পিলখানা ট্র্যাজেডি: ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচনের দাবি
বিডিআর
ট্র্যাজেডির ঘটনায় নেপথ্য মদতদাতা হিসেবে ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচনের
দাবি জানিয়েছেন শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরা। একই সঙ্গে তারা
২৫শে ফেব্রুয়ারি দিনটিকে সরকারিভাবে শহীদ সেনা দিবস হিসেবে পালন করার
আহ্বান জানান। গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে পিলখানা
শহীদদের স্মরণে এক আলোচনা সভায় শহীদ পরিবারের স্বজনরা এসব দাবি জানান।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক
উপদেষ্টা ও মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। আলোচনা সভা শেষে
শহীদ পরিবারের সদস্যরা মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রেস ক্লাব চত্বরে আলোর মিছিলে
শরিক হন। শহীদ পরিবারবর্গ ও দেশ উই আর কন্সার্নড নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন
এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ অর্জন করতে হয়েছে অনেক রক্তের বিনিময়ে, রক্ষাও করতে হচ্ছে অনেক রক্তের বিনিময়ে। পিলখানায় যে সেনা সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে, এই ক্ষত কোনো দিন সেরে উঠবে না। তিনি বলেন, কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের বিষয়টি লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি হয়েছিল। কিন্তু একটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও আলোর মুখ দেখেনি। ফলে এর পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে আমরা কিছুই জানতে পারলাম না। সুলতানা কামাল বলেন, নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের শেষটা যদি জানতে না পারি তাহলে জাতি হিসেবে এই আফসোস আমাদের থেকে যাবে।
আলোচনা সভার শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দিতে গিয়ে পিলখানায় নিহত কর্নেল কুদরত ইলাহীর বাবা হাবিবুর রহমান ছেলের স্মৃতিচারণ করেন। পরে তিনি বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ায় আক্ষেপ নিয়ে বলেন, আমরা জীবদ্দশায় তো নয়ই, তাদের (পিলখানায় নিহত সেনাকর্মকর্তারা) স্ত্রী-সন্তানরাও এই বিচার দেখে যেতে পারবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। তিনি বলেন, শহীদ পরিবারের সন্তানেরা বিচারের যে রায় হয়েছে তার দ্রুত বাস্তবায়ন চায়। একই সঙ্গে বিচারবিভাগীয় একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে এই ঘটনার নেপথ্য মদতদাতাসহ পুরো ঘটনা জনসমক্ষে তুলে ধরার দাবি জনান তিনি।
শহীদ কর্নেল মুজিবের স্ত্রী নাসরীন ফেরদৌসি বলেন, আমাদের জীবনে প্রতিদিন, প্রতিরাত, প্রতিক্ষণই ২৫শে ফেব্রুয়ারি। আমরা দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছি। আমাদের সন্তানদের মন থেকে এখনো ‘ট্রমা’ কাটেনি। আমরা চাই এই দিনটিকে সরকারিভাবে বিশেষ দিবস হিসেবে পালন করা হোক। এর বাইরে আমাদের বিশেষ কিছু চাওয়া নেই। নিহত কর্নেল মুজিবের স্ত্রী নিজের একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার উল্লেখ করে বলেন, আমাদের দেখলেই সবাই বলে ‘তোমরা তো সরকার থেকে অনেক কিছু পেয়েছ’। কিন্তু আমরা যা হারিয়েছি তা কি কিছু দিয়ে পূরণ হতে পারে। আর আমরা যা পেয়েছি তা ন্যায্য জিনিস। এর মধ্যে পেনশনের ৫০ শতাংশ এককালীন এবং বাকিটা মাসে মাসে পাচ্ছি। সরকারের কাছ থেকে ঘটনার পর ১০ লাখ টাকা পেয়েছিলাম। ডিউটিরত অবস্থায় সেনা কর্মকর্তা নিহত হলে বাহিনী থেকে কিছু অর্থ দেয়া হয়, সেটা পেয়েছি। আর যে প্লটের কথা বলা হয় এগুলো মৃত্যুর আগেই পাওয়া। এসব প্রাপ্ত জিনিস কোনোভাবেই অনুদান নয়। ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, একমাত্র তারা যে মাসে ৪০ হাজার করে টাকা দেয় সেটি আমার সবচেয়ে বেশি কাজে লেগেছে।
