অধিভুক্ত সাত কলেজ ঢাবির গলার কাঁটা: কোনো পক্ষই খুশি নয় by সাব্বির নেওয়াজ
নতুন
অধিভুক্ত সাত কলেজ এখন 'গলার কাঁটা' হয়ে দাঁড়িয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের।
এই অধিভুক্তি নিয়ে ঢাকার এসব বড় ও পুরনো কলেজের ছাত্রছাত্রীরা সন্তুষ্ট নন।
তাদের সমস্যা বেড়েছে। সেশনজটের মুখে পড়েছেন তারা। অন্যদিকে, খুশি নন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। এমন অসন্তোষের মধ্যে শিক্ষার্থীদের এই দুই
পক্ষের আন্দোলনকেই এখন সামাল দিতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।
ক্যাম্পাস ও অবকাঠামোর ওপর চাপ পড়ায় ভুক্তভোগী হতে হচ্ছেন বলে মনে করছেন
তারা। প্রক্টরকে ঘেরাও, ফটক ভাংচুর- এসব ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নামে
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করেছে। তারপর উপাচার্যকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে
বের করে আনতে ছাত্রলীগের বল প্রয়োগ ও মারধর করার ঘটনা ক্যাম্পাসকে উত্তপ্ত
করে তুলেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক প্রবীণ শিক্ষক সমকালকে বলেছেন, ঢাকা এখন দেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, যেটিতে কোনো সেশনজট নেই। অব্যাহত ছাত্র আন্দোলনের মুখে ক্লাস এবং পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। এতে বিশ্ববিদ্যালয় আবারও সেশনজটে পড়তে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় বাড়ানোর জন্য ঢাবি কর্তৃপক্ষ ঢাকার বড় এই সাত কলেজকে অধিভুক্ত করেছে। কিন্তু এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব একটা লাভ হয়নি।
ব্যয় হবে সাত কোটি টাকা : সাত কলেজের অধিভুক্তি থেকে বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কোটি ২০ লাখ টাকা বাড়তি আয় হতে পারে। আর এই কলেজগুলোর জন্য নতুন সিলেবাস প্রণয়ন, পরীক্ষা আয়োজন, প্রশ্নপত্র তৈরি ও মডারেশন, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ, খাতা দেখাসহ একাডেমিক অন্যান্য কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয় করতে হবে প্রায় সাত কোটি টাকা। অধিভুক্ত সাত কলেজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গত এক বছরে একটি টাকাও আয় হয়নি। সাত কলেজের অন্যতম রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্লাহ খন্দকার সমকালকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও তাদের কাছে অধিভুক্তি ফি চায়নি। তাই তারাও দেননি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও অধিভুক্তি ফি না চাইলেও সাত কলেজের অধ্যক্ষরা ধারণা করছেন, ফি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রতি কলেজের প্রতি বিভাগের ডিগ্রি অধিভুক্তি ফি ২০ হাজার টাকা আর অনার্সের ২৫ হাজার টাকা। সংশ্নিষ্ট বিভাগ থেকে এই টাকা নেওয়া হয়। বিভাগপ্রতি অনার্স চার বছরের অধিভুক্তি নবায়ন ফি ২৫ হাজার, ডিগ্রি ২০ হাজার, মাস্টার্স প্রথম পর্ব ৬ হাজার ২৫০ টাকা এবং মাস্টার্স দ্বিতীয় পর্বেও ৬ হাজার ২৫০ টাকা নেওয়া হয়। এ হিসাবে এই অধিভুক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য খুব একটা লাভজনক হয়নি।
শুরু থেকেই আন্দোলন : সাত কলেজের অধিভুক্তির শুরু থেকেই এ নিয়ে আন্দোলন মোকাবেলা করতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়কে। গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয় ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, মিরপুর বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ। এসব কলেজে প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী পড়ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে আসার পর তিন দফা আন্দোলনে নামতে হয় অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের। গত ২০ জুলাই ফল প্রকাশ ও পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে প্রথম আন্দোলন শুরু করেন তারা। এই আন্দোলনে শাহবাগে শিক্ষার্থীদের সমাবেশে পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেলে দৃষ্টিশক্তি হারান তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান। এ ঘটনায় এক হাজার ২০০ ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলাও করে পুলিশ।
দ্বিতীয় দফায় গত অক্টোবরে কয়েকশ' শিক্ষার্থী চতুর্থ বর্ষের ফল প্রকাশের দাবিতে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করে। তখন যথাসময়ে ফল প্রকাশে প্রশাসন আশ্বাস দিলে আন্দোলন তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। নভেম্বরের মধ্যে ওই শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশিত হয়। এর দুই মাস পর গত ১১ জানুয়ারি ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের ফল প্রকাশ ও তৃতীয় বর্ষের ক্লাস শুরুর দাবিতে আবারও নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য তাদের আগামী এক মাসের মধ্যে ফল প্রকাশের আশ্বাস দেওয়ার পর কলেজ ক্যাম্পাসে ফিরেছেন তারা।
