ভারাক্রান্ত রাজধানী ঢাকা -বাড়ছে মানুষ, ভাঙছে স্বপ্ন
পঞ্চাশের দশকে ঢাকা ছিল অপূর্ব সুন্দর। এর আগে রমনায় বাঘ ডাকত। পুরানা পল্টন ছিল আকর্ষণীয়। আর ওয়ারী ছিল সেকালের সৌন্দর্যমণ্ডিত আধুনিক ঢাকার প্রতীক। মাত্র ৬০ বছরেই সেই সব ঐতিহ্য মরে গেছে। স্বপ্নের নগর ভেঙে পড়ছে। আজ ঢাকা এক জনবহুল ও জঞ্জালের নগর। প্রতিদিন এখানে স্রোতের মতো মানুষ ঢুকছে। রাস্তা না বাড়লেও প্রতিদিন বাড়ছে গাড়ির সংখ্যা। এ নগরের জনসংখ্যার কোনো সঠিক হিসাবও নেই কারও কাছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ নগরে এখন বাস করছে প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ লোক। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২৭ হাজার ৭০০ জন।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ধারণের জন্য ঢাকা শুধু দিঘে-পাশেই বাড়ছে না, উচ্চতায়ও বাড়ছে। ঢাকা এখন বহুতল ভবনের কেন্দ্র, যেখানে জমছে নগরবাসীর বহুতল সুখ-দুঃখ। কারণ, নাগরিক পরিষেবা-ব্যবস্থা এতই অপ্রতুল যে সুপেয় পানি, বিদ্যুত্, যাতায়াতব্যবস্থা, চিকিত্সাসহ ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা থেকে বেশির ভাগ মানুষ বঞ্চিত। এমন অপরিকল্পিতভাবে যে বিশ্বের কোনো আধুনিক নগর চলতে পারে, তা অবিশ্বাস্য।
সমস্যা যে তীব্র তাতে সন্দেহ নেই। প্রশ্ন হলো, সমাধান কী? মোটামুটি বসবাস-উপযোগী ঢাকা নগরের জন্য অন্তত তিনটি ক্ষেত্রে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রথমত, সারা দেশের জন্য সঠিক জনসংখ্যানীতি; দ্বিতীয়ত, সুব্যবস্থাপনা; আর তৃতীয়ত, এবং যেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, শক্তিশালী স্থানীয় শাসনব্যবস্থা। যাঁরা দেশ পরিচালনা ও নগর-ব্যবস্থাপনার মতো গুরুদায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের এ তিনটি ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়ছে এবং আশঙ্কা করা হয় যে বর্তমানের প্রায় ১৬ কোটি থেকে বেড়ে ২০৫০ সালে জনসংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে ২৫ কোটি। স্পষ্টতই, এই বৃদ্ধির হারের সঙ্গে তাল রেখে ঢাকা মহানগরের জনসংখ্যাও বাড়বে। কিন্তু একটা লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমছে এবং ২০৫০ সালে মোট জনসংখ্যা সর্বোচ্চ ৯০০ কোটিতে স্থিতি লাভ করবে, এমনকি এরপর ধীরে ধীরে কমে আসবে। বাংলাদেশ এই সাধারণ ধারার বাইরে থাকবে না। অবশ্য এ জন্য যথাযথ পরিকল্পনা ও তার সঠিক বাস্তবায়ন দরকার।
তবে রাজধানী ঢাকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার তাতে কমবে না। সর্বপর্যায়ে দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং বিশেষভাবে স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের স্বশাসন ছাড়া সেটা সম্ভব নয়। এর প্রমাণ আমাদের হাতের কাছেই রয়েছে। কলকাতার জনসংখ্যা যে এমন বেহিসাবির মতো বাড়ছে না, তার অন্যতম একটি কারণ হলো, সেখানে রয়েছে শক্তিশালী স্থানীয় সরকারব্যবস্থা। আমাদের দেশে এখনো সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে চলে। ৪০ থেকে ৫০ শতাংশেরও বেশি চাকরি সৃষ্টি হয় ঢাকায়। সাধারণত নদীভাঙনে স্থানচ্যুত মানুষ আশ্রয়ের জন্য প্রথমে যায় পাশের উপজেলা বা জেলা শহরে। সেখানে চাকরির সংস্থান হলে তারা সহজে রাজধানীতে আসত না। যদি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশালের মতো মহানগরগুলোতে উন্নয়ন প্রকল্প সমন্বিতভাবে বাস্তবায়িত হতো, চাকরির সংস্থান থাকত, শিক্ষা-চিকিত্সার উন্নত ব্যবস্থা গড়ে তোলা যেত, তাহলে সত্যিকার অর্থে এক-একটা ‘টেকসই’ নগর গড়ে উঠত এবং রাজধানী ঢাকা জনজটের অভিশাপ থেকে মুক্ত থাকত।
