থাইল্যান্ডে টর্চার সেল: মানবপাচারে কোটিপতি শিক্ষক by শুভ্র দেব
মানবপাচার
করে শতকোটি টাকা কামিয়েছেন এমন এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ অপরাধ
তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মোহাম্মদ আছেম নামের ওই শিক্ষক রাজধানীর তেজগাঁও
কলেজের বিবিএ’র ডিপার্টমেন্টের একজন প্রভাষক। শিক্ষকতার আড়ালে প্রায় এক দশক
ধরে তিনি গড়ে তুলেছেন মানবপাচার চক্রের বড় এক সিন্ডিকেট। ২০০৯ সাল থেকে
অবৈধভাবে সাগর পথে মানুষকে পাচার করে হাতিয়ে নিয়েছেন অন্তত শতকোটি টাকা।
নিজের ও সহযোগীদের ব্যাংক হিসাব থেকে এখন পর্যন্ত ২৫ কোটি টাকা নেয়ার তথ্য পেয়েছে সিআইডি। এর বাইরে তিনি কর্মের সন্ধানে বিদেশ যেতে আগ্রহী এমন লোকদের কাছ থেকে প্রায় আরো শতকোটি টাকা নিয়েছেন। সিআইডি জানিয়েছে, আছেমের বাবা আনোয়ার হোসেন ও তার বড় ভাই মোহাম্মদ খোবায়েদ দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়া অবস্থান করছেন। সেই সুবাদেই আছেম তার ছোট ভাই জাবেদকে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় মানবপাচারের একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। এই সিন্ডিকেটই প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে গরিব ও মধ্যবিত্ত ঘরের বেকার মানুষকে টার্গেট করে।
কম টাকায় মালয়েশিয়া গিয়ে ভালো আয়ের প্রলোভন দেখায়। প্রলোভনে রাজি হয়ে অনেকেই তাদের তৈরি ফাঁদে পা দেয়। আছেমের সহযোগীরা লোকজন সংগ্রহ করে টেকনাফ থেকে ট্রলারযোগে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ডের জঙ্গলে নিয়ে আটকে রাখে। থাইল্যান্ডের জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার পর তাদের আসল চেহারা ফুটে ওঠে। সেখানে তাদের আটকে রেখে বেধড়ক পেটানো হয়। মৃত্যুর হুমকি দিয়ে দেশের স্বজনদের কাছে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণ দিতে না চাইলে অত্যাচারের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। দেখানো হয় নানা রকম ভয়ভীতি।
একপর্যায়ে স্বজনরা যখন আছেম ও তার সহযোগীদের কাছে টাকা পাঠায় তখন তাদের মালয়েশিয়া পাঠানো হয়। আর যারা টাকা দিতে ব্যর্থ হয় তাদের থাইল্যান্ডের জঙ্গলে মেরে ফেলা হয়। এমনকি যাদের মালয়েশিয়া পাঠানো হতো তাদের কাছ থেকেও আদায় করা হতো আরো টাকা। সিআইডি সূত্র জানায়, পাঁচদিন আগে আছেমকে একবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিন দিনের রিমান্ড শেষে আদালত তাকে জেলখানায় পাঠায় রোববার জামিনে বের হয়ে গেলে অন্য একটি মামলায় তাকে কাওরানবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে তিনটি পাসপোর্ট, একটি মোবাইল, তার প্রতিষ্ঠানের তিনটি রেজিস্টার, বিকাশের হিসাব রেজিস্টারসহ বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই ও অবৈধ সম্পত্তির কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, আছেম তার নিজ নামে, ছোট ভাই জাভেদ মোস্তফা, মা খদিজার নামে এবং তার সহযোগী আরিফ, একরাম, ওসমান সারোয়ারের নামে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও টেকনাফে বিভিন্ন ব্যাংকে হিসাব খুলে মানবপাচারের ২০-২৫ কোটি টাকা নেয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এর বাইরে বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি শতকোটি টাকা অবৈধভাবে নিয়েছেন। আছেম মানবপাচারের এই টাকা দিয়ে টেকনাফে বাড়ি ও জমি কিনেছেন। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভূঁইগড়ে একটি ছয়তলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। পরবর্তীকালে এই মানবপাচার ব্যবসার আরও প্রসারিত হলে মুক্তিপণের টাকা নেয়ার জন্য আছেম এসিএম করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে।
মোল্যা নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ২০১৪ সালে এই চক্রটি সাগরপথে সিরাজগঞ্জের মাসুদকে মালয়েশিয়ায় পাচার করে। এরপর পাচারকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে মাসুদের বাবা আ. ছালাম ইসলামী ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে মুক্তিপণের টাকা পাঠান। কিন্তু এরপরও তার ছেলে মুক্তি না পেলে এ ঘটনায় তিনি ২০১৬ সালের ১১ই মার্চ উল্লাপাড়া থানায় মামলা করেন।
সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম মুক্তিপণের টাকা পাঠানো ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সূত্র ধরে চক্রটি চিহ্নিত করে। মুক্তিপণের মাধ্যমে শতকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত বছরের মে মাসে সিআইডি বাদী হয়ে মানিলন্ডারিং আইনে বনানী থানায় আরেকটি মামলা করে। তিনি বলেন, আছেমের ব্যাংক হিসাবে যে পরিমাণ টাকার লেনদেন পাওয়া গেছে এবং এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদে যে তথ্য পাওয়া গেছে, ধারণা করছি সে অন্তত হাজারের উপরে মানুষ পাচার করেছে। রিমান্ডে এনে তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত জানা যাবে।