একই সময়ে প্রথমবারের মতো আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামেন ও উপাচার্যের কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেন। এ নিয়ে ১৫ ও ২৩ জানুয়ারি দুই দফায় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে মার খেয়েছেন ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
হঠাৎ কেন আন্দোলন : হঠাৎ করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, নতুন অধিভুক্ত এই সাত কলেজের ২০১৭-২০১৮ সেশনের ভর্তি প্রক্রিয়ার সার্বিক কাজ ঢাবি ক্যাম্পাসে করা হয়। আবেদনের ফি জমা দিতে ক্যাম্পাসে ব্যাংকের লাইনে লম্বা ভিড় লেগে যায়। একই অবস্থা ঘটে ডিন অফিসেও। ক্যাম্পাসে অধিভুক্ত কলেজগুলোর বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর আনাগোনা ঢাবি শিক্ষার্থীদের সংক্ষুব্ধ করে তোলে। এবার সাত কলেজের ৩২ হাজার আসনের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষায় প্রায় ৭০ হাজার ছাত্রছাত্রী আবেদন করেছিলেন।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সমকালকে বলেন, আসলে এর কোনোই প্রয়োজন ছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটে প্রতিবছর প্রায় তিন লাখ ছাত্রছাত্রী ভর্তির জন্য আবেদন করেন। কই, তাদের কাউকেই তো ক্যাম্পাসে এসে ব্যাংকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা জমা দিতে হয় না! তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প আরও অনেক কলেজ, মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ রয়েছে। তাদের কাউকে তো ঢাবির অবকাঠামো ব্যবহার করতে হয় না।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, এই কলেজগুলোর পরীক্ষার আয়োজন করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়কেই। খাতা দেখতে হবে ঢাবি ও কলেজশিক্ষক উভয়কেই। আরও নানা কাজ রয়েছে। তাই ক্যাম্পাসের অবকাঠামোর ওপর চাপ পড়বেই।
এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান সমকালকে বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করে কখনোই কোনো কিছু করা হবে না। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের অবস্থান পরিস্কার করেছে- অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের সব কার্যক্রম নিজ নিজ ক্যাম্পাস থেকেই পরিচালিত হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পরিচয়পত্র দেওয়া হবে না। তারা তাদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পরিচয়পত্র নেবে। উপাচার্য বলেন, ক্যাম্পাসে অবকাঠামোগত সংকট প্রকট, তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন, পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা, পাঠাগার প্রভৃতির কোনোটিই ব্যবহার করার সুযোগ তাদের নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শুধু এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্রধারী শিক্ষার্থীদের জন্যই উন্মুক্ত।'
অধিভুক্তদের সমস্যা : একই শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত শিক্ষার্থীরা এক বছর এগিয়ে রয়েছেন এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের চেয়ে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন সাত কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। তারা সেশনজটে পড়তে চান না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট 'ক্রাশ প্রোগ্রামে'র আওতায় এখন সময়মতো পরীক্ষা হয়, ফল প্রকাশ হয়। রাজধানীর তিতুমীর সরকারি কলেজের মনোবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তামান্না আফরোজ সমকালকে বলেন, 'সাত কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তবে ফল হয়েছে উল্টো। এক বছর আগে দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা হলেও এখনও ফল প্রকাশিত হয়নি। আর তৃতীয় বর্ষের কোনো ক্যালেন্ডারও প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ, যার জন্য পুরোদমে ক্লাসও হয়নি। অথচ একই শিক্ষাবর্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলোতে চূড়ান্ত পরীক্ষার ফরম পূরণ শেষ হয়েছে। এক বছরের সেশনজটে পড়ে গেছি।' তাড়াতাড়ি ফল প্রকাশের দাবি জানান তিনি।
বিষয়টি স্বীকার করে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন মোল্লা সমকালকে বলেন, অধিভুক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে যাওয়ার পর পরীক্ষা অনুষ্ঠান ও ফল প্রকাশে একটু দেরি হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হচ্ছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে এই সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রমের সমন্বয়ক ও বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম সমকালকে বলেন, দ্রুতই দ্বিতীয় বর্ষের ফল প্রকাশের চেষ্টা চলছে। সাত কলেজে অনেক শিক্ষার্থী হওয়ায় সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। ধীরে ধীরে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, সাত কলেজের দুই লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না। জনবল সংকট রয়েছে। সাত কলেজের কার্যক্রম দেখাশোনা করবে কোন শাখা, তাও এতদিন নির্ধারণ করা হয়নি। পরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলে প্রশাসনের টনক নড়ে। এরপর বিষয়টি দেখভালের জন্য দুই কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বর্তমানে লোকবল মাত্র চারজনে উন্নীত হয়েছে।
