খিজির খান হত্যা: বিচার নিয়ে শঙ্কায় স্বজনরা by রাশিম মোল্লা
আগামী
৫ই অক্টোবর খিজির খান হত্যার তিন বছর। দীর্ঘ এ সময়ে এখনো বিচার কাজ শুরু
হয়নি। এ নিয়ে শঙ্কায় স্বজনরা। রাজধানীর বাড্ডায় নিজ বাড়ির ৩য় তলায় বসবাস
করতেন খিজির খান। ওই বাসার ২য় তলায় ছিল তার খানকা শরিফ। প্রতিদিনই অনেক
লোকজনের সমাগম হতো সেখানে। ২০১৫ সালের ৫ই অক্টোবর নিজ বাসার খানকা শরিফে
গলা কেটে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। প্রথম দিকে এ হত্যার কারণ জানা না গেলেও
টাঙ্গাইল থেকে তরিকুল ইসলাম তারেক ওরফে মিঠু ও রাজধানীর মিরপুর থেকে মো.
আলেক বেপারিকে গ্রেপ্তার করা হলে রহস্য উন্মোচিত হয়। আটককৃত ২ জনেই আদালতে
স্বীকারোক্তিমূলক জবাবন্দি দেয়। এরপর পুলিশ ২০১৭ সালের ৮ই মার্চ এ মামলার
চার্জশিট প্রদান করে। এতে ১০ জনকে অভিযুক্ত ও ২ জনকে অব্যাহতি দিয়ে পুলিশ
চার্জশিট দেয়।
আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে তারেক ও রাসেল। তাদের জবাবন্দিতে বেরিয়ে এসেছে হত্যার লোমহর্ষক ঘটনা। বর্তমানে মামলাটি ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারাধীন। ওই আদালতের পেশকার ইফতেখার হোসেন সোহাগ মানবজমিনকে বলেন, আগামী ২৪শে অক্টোবর আদালত এই মামলার চার্জ শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। সকল আসামির উপস্থিতিতে চার্জ শুনানি করা হবে। এ ব্যাপারে মামলার বাদী ছেলে আশরাফুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, এই হত্যার বিচার করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। রাষ্ট্র চাইলে হবে, না হলে হবে না।
আল্লাহু আকবর বলে জবাই করে: স্বীকারোক্তিতে তরিকুল জানান, পাশের বাড়ির জনৈক আব্দুল গাফফার জেএমবির সদস্য। সে বিভিন্ন সময় আমাকে বিভিন্নভাবে ইসলামি আন্দোলনে উৎসাহ দিত। তারই উৎসাহে জেএমবির সদস্য হয় তরিকুল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ৫ই অক্টোবর জনৈক পীর খিজির খান হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে যুক্ত হয় জেএমবি সদস্য আব্দুল গাফফার, মধু, মাহফুজ, আতিক, জাহিদ, আমিন খালেদ চশমা রনি। আদর্শিক কারণে তারা পীরবাদকে অবিশ্বাস করেন। তাই খিজির খানকে হত্যার লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর আমরা ৫ জন মিটিং করি। ওই মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় ৫ই অক্টোবর খিজির খানকে হত্যা করা হবে। আমি এবং গাফফার হত্যার দিন টাঙ্গাইল থেকে ঢাকার বাড্ডায় আসি।
মাহফুজ আগে থেকেই সেখানে ছিল। অন্যান্যরাও ছিল। আমি এবং গাফফার সন্ধ্যায় ওদের সঙ্গে মিলিত হই। মাহফুজের কালো ব্যাগে ৫-৬টি হাতবোমা ছিল। আর গাফফারের কাছে ছিল ছোড়া । চশমা রনির কাছে একটি গুলিভর্তি পিস্তল ছিল। ওই দিন আনুমানিক ৭টার দিকে আমরা পীরের বাসায় প্রবেশ করি। মাহফুজ ছিল লিডার। মাহফুজ এবং গাফফার বাসার তৃতীয় তলায় ওঠে।