শহীদ মেজর মোহাম্মদ সালেহ’র স্ত্রী নাসরীন আহমেদ বলেন, আমার বেশি কিছু বলার নেই আমরা শুধু ২৫শে ফেব্রুয়ারি দিনটিকে শহীদ সেনা দিবস হিসেবে পালন করার আহ্বান জানাই। আর বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিচার যে হয়েছে পুরোপুরি জানতে চাই এই ঘটনার পেছনে কারা ছিল? তাদের উদ্দেশ্য কি ছিল? এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। এজন্য এটুকু আমরা জানতে চাই, আমাদের সন্তানেরা জানতে চায়।
শহীদ মেজর মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী রীতা রহমান বলেন, ঘটনার দিন এত অফিসার কেন একসঙ্গে ডেকে আনা হলো? যার পোস্টিং ছিল না তাকেও ডেকে আনা হয়েছিল- এর কারণ কি ছিল আমরা সেই কারণটা জানতে চাই। তিনি বলেন, পিলখানায় স্বামী হারানোর তিন বছরের মাথায় আমার একমাত্র ছেলেটা মারা যায়, এর এক বছর পর আমার বাবা মারা যান। আমার মতো সব হারানো আর কেউ হয়তো নেই।
আলোচনা সভার আয়োজক, দেশ উই আর কন্সার্নড সংগঠনের পরিচালক ও পিলখানায় নিহত শহীদ কর্নেল কুদরত ইলাহীর ছেলে সাকিব রহমান বলেন, স্মরণকালের এত বড় একটি হত্যাযজ্ঞের পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের এখনো বের করা যায়নি। তাদের যখন কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাবে তখনই কেবল আমরা শান্তি পাব। একটি তদন্ত কমিটির রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে সাকিব বলেন, সেই প্রতিবেদনের ১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ‘পেছনের ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু পর্দার আড়ালেই রয়ে গেছে’। শহীদ পরিবারের সন্তান হিসেবে এটা মেনে নেয়া আমাদের জন্য কষ্টের। এ সময় তিনি ২৫শে ফেব্রুয়ারিকে শহীদ সেনা দিবস ঘোষণার দাবি জানান।
অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ অর্জন করতে হয়েছে অনেক রক্তের বিনিময়ে, রক্ষাও করতে হচ্ছে অনেক রক্তের বিনিময়ে। পিলখানায় যে সেনা সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে, এই ক্ষত কোনো দিন সেরে উঠবে না। তিনি বলেন, কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের বিষয়টি লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি হয়েছিল। কিন্তু একটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও আলোর মুখ দেখেনি। ফলে এর পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে আমরা কিছুই জানতে পারলাম না। সুলতানা কামাল বলেন, নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের শেষটা যদি জানতে না পারি তাহলে জাতি হিসেবে এই আফসোস আমাদের থেকে যাবে।