ঢাবি শিক্ষার্থীদের অবস্থা : আন্দোলনে থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের হাতে দু'দফা মার খেয়ে এখন দাবির প্রশ্নে আরও অনড় অবস্থান নিয়েছেন। চার দফা দাবি পূরণে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। 'নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থী'দের ব্যানারে তারা এই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে এই শিক্ষার্থীরা গত ১৫ জানুয়ারি উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে ছাত্রলীগ নেতারা ছাত্রদের হুমকি-ধমকি ও ছাত্রীদের ওপর নিপীড়ন করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। এর প্রতিবাদে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীরা ১৭ জানুয়ারি প্রক্টর কার্যালয়ের ফটক ভেঙে প্রক্টরকে অবরুদ্ধ করেন। পরদিন অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনকে আসামি করে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর থেকে টানা আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রক্টরের পদত্যাগ, ছাত্র প্রতিনিধিসহ ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনার তদন্ত করা, অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতাদের বহিস্কার করা ও প্রশাসনের দায়ের করা মামলা তুলে নেওয়া।
উপাচার্যের বক্তব্য : উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সমকালকে বলেন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের একাডেমিক যেসব দাবি-দাওয়া আছে, তা পূরণ করা হচ্ছে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যে কোনো নিয়মতান্ত্রিক ও যৌক্তিক দাবির আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও একমত। তবে আন্দোলনের নামে ক্যাম্পাসে ভাংচুর, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ বিনষ্ট করা, শিক্ষকদের গালাগাল করা বা অবরুদ্ধ করে রাখা, প্রাণনাশের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। উপাচার্য সমকালকে বলেন, কারও হুমকি-ধমকিতে বিশ্ববিদ্যালয় চলবে না। চলবে তার আইনি কাঠামোর মধ্যে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে। অগণতান্ত্রিক কোনো অপশক্তিকে ক্যাম্পাসে বরদাশত করা হবে না। তিনি বলেন, গত কয়েকদিনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এসব কমিটির প্রতিবেদন পেলে সে অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক প্রবীণ শিক্ষক সমকালকে বলেছেন, ঢাকা এখন দেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, যেটিতে কোনো সেশনজট নেই। অব্যাহত ছাত্র আন্দোলনের মুখে ক্লাস এবং পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। এতে বিশ্ববিদ্যালয় আবারও সেশনজটে পড়তে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় বাড়ানোর জন্য ঢাবি কর্তৃপক্ষ ঢাকার বড় এই সাত কলেজকে অধিভুক্ত করেছে। কিন্তু এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব একটা লাভ হয়নি।
ব্যয় হবে সাত কোটি টাকা : সাত কলেজের অধিভুক্তি থেকে বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কোটি ২০ লাখ টাকা বাড়তি আয় হতে পারে। আর এই কলেজগুলোর জন্য নতুন সিলেবাস প্রণয়ন, পরীক্ষা আয়োজন, প্রশ্নপত্র তৈরি ও মডারেশন, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ, খাতা দেখাসহ একাডেমিক অন্যান্য কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয় করতে হবে প্রায় সাত কোটি টাকা। অধিভুক্ত সাত কলেজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গত এক বছরে একটি টাকাও আয় হয়নি। সাত কলেজের অন্যতম রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্লাহ খন্দকার সমকালকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও তাদের কাছে অধিভুক্তি ফি চায়নি। তাই তারাও দেননি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও অধিভুক্তি ফি না চাইলেও সাত কলেজের অধ্যক্ষরা ধারণা করছেন, ফি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রতি কলেজের প্রতি বিভাগের ডিগ্রি অধিভুক্তি ফি ২০ হাজার টাকা আর অনার্সের ২৫ হাজার টাকা। সংশ্নিষ্ট বিভাগ থেকে এই টাকা নেওয়া হয়। বিভাগপ্রতি অনার্স চার বছরের অধিভুক্তি নবায়ন ফি ২৫ হাজার, ডিগ্রি ২০ হাজার, মাস্টার্স প্রথম পর্ব ৬ হাজার ২৫০ টাকা এবং মাস্টার্স দ্বিতীয় পর্বেও ৬ হাজার ২৫০ টাকা নেওয়া হয়। এ হিসাবে এই অধিভুক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য খুব একটা লাভজনক হয়নি।