মাহফুজ আদেশ দেয় বাসায় যারা ঢুকবে তাদের সবাইকে হাত পা বেঁধে রাখার। কথা অনুযায়ী তৃতীয় তলায় ছয়জন এবং দ্বিতীয় তলায় তিনজনকে বেঁধে ফেলা হয়। মাহফুজ এবং গাফফার পীরকে ডেকে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে আসে। আমিসহ অন্যরা দ্বিতীয় তলায় ছিলাম। মাহফুজ পীরকে বলে ‘তুই পীরগিরি করিস, আজকে তুই খতম’ এই বলে পীরকে শুইয়ে দেয়। রনি, আতিক ও জাহিদ বুকের উপর চেপে ধরে। আর আমি পা চেপে ধরি। মাহফুজ ভাই পীরকে আল্লাহু আকবার বলে জবাই করে। তারপর বাসা থেকে টাকা পয়সা, গহণা, ল্যাপটপ ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী নিয়ে বের হই। ওই বাসা থেকে নেয়া ল্যাপটপ ও ক্যামেরা আমার কাছে ছিল। এরপর আমি গ্রামের বাড়ি চলে যাই।
হাত, মুখ বেঁধে ডাকাতি করি : অপর আসামি গোলাম মোস্তফা রাসেল ২০১৫ সালের ৪ঠা নভেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তিনি জানান, আমি একজন পেশাদার ডাকাত। জেল খানায় মানিক দাদার সঙ্গে পরিচয় হয়। একদিন জেলখানা থেকে বের হওয়ার পর তার সঙ্গে আমার দেখা হয়। তিনি আমাকে বলেন, একটি ডাকাতি করতে হবে। তার কথা মতো ডাকাত দলের সবাইকে জানাই। সেই অনুযায়ী ২০১৫ সালের ৫ই অক্টোবর বাড্ডা গোদারাঘাট গলির মাথায় মানিক দাদা ও ডাকাত দলের অন্যান্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়।
পীর খিজির খানের বাড়ির কাছে পৌছালে মানিক দাদা আমাদেরকে সরাসরি তিন তলায় গিয়ে ডাকাতি করতে বলে। তার কথামতো আমরা তিন তলায় গিয়ে দু’জন মহিলা ও একজন পুরুষের হাত, মুখ বেঁধে ডাকাতি করি। আমি একটি বঁটি দিয়া আলমারি ভেঙে স্বর্ণ ও ৫০০ টাকার একটি বান্ডিল নিয়ে মানিক দাদার হাতে জমা দিই। পরে আমি অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামে চলে আসি। পরের দিন টিভির খবরে পীর জবাইর খবর দেখি। দু’দিন পর ডাকাতির টাকা ভাগ হয়। আমি ৫১ হাজার টাকা পাই।
পীর জাবাইর ঘটনা জানতে চাইলে সে আমাকে বলে, ভাগের টাকা পাইছিস আর কোনো কথা বলিস না। কি হয়েছে তা তোর জানার দরকার নেই। জেএমবি সদস্য তারেক আমার কাছ থেকে ল্যাপটপ নিয়ে যায়। মানিক দাদা জেএমবি সদস্য তারেক মিঠু, গাফফার মাহফুজ, চশমা রনি, আতিক, জাহিদ এদের দিয়ে দ্বিতীয় তলায় পীর খিজির খানকে জবাই করে এবং আমাকে দিয়ে ডাকাতি করায়।
আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে তারেক ও রাসেল। তাদের জবাবন্দিতে বেরিয়ে এসেছে হত্যার লোমহর্ষক ঘটনা। বর্তমানে মামলাটি ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারাধীন। ওই আদালতের পেশকার ইফতেখার হোসেন সোহাগ মানবজমিনকে বলেন, আগামী ২৪শে অক্টোবর আদালত এই মামলার চার্জ শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। সকল আসামির উপস্থিতিতে চার্জ শুনানি করা হবে। এ ব্যাপারে মামলার বাদী ছেলে আশরাফুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, এই হত্যার বিচার করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। রাষ্ট্র চাইলে হবে, না হলে হবে না।
