বাংলাদেশে মোদির বক্তব্যে পাকিস্তানে তীব্র প্রতিক্রিয়া
ঢাকা সফরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তান নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করায় তীব্র সমালোচনা এসেছে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কাজী এম খলিলুল্লাহ গতকাল বলেন, এতে করে সার্বভৌম একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভারতের নেতিবাচক ভূমিকা নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান নিশ্চিত হলো। এটা দুঃখজনক যে, জাতিসংঘ সনদ লঙ্ঘন করে এমন কর্মকাণ্ডেই শুধু ভারতীয় রাজনীতিকরা নিবৃত্ত হন তা নয়, বরং তারা অন্যান্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের কথা স্মরণ করে গর্ব করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া বক্তব্যে মোদির পাকিস্তানবিরোধী মন্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি এ কথা বলেন। এ খবর দিয়েছে পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকা ডন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেছেন, পাকিস্তান শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে এবং ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘নুইসেন্স’ বলে যে আখ্যা দিয়েছেন তা দুঃখজনক। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ শুধু ধর্মীয় ঐক্যের শক্তিশালী বন্ধনে আবদ্ধ তাই নয় বরং দেশ দুটি ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রামে তাদের ইতিহাসের দ্বারা আবদ্ধ। ভ্রাতৃপ্রতিম দুই রাষ্ট্র পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে বিরোধের বীজ বপন করার ভারতীয় চেষ্টা সফল হবে না বলে তিনি জোর দিয়ে বলেন। ১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হস্তক্ষেপ করার বিষয়টি যে ভারত স্বীকার করেছে তা আমলে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। ওদিকে পাকিস্তান অবজারভারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা সফরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্লজ্জ স্বীকারোক্তি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে ভারতের আসল চেহারা উন্মোচিত করেছে। তিনি দুঃসাহসী এক স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে পাকিস্তান ভাগ করতে ষড়যন্ত্র হয়েছিল। প্রত্যেক ভারতীয় ও মুক্তিবাহিনীর পাশে লড়াই করা ভারতীয় বাহিনীর আকাঙ্ক্ষা ছিল পাকিস্তানকে বিভক্ত করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার। এটা নতুন কোন গোপন তথ্য ফাঁস হয়েছে তা নয়, কেননা প্রত্যেক পাকিস্তানি ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিচক্ষণ সদস্যদের কাছে এটা স্পষ্ট যে, ঢাকা পতনে কে কোন ভূমিকা পালন করেছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭১ সালের ট্র্যাজেডিকে গর্ব করে ১০০০ বছরের প্রতিশোধ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন।
No comments