টকশো by নুরুল ইসলাম বিএসসি
যুদ্ধাপরাধের
বিচার কার্য বা বিচারের রায় নিয়ে কোনো কথা নেই। বিচার কাজ তার নিজস্ব
গতিতে চলছে এবং জামায়াত ছাড়া সবাই তা মেনে নিচ্ছে। মৌনতা সম্মতির লক্ষণ।
বিএনপিও মৌনতা অবলম্বন করে বিচারে সমর্থন দিচ্ছে, যদিও অন্তর্জ্বালা। এ
মুহূর্তে জামায়াত নিষিদ্ধ হলে বিএনপির লাভ। জামায়াতিরা বিএনপিতে নাম
লেখাবে। আমার কথা জামায়াতকে নিয়ে। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা করেছে,
ঘরবাড়ি জ্বালিয়েছে, ধর্ষণের মতো জঘন্য পাপ করেছে। বর্তমানে যারা শিবির করে,
তারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি বা মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতের ক্রিয়াকাণ্ড
দেখেনি। ইতিহাসও সঠিকভাবে লেখা হয়নি, যা থেকে তারা আসল ঘটনা জানতে পারে।
তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই, বেতন পায়, কাজ করে। বেতন কোত্থেকে আসে, সবাই জানে।
কিন্তু পরিতাপের বিষয়, তাদের টাকার উৎস বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়নি।
প্রতিদিন টকশো হয়। টক কী মিষ্টি ওদিকে যাব না। শুধু একথা বলব, যাদের টকশোতে ডাকা হয় তারা কারা। হেফাজত নেতাদের যখন টকশোতে ডাকা হয়, স্বাভাবিক কারণে তারা নিজেদের পক্ষে অবস্থান নেবে এবং জনমত সৃষ্টিতে তাদের কথাগুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তাদের যারা ডাকেন, তাদের দোষ নয়, যারা আসেন তাদের দোষ। যারাই টকশোতে অংশগ্রহণ করেন, সবাই সরকারবিরোধী, ব্যতিক্রম কিছু থাকে।
সমুদ্রে হাঙরসহ মানুষখেকো জন্তু থাকে। হাঙর বা মানুষখেকো জন্তু মানুষের খাদ্য নয়, ফলে আওয়ামী লীগেরও খাদ্য নয়। জামায়াত যতই ভালো হোক, কুমির কি কখনও নিজের স্বভাব বদলাতে পারে? সুতরাং জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সখ্য হওয়ার নয়। হাঙরের কোনো বন্ধু থাকে না। টকশোতে এক ভদ্রলোক যে আওয়ামী লীগাররা জামায়াতের মাংস খাওয়া মাছ ভক্ষণ করবেন বলে উক্তি করেছেন, একথার কোনো বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি নেই।
ভদ্রলোক প্রকারান্তরে স্বীকার করেছেন, সামাজিক অবস্থানের বিচারে নেতার সৃষ্টি হয়। ওই নেতা সামাজিক অবস্থানে থেকেই নিজেকে গড়ে তোলেন। কিন্তু ব্যতিক্রমের কথা তিনি বেমালুম ভুলে গেলেন। ব্যতিক্রমীরাই সমাজে পরিবর্তন আনতে পারেন, পরিশুদ্ধ নতুন সমাজ তথা রাষ্ট্র গঠনে সক্ষম হন। তবে টকশোতে অংশ নেয়ার সময় তারা কোন দলের সমর্থক পরিষ্কার বোঝা যায়। নিরপেক্ষতার ভান করলেও তারা আওয়ামী লীগ বিদ্বেষী, ভালো কাজগুলো তাদের চোখে পড়ে না।
বিএনপি চেয়ারপারসন ১৫ আগস্ট শোক দিবসে কেক কেটে আনন্দ-ফুর্তি করেন। এটা তিনি না করলেও পারতেন। জন্মদিন আর ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিন আলাদা। আবার খালেদা জিয়া যদি ১৫ তারিখ রাত ১২টার পর ভূমিষ্ঠ হয়ে থাকেন, তিনি ১৬ তারিখ ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিন হিসেবে পালন করতে পারতেন। অন্যদিকে ৯ মাস ১০ দিন মাইনাস করেও তিনি জন্মদিন পালন করতে পারতেন। খামাখা বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার এই মানসিকতা জাতির জন্য বড়ই দুর্ভাগ্যজনক। একথাগুলো কি টকশোওয়ালারা অনুধাবন করবেন?
