাজার পর্যাপ্ত না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাই বেশি টাকার আশায় মধ্যপ্রাচ্যের অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন নিয়মিত। পাশাপাশি ঈদের পরপরই বিয়ের উৎসব থাকায় সোনার চাহিদা বাড়ছে বলে ধরা পড়া ব্যক্তিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
গত ২৩শে জুন চট্টগ্রামে ধরা পড়ে ২০ কোটি টাকার সোনার বার। নগরীর বায়েজিদ থানা এলাকার হিলভিউ আবাসিক থেকে একটি প্রাইভেটকারসহ ১৩০টি সোনার বার ও প্রচুর গহনা উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে এই ঘটনায় গ্রেপ্তার ফারুক, জাকির ও জহির নামের ৩ ব্যক্তি জিজ্ঞাসাবাদে জানান, আলমগীর নামের হিলভিউ এলাকার এক ব্যবসায়ী এসব সোনা বিদেশ থেকে নিয়ে এসেছেন। আর এই কাজে জড়িত রয়েছে হাজারী গলির কয়েকটি সিন্ডিকেট। মূলত এসব সোনা ঈদের বাজারের জন্যই আনা হচ্ছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১০ জন ব্যবসায়ী চোরাই সোনা আসার জন্য অগ্রিম টাকাও দিয়েছেন হুন্ডির মাধ্যমে।
জানতে চাইলে বায়েজিদ থানার এসআই এমএ হালিম প্রাইভেট কারের তেলের ট্যাংকের ভেতরে এসব সোনার বার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা নেয়া হচ্ছিল। ঢাকা ও চট্টগ্রামের নিউমার্কেটসহ অভিজাত বিপণিবিতানের অনেক গহনা ব্যবসায়ী এসব সোনা কেনার জন্য তাদের তাগাদা দিচ্ছিল বলে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে।
তবে এই ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে গত ৬ই জুলাই চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার ফরেস্ট একাডেমি গেইট এলাকা থেকে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায়। অভিযুক্ত ছয় ব্যক্তির কাছ থেকে এই সময় পাওয়া যায় ২৬টি সোনার বার।
এদের মধ্যে নিজাম উদ্দিন (২৬) নামের একজন বলেছেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামে চোরাই সোনা কেনার জন্য রয়েছেন অন্তত ২৫০ ব্যবসায়ী। যারা প্রতিনিয়ত গোপনে এসব সোনা কিনে নিচ্ছেন পাচারকারীদের কাছ থেকে। তবে এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রিত হয় মূলত হাজারী গলি থেকে। এই কাজে নিউমার্কেটের আরও ১০ জন ব্যবসায়ীও জড়িত।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার দীপক জ্যোতি খীসার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছেন দুবাই থেকে তারা এসব সোনা নিয়ে আসছেন। ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে এই চাহিদা ততো বাড়বে। শাজাহান নামের এক ব্যক্তি বলেছে এসব কাজে আরও ১০/১৫ জন সোনার কারিগর রয়েছে। যারা দেশী সোনার সঙ্গে বিদেশের সোনার বার মিশ্রণ করতে ওস্তাদ।
গত ৯ই এপ্রিল গভীর রাতে চট্টগ্রামের সদরঘাট এলাকার একটি গুদাম ঘর থেকে উদ্ধার করা বিপুল পরিমাণ সোনা নিয়ে পাওয়া যায় এই নিয়ে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। উদ্ধারকৃত সোনার দাম ২০ কোটি টাকার বেশি।
