মনোতাপে পুড়ছে জাপানের চল্লিশোর্ধ্ব ব্যাচেলররা
হাস্যোজ্জ্বল স্বাস্থ্যবান তরতাজা পুরুষ তাকাসি সাকাই। বয়স ৪১ বছর। নারীদের প্রতি রয়েছে প্রবল আকর্ষণ। কিন্তু কারও সঙ্গে কখনও শারীরিক সম্পর্ক হয়নি। তাকাসির মতো বিশালসংখ্যক চল্লিশোর্ধ্ব ব্যাচেলররা জাপানে বছরের পর বছর ধরে এমন চাপা মনোতাপে পুড়ছেন। হলিউডের কমেডি সিনেমার মতো শোনালেও জাপানের ‘সামাজিক অব্যবস্থাপনা’ এ পর্যায়ে ঠেকেছে। ২০০৫ সালের স্টিভ সেলের চলচ্চিত্র ‘৪০ বছরের ব্যাচেলর’ জাপানি মধ্যবয়স্কদেরই প্রতিচ্ছবি। আর্থিক অসচ্ছলতা আর বেকারত্বের ঘেরাটোপে বন্দি আবেগ-অনুভূতি। পথে পথে ঘোরা বাউণ্ডুলে ছেলেদের কাছে বিয়ে দিতে রাজি হয় না পাত্রীপক্ষ। শূন্য পকেটের বেকারদের পাত্তা দেয় না সুন্দরীরাও। তাদেরই একজন যেন তাকাসি সাকাই।
সোমবার বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তাকাসি আজ পর্যন্ত কোনো মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে পারেনি। এ বিষয়ে তার কোনো ধারণাও নেই। তার ভাষায়, ‘আমার কখনও কোনো গালফ্রেন্ড ছিল না। এমন না যে, এসবে আমার আগ্রহ নেই। আমি মেয়েদের শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আমি জানি না কীভাবে সম্পর্কে যেতে হয়।’ আবেগ-অনুভূতিকে অবদমন করে তীব্র মনোকষ্টে রয়েছেন জাপানের পুরুষরা। ৪৯ বছর বয়সী এক স্থপতি বলেন, ‘একজন নারীর সঙ্গে মানসিক ও শারীরিক সম্পর্ক গড়ার অক্ষমতা যে কত বেদনার তা বলে বোঝানো যাবে না।’ জাপানের জনসংখ্যা ও সামাজিক নিরাপত্তা গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১০ সালের জরিপ অনুযায়ী, অবিবাহিত জাপানি পুরুষদের এক-চতুর্থাংশের বয়স ত্রিশের বেশি। বিবাহবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ইয়োকো ইটামোটো বলেন, আর্থিকভাবে সচ্ছল না হওয়ায় জাপানি পুরুষরা অবিবাহিত থেকে যাচ্ছে। একটি নিরাপদ ও পূর্ণাঙ্গ চাকরির জন্য তাদের কঠিন সংগ্রাম করতে হয়। গত দুই দশকে পরিস্থিতি আরও জটিল ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
No comments