শুরু থেকেই আন্দোলন : সাত কলেজের অধিভুক্তির শুরু থেকেই এ নিয়ে আন্দোলন মোকাবেলা করতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়কে। গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয় ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, মিরপুর বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ। এসব কলেজে প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী পড়ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে আসার পর তিন দফা আন্দোলনে নামতে হয় অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের। গত ২০ জুলাই ফল প্রকাশ ও পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে প্রথম আন্দোলন শুরু করেন তারা। এই আন্দোলনে শাহবাগে শিক্ষার্থীদের সমাবেশে পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেলে দৃষ্টিশক্তি হারান তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান। এ ঘটনায় এক হাজার ২০০ ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলাও করে পুলিশ।
দ্বিতীয় দফায় গত অক্টোবরে কয়েকশ' শিক্ষার্থী চতুর্থ বর্ষের ফল প্রকাশের দাবিতে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করে। তখন যথাসময়ে ফল প্রকাশে প্রশাসন আশ্বাস দিলে আন্দোলন তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। নভেম্বরের মধ্যে ওই শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশিত হয়। এর দুই মাস পর গত ১১ জানুয়ারি ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের ফল প্রকাশ ও তৃতীয় বর্ষের ক্লাস শুরুর দাবিতে আবারও নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য তাদের আগামী এক মাসের মধ্যে ফল প্রকাশের আশ্বাস দেওয়ার পর কলেজ ক্যাম্পাসে ফিরেছেন তারা।
একই সময়ে প্রথমবারের মতো আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামেন ও উপাচার্যের কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেন। এ নিয়ে ১৫ ও ২৩ জানুয়ারি দুই দফায় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে মার খেয়েছেন ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
হঠাৎ কেন আন্দোলন : হঠাৎ করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, নতুন অধিভুক্ত এই সাত কলেজের ২০১৭-২০১৮ সেশনের ভর্তি প্রক্রিয়ার সার্বিক কাজ ঢাবি ক্যাম্পাসে করা হয়। আবেদনের ফি জমা দিতে ক্যাম্পাসে ব্যাংকের লাইনে লম্বা ভিড় লেগে যায়। একই অবস্থা ঘটে ডিন অফিসেও। ক্যাম্পাসে অধিভুক্ত কলেজগুলোর বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর আনাগোনা ঢাবি শিক্ষার্থীদের সংক্ষুব্ধ করে তোলে। এবার সাত কলেজের ৩২ হাজার আসনের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষায় প্রায় ৭০ হাজার ছাত্রছাত্রী আবেদন করেছিলেন।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সমকালকে বলেন, আসলে এর কোনোই প্রয়োজন ছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটে প্রতিবছর প্রায় তিন লাখ ছাত্রছাত্রী ভর্তির জন্য আবেদন করেন। কই, তাদের কাউকেই তো ক্যাম্পাসে এসে ব্যাংকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা জমা দিতে হয় না! তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প আরও অনেক কলেজ, মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ রয়েছে। তাদের কাউকে তো ঢাবির অবকাঠামো ব্যবহার করতে হয় না।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, এই কলেজগুলোর পরীক্ষার আয়োজন করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়কেই। খাতা দেখতে হবে ঢাবি ও কলেজশিক্ষক উভয়কেই। আরও নানা কাজ রয়েছে। তাই ক্যাম্পাসের অবকাঠামোর ওপর চাপ পড়বেই।
এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান সমকালকে বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করে কখনোই কোনো কিছু করা হবে না। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের অবস্থান পরিস্কার করেছে- অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের সব কার্যক্রম নিজ নিজ ক্যাম্পাস থেকেই পরিচালিত হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পরিচয়পত্র দেওয়া হবে না। তারা তাদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পরিচয়পত্র নেবে। উপাচার্য বলেন, ক্যাম্পাসে অবকাঠামোগত সংকট প্রকট, তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন, পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা, পাঠাগার প্রভৃতির কোনোটিই ব্যবহার করার সুযোগ তাদের নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শুধু এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্রধারী শিক্ষার্থীদের জন্যই উন্মুক্ত।'
