শীতে মাথার ত্বকে খুশকির প্রকোপ বেড়ে গেলে by ডা. এস এম বখতিয়ার কামাল
শীতে ত্বক ও চুলের পরিচর্যা যেভাবে
চুল খুশকিমুক্ত রাখার অন্যতম উপায় হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা।
চুল
অপরিষ্কার থাকলে খুশকি বেশি হয়। ভেজা অবস্থায় চুল বেঁধে রাখা যাবে না। চুল
ভালো করে মুছে নিতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল
আঁচড়ে নিতে হবে। চিরুনিটাও পরিষ্কার রাখতে হবে এবং নিজস্ব চিরুনি ব্যবহার
করতে হবে। যাদের খুশকি বেশি হয়, তারা প্রতিদিন চুলে পরিমিত শ্যাম্পু
ব্যবহার করতে পারেন। বাইরে বের হলে ধুলাবালি রোধে মাথায় স্কার্ফ বা ওড়না
ব্যবহার করতে পারেন। অন্যের চিরুনি ব্যবহার করবেন না। তাতে আপনার মাথাতেও
খুশকি সংক্রমিত হতে পারে। খুশকির জন্য দায়ী ছত্রাকগুলোর প্রক্রিয়া কমিয়ে
দিতে বেকিং সোডাও ভালো কার্যকর। এতে শুরুতে চুলে একটু শুষ্ক ভাব দেখা দিতে
পারে। তবে ধীরে ধীরে চুল আবার আর্দ্রতা ফিরে পাবে। শীতে চুলের সমস্যা
পরিত্রাণে সপ্তাহে অন্তত দুইবার নারকেলের তেল হালকা গরম করে চুলে ম্যাসাজ
করে নিতে হবে। এরপর চুলে শ্যাম্পু লাগিয়ে মাথা পরিষ্কার করে নিতে হবে।
তাহলে চুলের খুশকি দূর হবে। * যাদের ত্বক শুষ্ক, তাদের নিয়মিত
অ্যান্টিড্যানড্রাফ শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত।
চুলের ধরন অনুযায়ী কিছু ঘরোয়া যত্ন-আত্তি
তৈলাক্ত
চুলের পরিচর্যা সাধারণভাবে তৈলাক্ত চুলে ধুলাবালি ও ময়লা বেশি আটকায় বা
পড়ে। এ ধরনের তৈলাক্ত চুলে শ্যাম্পু প্রায় প্রতিদিনই করতে হয়। শীতের সময়
শ্যাম্পু করলেও তৈলাক্ত চুল নির্জীব দেখায়। শ্যাম্পুর সঙ্গে সামান্য বেকিং
পাউডার মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুল দেখাবে সজীব। প্রয়োজনে মেডিকেটেড পদ্ধতির
চেয়ে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি এ ধরনের তৈলাক্ত ত্বক ও চুলকে ঝলমরে করে থাকে।
যেমন- শুকনো রিঠা, শিকাকাই ও আমলকি সারা রাত ভিজিয়ে পরদিন ফুটিয়ে ছেঁকে
নিন। তরল মিশ্রণটি শ্যাম্পুর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
শুষ্ক চুলের যত্ন
চুলের
উজ্জ্বল ও মসৃণ ভাব ফিরিয়ে আনতে আধা মগ পানিতে লেবুর রস ও চায়ের লিকার
মিশিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত করলে চুলের উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা ফিরে আসবে।
স্বাভাবিক চুলের যত্ন
সব
ধরনের চুলের মধ্যে সবচেয়ে ঝামেলামুক্ত চুল হলো স্বাভাবিক চুল। এ ধরনের
চুলের জন্য স্বাভাবিক পরিচর্যাই ভালো। হট অয়েল ট্রিটমেন্ট ব্যবহার করা যেতে
পারে সপ্তাহে দুই দিন। নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখাটা খুব জরুরি। ন্যাচারাল
কন্ডিশনিংয়ের জন্য চুলে তেল দিলেই যথেষ্ট। দিনে কয়েকবার মোটা দাঁতের চিরুনি
দিয়ে চুল আঁচড়াতে পারলে ভালো। তাহলে চুলে যেমন জট হবে না, তেমনি মাথার
ত্বকে রক্ত সঞ্চালনও ভালো থাকবে। শীতে চুলে রং করা বা স্ট্রেট বা স্মুদিং
করবেন না। এর ফলে, খুশকি ও চুল পড়ার সমস্যাতে ভুগতে পারেন।
কেমিক্যাল ব্যবহার না করাই ভালো
চুলের
নানা জটিলতা বা সমস্যা হলে পরিত্রাণ পেতে অনেকেই বিউটি পার্লার থেকে
কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করে থাকেন। যা উচিত নয়। মনে রাখতে হবে কেমিক্যাল
ট্রিটমেন্টে চুলের ক্ষণিকের সৌন্দর্য বাড়লেও, তা স্থায়ী হয় না।
লেখক:
সহকারী অধ্যাপক (সাবেক) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চর্ম, যৌন ও
অ্যালার্জি রোগ বিভাগ)। চেম্বার- কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার
ফার্মগেট, গ্রিন রোড, ঢাকা। সেল- ০১৭১১৪৪০৫৫।
No comments