আওয়ামী লীগ সব ভালো করেছে বা করছে একথা আমি দাবি করছি না। একটু সচেতন হলে আরও ভালো করতে পারত। কিন্তু বিএনপি তো দীর্ঘকাল দেশ শাসন করেছে। তারা কেন সমাজ-রাষ্ট্রে পরিবর্তনের বদলে দুঃখ-কষ্ট বয়ে আনলেন? আওয়ামী লীগের বর্তমান কার্যক্রমের জন্য বিএনপি কি শতভাগ দায়ী নয়? খালেদা জিয়ার ছেলেরা যদি হাওয়া ভবন তৈরি না করতেন, দেশের সম্পদ পাচারে জড়িয়ে না পড়তেন, দেশের কি এ অবস্থা হতো? এক চোখে সব দোষ দেখলে তো কিছুই হবে না। দু’চোখে অবস্থা ও অবস্থান পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যারা আওয়ামী লীগ করেন, তারা নিশ্চয়ই অন্ধভাবে কেউ দল সমর্থন বা দল করেন না। নিজের চাওয়ার সঙ্গে দলের চাওয়ার যখন মিল হয়, তখনই ওই ব্যক্তি ওই দলের সমর্থক হন। আওয়ামী লীগের চাওয়ার মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ আছে আর আমাদের হৃদয়ে আওয়ামী লীগের চাওয়ার বস্তুগুলো ধারণ করি বলেই আমরা আওয়ামী লীগ করি। যারা স্বাধীনতা মানে না, যারা সংবিধান মানে না, যারা ধর্মনিরপেক্ষতা মানে না, যারা বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনক মানে না তারাই ভিন্ন ভিন্ন দল করে এবং তারাই এদেশটাকে পাকিস্তানের আদলে গড়ে তুলতে নানা অরাজক অবস্থার সৃষ্টি করছে এবং টকশো নামক অনুষ্ঠানে সে বিদ্বেষ ছড়িয়ে বিভেদের জন্ম দিচ্ছে।
নুরুল ইসলাম বিএসসি : সংসদ সদস্য ও কলাম লেখক
প্রতিদিন টকশো হয়। টক কী মিষ্টি ওদিকে যাব না। শুধু একথা বলব, যাদের টকশোতে ডাকা হয় তারা কারা। হেফাজত নেতাদের যখন টকশোতে ডাকা হয়, স্বাভাবিক কারণে তারা নিজেদের পক্ষে অবস্থান নেবে এবং জনমত সৃষ্টিতে তাদের কথাগুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তাদের যারা ডাকেন, তাদের দোষ নয়, যারা আসেন তাদের দোষ। যারাই টকশোতে অংশগ্রহণ করেন, সবাই সরকারবিরোধী, ব্যতিক্রম কিছু থাকে।
সমুদ্রে হাঙরসহ মানুষখেকো জন্তু থাকে। হাঙর বা মানুষখেকো জন্তু মানুষের খাদ্য নয়, ফলে আওয়ামী লীগেরও খাদ্য নয়। জামায়াত যতই ভালো হোক, কুমির কি কখনও নিজের স্বভাব বদলাতে পারে? সুতরাং জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সখ্য হওয়ার নয়। হাঙরের কোনো বন্ধু থাকে না। টকশোতে এক ভদ্রলোক যে আওয়ামী লীগাররা জামায়াতের মাংস খাওয়া মাছ ভক্ষণ করবেন বলে উক্তি করেছেন, একথার কোনো বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি নেই।