নিজের ও সহযোগীদের ব্যাংক হিসাব থেকে এখন পর্যন্ত ২৫ কোটি টাকা নেয়ার তথ্য পেয়েছে সিআইডি। এর বাইরে তিনি কর্মের সন্ধানে বিদেশ যেতে আগ্রহী এমন লোকদের কাছ থেকে প্রায় আরো শতকোটি টাকা নিয়েছেন। সিআইডি জানিয়েছে, আছেমের বাবা আনোয়ার হোসেন ও তার বড় ভাই মোহাম্মদ খোবায়েদ দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়া অবস্থান করছেন। সেই সুবাদেই আছেম তার ছোট ভাই জাবেদকে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় মানবপাচারের একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। এই সিন্ডিকেটই প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে গরিব ও মধ্যবিত্ত ঘরের বেকার মানুষকে টার্গেট করে।
কম টাকায় মালয়েশিয়া গিয়ে ভালো আয়ের প্রলোভন দেখায়। প্রলোভনে রাজি হয়ে অনেকেই তাদের তৈরি ফাঁদে পা দেয়। আছেমের সহযোগীরা লোকজন সংগ্রহ করে টেকনাফ থেকে ট্রলারযোগে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ডের জঙ্গলে নিয়ে আটকে রাখে। থাইল্যান্ডের জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার পর তাদের আসল চেহারা ফুটে ওঠে। সেখানে তাদের আটকে রেখে বেধড়ক পেটানো হয়। মৃত্যুর হুমকি দিয়ে দেশের স্বজনদের কাছে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণ দিতে না চাইলে অত্যাচারের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। দেখানো হয় নানা রকম ভয়ভীতি।
একপর্যায়ে স্বজনরা যখন আছেম ও তার সহযোগীদের কাছে টাকা পাঠায় তখন তাদের মালয়েশিয়া পাঠানো হয়। আর যারা টাকা দিতে ব্যর্থ হয় তাদের থাইল্যান্ডের জঙ্গলে মেরে ফেলা হয়। এমনকি যাদের মালয়েশিয়া পাঠানো হতো তাদের কাছ থেকেও আদায় করা হতো আরো টাকা। সিআইডি সূত্র জানায়, পাঁচদিন আগে আছেমকে একবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিন দিনের রিমান্ড শেষে আদালত তাকে জেলখানায় পাঠায় রোববার জামিনে বের হয়ে গেলে অন্য একটি মামলায় তাকে কাওরানবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে তিনটি পাসপোর্ট, একটি মোবাইল, তার প্রতিষ্ঠানের তিনটি রেজিস্টার, বিকাশের হিসাব রেজিস্টারসহ বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই ও অবৈধ সম্পত্তির কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, আছেম তার নিজ নামে, ছোট ভাই জাভেদ মোস্তফা, মা খদিজার নামে এবং তার সহযোগী আরিফ, একরাম, ওসমান সারোয়ারের নামে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও টেকনাফে বিভিন্ন ব্যাংকে হিসাব খুলে মানবপাচারের ২০-২৫ কোটি টাকা নেয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এর বাইরে বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি শতকোটি টাকা অবৈধভাবে নিয়েছেন। আছেম মানবপাচারের এই টাকা দিয়ে টেকনাফে বাড়ি ও জমি কিনেছেন। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভূঁইগড়ে একটি ছয়তলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। পরবর্তীকালে এই মানবপাচার ব্যবসার আরও প্রসারিত হলে মুক্তিপণের টাকা নেয়ার জন্য আছেম এসিএম করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে।
মোল্যা নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ২০১৪ সালে এই চক্রটি সাগরপথে সিরাজগঞ্জের মাসুদকে মালয়েশিয়ায় পাচার করে। এরপর পাচারকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে মাসুদের বাবা আ. ছালাম ইসলামী ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে মুক্তিপণের টাকা পাঠান। কিন্তু এরপরও তার ছেলে মুক্তি না পেলে এ ঘটনায় তিনি ২০১৬ সালের ১১ই মার্চ উল্লাপাড়া থানায় মামলা করেন।
সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম মুক্তিপণের টাকা পাঠানো ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সূত্র ধরে চক্রটি চিহ্নিত করে। মুক্তিপণের মাধ্যমে শতকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত বছরের মে মাসে সিআইডি বাদী হয়ে মানিলন্ডারিং আইনে বনানী থানায় আরেকটি মামলা করে। তিনি বলেন, আছেমের ব্যাংক হিসাবে যে পরিমাণ টাকার লেনদেন পাওয়া গেছে এবং এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদে যে তথ্য পাওয়া গেছে, ধারণা করছি সে অন্তত হাজারের উপরে মানুষ পাচার করেছে। রিমান্ডে এনে তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত জানা যাবে।
No comments