রাজধানী ঢাকাকে বাঁচাতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। সরকার ও নগর পরিকল্পনাবিদেরা এদিকে নজর দিন।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ধারণের জন্য ঢাকা শুধু দিঘে-পাশেই বাড়ছে না, উচ্চতায়ও বাড়ছে। ঢাকা এখন বহুতল ভবনের কেন্দ্র, যেখানে জমছে নগরবাসীর বহুতল সুখ-দুঃখ। কারণ, নাগরিক পরিষেবা-ব্যবস্থা এতই অপ্রতুল যে সুপেয় পানি, বিদ্যুত্, যাতায়াতব্যবস্থা, চিকিত্সাসহ ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা থেকে বেশির ভাগ মানুষ বঞ্চিত। এমন অপরিকল্পিতভাবে যে বিশ্বের কোনো আধুনিক নগর চলতে পারে, তা অবিশ্বাস্য।
সমস্যা যে তীব্র তাতে সন্দেহ নেই। প্রশ্ন হলো, সমাধান কী? মোটামুটি বসবাস-উপযোগী ঢাকা নগরের জন্য অন্তত তিনটি ক্ষেত্রে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রথমত, সারা দেশের জন্য সঠিক জনসংখ্যানীতি; দ্বিতীয়ত, সুব্যবস্থাপনা; আর তৃতীয়ত, এবং যেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, শক্তিশালী স্থানীয় শাসনব্যবস্থা। যাঁরা দেশ পরিচালনা ও নগর-ব্যবস্থাপনার মতো গুরুদায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের এ তিনটি ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়ছে এবং আশঙ্কা করা হয় যে বর্তমানের প্রায় ১৬ কোটি থেকে বেড়ে ২০৫০ সালে জনসংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে ২৫ কোটি। স্পষ্টতই, এই বৃদ্ধির হারের সঙ্গে তাল রেখে ঢাকা মহানগরের জনসংখ্যাও বাড়বে। কিন্তু একটা লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমছে এবং ২০৫০ সালে মোট জনসংখ্যা সর্বোচ্চ ৯০০ কোটিতে স্থিতি লাভ করবে, এমনকি এরপর ধীরে ধীরে কমে আসবে। বাংলাদেশ এই সাধারণ ধারার বাইরে থাকবে না। অবশ্য এ জন্য যথাযথ পরিকল্পনা ও তার সঠিক বাস্তবায়ন দরকার।
তবে রাজধানী ঢাকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার তাতে কমবে না। সর্বপর্যায়ে দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং বিশেষভাবে স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের স্বশাসন ছাড়া সেটা সম্ভব নয়। এর প্রমাণ আমাদের হাতের কাছেই রয়েছে। কলকাতার জনসংখ্যা যে এমন বেহিসাবির মতো বাড়ছে না, তার অন্যতম একটি কারণ হলো, সেখানে রয়েছে শক্তিশালী স্থানীয় সরকারব্যবস্থা। আমাদের দেশে এখনো সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে চলে। ৪০ থেকে ৫০ শতাংশেরও বেশি চাকরি সৃষ্টি হয় ঢাকায়। সাধারণত নদীভাঙনে স্থানচ্যুত মানুষ আশ্রয়ের জন্য প্রথমে যায় পাশের উপজেলা বা জেলা শহরে। সেখানে চাকরির সংস্থান হলে তারা সহজে রাজধানীতে আসত না। যদি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশালের মতো মহানগরগুলোতে উন্নয়ন প্রকল্প সমন্বিতভাবে বাস্তবায়িত হতো, চাকরির সংস্থান থাকত, শিক্ষা-চিকিত্সার উন্নত ব্যবস্থা গড়ে তোলা যেত, তাহলে সত্যিকার অর্থে এক-একটা ‘টেকসই’ নগর গড়ে উঠত এবং রাজধানী ঢাকা জনজটের অভিশাপ থেকে মুক্ত থাকত।
রাজধানী ঢাকাকে বাঁচাতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। সরকার ও নগর পরিকল্পনাবিদেরা এদিকে নজর দিন।
No comments