অভিযানে উদ্ধার করা সোনার মধ্যে রয়েছে ৩২টি গলার চেইন লকেট, ২০টি গলার চেইন, ১৬টি হাতের বালা, ১২টি বাচ্চাদের চুড়ি, ৪ সেট গলার চেইনসহ কানের দুল, ২ সেট মোটা চেইনের গলার সেট, ২টি সীতাহার, ১টি গলার বড় গোল লকেট, ১টি টিকলিসহ চেইন, ২টি দুলসহ গলার চেইন, ৪টি গলার হার, ৪টি গোল লকেটসহ গলার চেইন, ১২ জোড়া কানের দুল, ৯ সেট গুটি চেইনসহ গলার মালা, ১৪টি ছোট চেইন, ১টি গলার ছোট হার ও ৬ সেট কালো পুঁতির গলার মালা।
এই ঘটনায় আটক ম্যানেজার টিটু ও কর্মচারী এমরান পুলিশকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, দীর্ঘদিন ধরে আনুমাঝির ঘাটের ওই গুদাম ঘরটিতে তারা ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের নামে সোনার অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। এই ঘটনার সঙ্গে হাজারী গলির ১০ জন ব্যবসায়ী জড়িত রয়েছে। যারা দুবাই থেকে এয়ারপোর্ট দিয়ে সোনা নিয়ে আসছে অবৈধ উপায়ে। পরে এসব সোনা বিক্রি করা হচ্ছে কর ফাঁকি দিয়ে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল মানবজমিনকে বলেন, বিমানবন্দর থেকে সোনা পাচার হয়ে কোনভাবে তা ব্যবসায়ীদের হাতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে চোরাকারবারীরা। এর আগে ইলেক্ট্রনিক্স এর গুদামে, গাড়ির তেলের ট্যাংকে কোটি কোটি টাকার সোনা পাওয়া গেছে। যা উদ্বেগজনক।
তিনি আরও বলেন, সোনা পাচার রোধে সিভিল পোশাকে কাজ করছে আমাদের একাধিক টিম। বেশ কিছু ঘটনায় সারা দেশের অনেক ব্যবসায়ীর নাম বেরিয়ে এসেছে। মূল হোতাদের অবস্থান পর্যবেক্ষণ চলছে। আশা করছি অনেক রাঘব বোয়াল ধরা পড়বে শিগগিরই।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের নথি ঘেঁটে দেখা যায়, চট্টগ্রামে যেসব চালান ধরা পড়ছে সেগুলোর সবক’টিরই চাহিদা ঈদকে ঘিরে। দেশীয় সোনার বাজার পর্যাপ্ত না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাই বেশি টাকার আশায় মধ্যপ্রাচ্যের অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন নিয়মিত। পাশাপাশি ঈদের পরপরই বিয়ের উৎসব থাকায় সোনার চাহিদা বাড়ছে বলে ধরা পড়া ব্যক্তিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
গত ২৩শে জুন চট্টগ্রামে ধরা পড়ে ২০ কোটি টাকার সোনার বার। নগরীর বায়েজিদ থানা এলাকার হিলভিউ আবাসিক থেকে একটি প্রাইভেটকারসহ ১৩০টি সোনার বার ও প্রচুর গহনা উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে এই ঘটনায় গ্রেপ্তার ফারুক, জাকির ও জহির নামের ৩ ব্যক্তি জিজ্ঞাসাবাদে জানান, আলমগীর নামের হিলভিউ এলাকার এক ব্যবসায়ী এসব সোনা বিদেশ থেকে নিয়ে এসেছেন। আর এই কাজে জড়িত রয়েছে হাজারী গলির কয়েকটি সিন্ডিকেট। মূলত এসব সোনা ঈদের বাজারের জন্যই আনা হচ্ছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১০ জন ব্যবসায়ী চোরাই সোনা আসার জন্য অগ্রিম টাকাও দিয়েছেন হুন্ডির মাধ্যমে।
জানতে চাইলে বায়েজিদ থানার এসআই এমএ হালিম প্রাইভেট কারের তেলের ট্যাংকের ভেতরে এসব সোনার বার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা নেয়া হচ্ছিল। ঢাকা ও চট্টগ্রামের নিউমার্কেটসহ অভিজাত বিপণিবিতানের অনেক গহনা ব্যবসায়ী এসব সোনা কেনার জন্য তাদের তাগাদা দিচ্ছিল বলে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে।