আলোচনা সভার শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দিতে গিয়ে পিলখানায় নিহত কর্নেল কুদরত ইলাহীর বাবা হাবিবুর রহমান ছেলের স্মৃতিচারণ করেন। পরে তিনি বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ায় আক্ষেপ নিয়ে বলেন, আমরা জীবদ্দশায় তো নয়ই, তাদের (পিলখানায় নিহত সেনাকর্মকর্তারা) স্ত্রী-সন্তানরাও এই বিচার দেখে যেতে পারবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। তিনি বলেন, শহীদ পরিবারের সন্তানেরা বিচারের যে রায় হয়েছে তার দ্রুত বাস্তবায়ন চায়। একই সঙ্গে বিচারবিভাগীয় একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে এই ঘটনার নেপথ্য মদতদাতাসহ পুরো ঘটনা জনসমক্ষে তুলে ধরার দাবি জনান তিনি।
শহীদ কর্নেল মুজিবের স্ত্রী নাসরীন ফেরদৌসি বলেন, আমাদের জীবনে প্রতিদিন, প্রতিরাত, প্রতিক্ষণই ২৫শে ফেব্রুয়ারি। আমরা দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছি। আমাদের সন্তানদের মন থেকে এখনো ‘ট্রমা’ কাটেনি। আমরা চাই এই দিনটিকে সরকারিভাবে বিশেষ দিবস হিসেবে পালন করা হোক। এর বাইরে আমাদের বিশেষ কিছু চাওয়া নেই। নিহত কর্নেল মুজিবের স্ত্রী নিজের একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার উল্লেখ করে বলেন, আমাদের দেখলেই সবাই বলে ‘তোমরা তো সরকার থেকে অনেক কিছু পেয়েছ’। কিন্তু আমরা যা হারিয়েছি তা কি কিছু দিয়ে পূরণ হতে পারে। আর আমরা যা পেয়েছি তা ন্যায্য জিনিস। এর মধ্যে পেনশনের ৫০ শতাংশ এককালীন এবং বাকিটা মাসে মাসে পাচ্ছি। সরকারের কাছ থেকে ঘটনার পর ১০ লাখ টাকা পেয়েছিলাম। ডিউটিরত অবস্থায় সেনা কর্মকর্তা নিহত হলে বাহিনী থেকে কিছু অর্থ দেয়া হয়, সেটা পেয়েছি। আর যে প্লটের কথা বলা হয় এগুলো মৃত্যুর আগেই পাওয়া। এসব প্রাপ্ত জিনিস কোনোভাবেই অনুদান নয়। ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, একমাত্র তারা যে মাসে ৪০ হাজার করে টাকা দেয় সেটি আমার সবচেয়ে বেশি কাজে লেগেছে।
শহীদ মেজর মোহাম্মদ সালেহ’র স্ত্রী নাসরীন আহমেদ বলেন, আমার বেশি কিছু বলার নেই আমরা শুধু ২৫শে ফেব্রুয়ারি দিনটিকে শহীদ সেনা দিবস হিসেবে পালন করার আহ্বান জানাই। আর বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিচার যে হয়েছে পুরোপুরি জানতে চাই এই ঘটনার পেছনে কারা ছিল? তাদের উদ্দেশ্য কি ছিল? এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। এজন্য এটুকু আমরা জানতে চাই, আমাদের সন্তানেরা জানতে চায়।
শহীদ মেজর মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী রীতা রহমান বলেন, ঘটনার দিন এত অফিসার কেন একসঙ্গে ডেকে আনা হলো? যার পোস্টিং ছিল না তাকেও ডেকে আনা হয়েছিল- এর কারণ কি ছিল আমরা সেই কারণটা জানতে চাই। তিনি বলেন, পিলখানায় স্বামী হারানোর তিন বছরের মাথায় আমার একমাত্র ছেলেটা মারা যায়, এর এক বছর পর আমার বাবা মারা যান। আমার মতো সব হারানো আর কেউ হয়তো নেই।
আলোচনা সভার আয়োজক, দেশ উই আর কন্সার্নড সংগঠনের পরিচালক ও পিলখানায় নিহত শহীদ কর্নেল কুদরত ইলাহীর ছেলে সাকিব রহমান বলেন, স্মরণকালের এত বড় একটি হত্যাযজ্ঞের পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের এখনো বের করা যায়নি। তাদের যখন কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাবে তখনই কেবল আমরা শান্তি পাব। একটি তদন্ত কমিটির রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে সাকিব বলেন, সেই প্রতিবেদনের ১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ‘পেছনের ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু পর্দার আড়ালেই রয়ে গেছে’। শহীদ পরিবারের সন্তান হিসেবে এটা মেনে নেয়া আমাদের জন্য কষ্টের। এ সময় তিনি ২৫শে ফেব্রুয়ারিকে শহীদ সেনা দিবস ঘোষণার দাবি জানান।
No comments