আল্লাহু আকবর বলে জবাই করে: স্বীকারোক্তিতে তরিকুল জানান, পাশের বাড়ির জনৈক আব্দুল গাফফার জেএমবির সদস্য। সে বিভিন্ন সময় আমাকে বিভিন্নভাবে ইসলামি আন্দোলনে উৎসাহ দিত। তারই উৎসাহে জেএমবির সদস্য হয় তরিকুল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ৫ই অক্টোবর জনৈক পীর খিজির খান হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে যুক্ত হয় জেএমবি সদস্য আব্দুল গাফফার, মধু, মাহফুজ, আতিক, জাহিদ, আমিন খালেদ চশমা রনি। আদর্শিক কারণে তারা পীরবাদকে অবিশ্বাস করেন। তাই খিজির খানকে হত্যার লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর আমরা ৫ জন মিটিং করি। ওই মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় ৫ই অক্টোবর খিজির খানকে হত্যা করা হবে। আমি এবং গাফফার হত্যার দিন টাঙ্গাইল থেকে ঢাকার বাড্ডায় আসি।
মাহফুজ আগে থেকেই সেখানে ছিল। অন্যান্যরাও ছিল। আমি এবং গাফফার সন্ধ্যায় ওদের সঙ্গে মিলিত হই। মাহফুজের কালো ব্যাগে ৫-৬টি হাতবোমা ছিল। আর গাফফারের কাছে ছিল ছোড়া । চশমা রনির কাছে একটি গুলিভর্তি পিস্তল ছিল। ওই দিন আনুমানিক ৭টার দিকে আমরা পীরের বাসায় প্রবেশ করি। মাহফুজ ছিল লিডার। মাহফুজ এবং গাফফার বাসার তৃতীয় তলায় ওঠে।
মাহফুজ আদেশ দেয় বাসায় যারা ঢুকবে তাদের সবাইকে হাত পা বেঁধে রাখার। কথা অনুযায়ী তৃতীয় তলায় ছয়জন এবং দ্বিতীয় তলায় তিনজনকে বেঁধে ফেলা হয়। মাহফুজ এবং গাফফার পীরকে ডেকে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে আসে। আমিসহ অন্যরা দ্বিতীয় তলায় ছিলাম। মাহফুজ পীরকে বলে ‘তুই পীরগিরি করিস, আজকে তুই খতম’ এই বলে পীরকে শুইয়ে দেয়। রনি, আতিক ও জাহিদ বুকের উপর চেপে ধরে। আর আমি পা চেপে ধরি। মাহফুজ ভাই পীরকে আল্লাহু আকবার বলে জবাই করে। তারপর বাসা থেকে টাকা পয়সা, গহণা, ল্যাপটপ ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী নিয়ে বের হই। ওই বাসা থেকে নেয়া ল্যাপটপ ও ক্যামেরা আমার কাছে ছিল। এরপর আমি গ্রামের বাড়ি চলে যাই।
হাত, মুখ বেঁধে ডাকাতি করি : অপর আসামি গোলাম মোস্তফা রাসেল ২০১৫ সালের ৪ঠা নভেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তিনি জানান, আমি একজন পেশাদার ডাকাত। জেল খানায় মানিক দাদার সঙ্গে পরিচয় হয়। একদিন জেলখানা থেকে বের হওয়ার পর তার সঙ্গে আমার দেখা হয়। তিনি আমাকে বলেন, একটি ডাকাতি করতে হবে। তার কথা মতো ডাকাত দলের সবাইকে জানাই। সেই অনুযায়ী ২০১৫ সালের ৫ই অক্টোবর বাড্ডা গোদারাঘাট গলির মাথায় মানিক দাদা ও ডাকাত দলের অন্যান্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়।
পীর খিজির খানের বাড়ির কাছে পৌছালে মানিক দাদা আমাদেরকে সরাসরি তিন তলায় গিয়ে ডাকাতি করতে বলে। তার কথামতো আমরা তিন তলায় গিয়ে দু’জন মহিলা ও একজন পুরুষের হাত, মুখ বেঁধে ডাকাতি করি। আমি একটি বঁটি দিয়া আলমারি ভেঙে স্বর্ণ ও ৫০০ টাকার একটি বান্ডিল নিয়ে মানিক দাদার হাতে জমা দিই। পরে আমি অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামে চলে আসি। পরের দিন টিভির খবরে পীর জবাইর খবর দেখি। দু’দিন পর ডাকাতির টাকা ভাগ হয়। আমি ৫১ হাজার টাকা পাই।
পীর জাবাইর ঘটনা জানতে চাইলে সে আমাকে বলে, ভাগের টাকা পাইছিস আর কোনো কথা বলিস না। কি হয়েছে তা তোর জানার দরকার নেই। জেএমবি সদস্য তারেক আমার কাছ থেকে ল্যাপটপ নিয়ে যায়। মানিক দাদা জেএমবি সদস্য তারেক মিঠু, গাফফার মাহফুজ, চশমা রনি, আতিক, জাহিদ এদের দিয়ে দ্বিতীয় তলায় পীর খিজির খানকে জবাই করে এবং আমাকে দিয়ে ডাকাতি করায়।
No comments