অধিভুক্তদের সমস্যা : একই শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত শিক্ষার্থীরা এক বছর এগিয়ে রয়েছেন এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের চেয়ে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন সাত কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। তারা সেশনজটে পড়তে চান না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট 'ক্রাশ প্রোগ্রামে'র আওতায় এখন সময়মতো পরীক্ষা হয়, ফল প্রকাশ হয়। রাজধানীর তিতুমীর সরকারি কলেজের মনোবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তামান্না আফরোজ সমকালকে বলেন, 'সাত কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তবে ফল হয়েছে উল্টো। এক বছর আগে দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা হলেও এখনও ফল প্রকাশিত হয়নি। আর তৃতীয় বর্ষের কোনো ক্যালেন্ডারও প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ, যার জন্য পুরোদমে ক্লাসও হয়নি। অথচ একই শিক্ষাবর্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলোতে চূড়ান্ত পরীক্ষার ফরম পূরণ শেষ হয়েছে। এক বছরের সেশনজটে পড়ে গেছি।' তাড়াতাড়ি ফল প্রকাশের দাবি জানান তিনি।
বিষয়টি স্বীকার করে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন মোল্লা সমকালকে বলেন, অধিভুক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে যাওয়ার পর পরীক্ষা অনুষ্ঠান ও ফল প্রকাশে একটু দেরি হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হচ্ছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে এই সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রমের সমন্বয়ক ও বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম সমকালকে বলেন, দ্রুতই দ্বিতীয় বর্ষের ফল প্রকাশের চেষ্টা চলছে। সাত কলেজে অনেক শিক্ষার্থী হওয়ায় সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। ধীরে ধীরে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, সাত কলেজের দুই লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না। জনবল সংকট রয়েছে। সাত কলেজের কার্যক্রম দেখাশোনা করবে কোন শাখা, তাও এতদিন নির্ধারণ করা হয়নি। পরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলে প্রশাসনের টনক নড়ে। এরপর বিষয়টি দেখভালের জন্য দুই কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বর্তমানে লোকবল মাত্র চারজনে উন্নীত হয়েছে।
ঢাবি শিক্ষার্থীদের অবস্থা : আন্দোলনে থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের হাতে দু'দফা মার খেয়ে এখন দাবির প্রশ্নে আরও অনড় অবস্থান নিয়েছেন। চার দফা দাবি পূরণে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। 'নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থী'দের ব্যানারে তারা এই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে এই শিক্ষার্থীরা গত ১৫ জানুয়ারি উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে ছাত্রলীগ নেতারা ছাত্রদের হুমকি-ধমকি ও ছাত্রীদের ওপর নিপীড়ন করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। এর প্রতিবাদে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীরা ১৭ জানুয়ারি প্রক্টর কার্যালয়ের ফটক ভেঙে প্রক্টরকে অবরুদ্ধ করেন। পরদিন অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনকে আসামি করে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর থেকে টানা আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রক্টরের পদত্যাগ, ছাত্র প্রতিনিধিসহ ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনার তদন্ত করা, অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতাদের বহিস্কার করা ও প্রশাসনের দায়ের করা মামলা তুলে নেওয়া।
উপাচার্যের বক্তব্য : উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সমকালকে বলেন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের একাডেমিক যেসব দাবি-দাওয়া আছে, তা পূরণ করা হচ্ছে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যে কোনো নিয়মতান্ত্রিক ও যৌক্তিক দাবির আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও একমত। তবে আন্দোলনের নামে ক্যাম্পাসে ভাংচুর, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ বিনষ্ট করা, শিক্ষকদের গালাগাল করা বা অবরুদ্ধ করে রাখা, প্রাণনাশের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। উপাচার্য সমকালকে বলেন, কারও হুমকি-ধমকিতে বিশ্ববিদ্যালয় চলবে না। চলবে তার আইনি কাঠামোর মধ্যে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে। অগণতান্ত্রিক কোনো অপশক্তিকে ক্যাম্পাসে বরদাশত করা হবে না। তিনি বলেন, গত কয়েকদিনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এসব কমিটির প্রতিবেদন পেলে সে অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
No comments