তবে এই ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে গত ৬ই জুলাই চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার ফরেস্ট একাডেমি গেইট এলাকা থেকে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায়। অভিযুক্ত ছয় ব্যক্তির কাছ থেকে এই সময় পাওয়া যায় ২৬টি সোনার বার।
এদের মধ্যে নিজাম উদ্দিন (২৬) নামের একজন বলেছেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামে চোরাই সোনা কেনার জন্য রয়েছেন অন্তত ২৫০ ব্যবসায়ী। যারা প্রতিনিয়ত গোপনে এসব সোনা কিনে নিচ্ছেন পাচারকারীদের কাছ থেকে। তবে এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রিত হয় মূলত হাজারী গলি থেকে। এই কাজে নিউমার্কেটের আরও ১০ জন ব্যবসায়ীও জড়িত।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার দীপক জ্যোতি খীসার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছেন দুবাই থেকে তারা এসব সোনা নিয়ে আসছেন। ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে এই চাহিদা ততো বাড়বে। শাজাহান নামের এক ব্যক্তি বলেছে এসব কাজে আরও ১০/১৫ জন সোনার কারিগর রয়েছে। যারা দেশী সোনার সঙ্গে বিদেশের সোনার বার মিশ্রণ করতে ওস্তাদ।
গত ৯ই এপ্রিল গভীর রাতে চট্টগ্রামের সদরঘাট এলাকার একটি গুদাম ঘর থেকে উদ্ধার করা বিপুল পরিমাণ সোনা নিয়ে পাওয়া যায় এই নিয়ে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। উদ্ধারকৃত সোনার দাম ২০ কোটি টাকার বেশি।
অভিযানে উদ্ধার করা সোনার মধ্যে রয়েছে ৩২টি গলার চেইন লকেট, ২০টি গলার চেইন, ১৬টি হাতের বালা, ১২টি বাচ্চাদের চুড়ি, ৪ সেট গলার চেইনসহ কানের দুল, ২ সেট মোটা চেইনের গলার সেট, ২টি সীতাহার, ১টি গলার বড় গোল লকেট, ১টি টিকলিসহ চেইন, ২টি দুলসহ গলার চেইন, ৪টি গলার হার, ৪টি গোল লকেটসহ গলার চেইন, ১২ জোড়া কানের দুল, ৯ সেট গুটি চেইনসহ গলার মালা, ১৪টি ছোট চেইন, ১টি গলার ছোট হার ও ৬ সেট কালো পুঁতির গলার মালা।
এই ঘটনায় আটক ম্যানেজার টিটু ও কর্মচারী এমরান পুলিশকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, দীর্ঘদিন ধরে আনুমাঝির ঘাটের ওই গুদাম ঘরটিতে তারা ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের নামে সোনার অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। এই ঘটনার সঙ্গে হাজারী গলির ১০ জন ব্যবসায়ী জড়িত রয়েছে। যারা দুবাই থেকে এয়ারপোর্ট দিয়ে সোনা নিয়ে আসছে অবৈধ উপায়ে। পরে এসব সোনা বিক্রি করা হচ্ছে কর ফাঁকি দিয়ে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল মানবজমিনকে বলেন, বিমানবন্দর থেকে সোনা পাচার হয়ে কোনভাবে তা ব্যবসায়ীদের হাতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে চোরাকারবারীরা। এর আগে ইলেক্ট্রনিক্স এর গুদামে, গাড়ির তেলের ট্যাংকে কোটি কোটি টাকার সোনা পাওয়া গেছে। যা উদ্বেগজনক।
তিনি আরও বলেন, সোনা পাচার রোধে সিভিল পোশাকে কাজ করছে আমাদের একাধিক টিম। বেশ কিছু ঘটনায় সারা দেশের অনেক ব্যবসায়ীর নাম বেরিয়ে এসেছে। মূল হোতাদের অবস্থান পর্যবেক্ষণ চলছে। আশা করছি অনেক রাঘব বোয়াল ধরা পড়বে শিগগিরই।
No comments