ভদ্রলোক প্রকারান্তরে স্বীকার করেছেন, সামাজিক অবস্থানের বিচারে নেতার সৃষ্টি হয়। ওই নেতা সামাজিক অবস্থানে থেকেই নিজেকে গড়ে তোলেন। কিন্তু ব্যতিক্রমের কথা তিনি বেমালুম ভুলে গেলেন। ব্যতিক্রমীরাই সমাজে পরিবর্তন আনতে পারেন, পরিশুদ্ধ নতুন সমাজ তথা রাষ্ট্র গঠনে সক্ষম হন। তবে টকশোতে অংশ নেয়ার সময় তারা কোন দলের সমর্থক পরিষ্কার বোঝা যায়। নিরপেক্ষতার ভান করলেও তারা আওয়ামী লীগ বিদ্বেষী, ভালো কাজগুলো তাদের চোখে পড়ে না।
বিএনপি চেয়ারপারসন ১৫ আগস্ট শোক দিবসে কেক কেটে আনন্দ-ফুর্তি করেন। এটা তিনি না করলেও পারতেন। জন্মদিন আর ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিন আলাদা। আবার খালেদা জিয়া যদি ১৫ তারিখ রাত ১২টার পর ভূমিষ্ঠ হয়ে থাকেন, তিনি ১৬ তারিখ ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিন হিসেবে পালন করতে পারতেন। অন্যদিকে ৯ মাস ১০ দিন মাইনাস করেও তিনি জন্মদিন পালন করতে পারতেন। খামাখা বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার এই মানসিকতা জাতির জন্য বড়ই দুর্ভাগ্যজনক। একথাগুলো কি টকশোওয়ালারা অনুধাবন করবেন?
আওয়ামী লীগ সব ভালো করেছে বা করছে একথা আমি দাবি করছি না। একটু সচেতন হলে আরও ভালো করতে পারত। কিন্তু বিএনপি তো দীর্ঘকাল দেশ শাসন করেছে। তারা কেন সমাজ-রাষ্ট্রে পরিবর্তনের বদলে দুঃখ-কষ্ট বয়ে আনলেন? আওয়ামী লীগের বর্তমান কার্যক্রমের জন্য বিএনপি কি শতভাগ দায়ী নয়? খালেদা জিয়ার ছেলেরা যদি হাওয়া ভবন তৈরি না করতেন, দেশের সম্পদ পাচারে জড়িয়ে না পড়তেন, দেশের কি এ অবস্থা হতো? এক চোখে সব দোষ দেখলে তো কিছুই হবে না। দু’চোখে অবস্থা ও অবস্থান পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যারা আওয়ামী লীগ করেন, তারা নিশ্চয়ই অন্ধভাবে কেউ দল সমর্থন বা দল করেন না। নিজের চাওয়ার সঙ্গে দলের চাওয়ার যখন মিল হয়, তখনই ওই ব্যক্তি ওই দলের সমর্থক হন। আওয়ামী লীগের চাওয়ার মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ আছে আর আমাদের হৃদয়ে আওয়ামী লীগের চাওয়ার বস্তুগুলো ধারণ করি বলেই আমরা আওয়ামী লীগ করি। যারা স্বাধীনতা মানে না, যারা সংবিধান মানে না, যারা ধর্মনিরপেক্ষতা মানে না, যারা বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনক মানে না তারাই ভিন্ন ভিন্ন দল করে এবং তারাই এদেশটাকে পাকিস্তানের আদলে গড়ে তুলতে নানা অরাজক অবস্থার সৃষ্টি করছে এবং টকশো নামক অনুষ্ঠানে সে বিদ্বেষ ছড়িয়ে বিভেদের জন্ম দিচ্ছে।
নুরুল ইসলাম বিএসসি : সংসদ সদস্য ও কলাম লেখক
No comments