রোনাল্ডোর মাথায় মুকুট
বছরের শুরুতেই পেয়েছেন বিশ্বসেরার স্বীকৃতি। এবার ইউরোপের বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। বিশ্বকাপজয়ী জার্মান গোলকিপার ম্যানুয়েল নুয়ার ও ডাচ প্লেমেকার আর্জেন রবেনকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো উয়েফা অ্যাওয়ার্ড জিতলেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগিজ সুপারস্টার। বৃহস্পতিবার মোনাকোতে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের গ্র“পপর্বের ড্র অনুষ্ঠানে উয়েফার সদস্যভুক্ত দেশগুলোর ৫৪ জন সাংবাদিকের তাৎক্ষণিক ভোটে বিজয়ী হন রোনাল্ডো। পর্তুগাল অধিনায়কের হাতে ২০১৩-১৪ মৌসুমের সেরা ইউরোপিয়ান খেলোয়াড়ের পুরস্কার তুলে দেন উয়েফা প্রেসিডেন্ট মিশেল প্লাতিনি। মেয়েদের বিভাগে সেরার স্বীকৃতি পেয়েছেন জার্মান মিডফিল্ডার নাদিন কেসলার। ২০০৮ সালে ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পাশাপাশি ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন রোনাল্ডো। পুরস্কার দুটি একীভূত হয়ে যাওয়ার পর ২০১০-১১ মৌসুমে চালু হয় উয়েফা অ্যাওয়ার্ড। ইউরোপিয়ান ফুটবলের সেরা খেলোয়াড়ের এই নতুন পুরস্কার এতদিন অধরাই ছিল সিআর সেভেনের। প্রথমবার জিতেছিলেন লিওনেল মেসি। এরপর যথাক্রমে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা ও ফ্র্যাংক রিবেরির হাতে উঠেছে ইউরোপসেরার মুকুট। টানা চতুর্থবারের মতো প্রাথমিক মনোনয়ন পেলেও সেরা তিনে এবার জায়গা হয়নি মেসির। অথচ ব্রাজিল বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন জাদুকর। আসলে উয়েফা তো আর ফিফা নয়। বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স নিয়ে ভাবতে তাদের বয়েই গেছে!
তাই চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমিফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে যেভাবে হারিয়েছিল রিয়াল, ওয়েফা বর্ষসেরার লড়াইয়েও একইভাবে বায়ার্নের নুয়ার ও রবেনকে হারালেন রোনাল্ডো। বিশ্বকাপে রোনাল্ডোর পর্তুগালের ভরাডুবি হলেও ক্লাব ফুটবলে সোনায় মোড়ানো একটি মৌসুম কাটিয়েছেন পর্তুগিজ রাজপুত্র। রিয়ালকে বহু আরাধ্য লা ডেসিমা জেতানোর পথে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ১৭ গোলের রেকর্ড গড়েছেন। স্প্যানিশ লীগে করেছেন সর্বোচ্চ ৩১ গোল। সব মিলিয়ে ৪৭ ম্যাচে ৫১ গোলের মৌসুমে সেরার স্বীকৃতি রোনাল্ডোরই প্রাপ্য। পর্তুগালের মেদেইরা দ্বীপে অবস্থিত ব্যক্তিগত জাদুঘরের শোভা বাড়াতে একটি নতুন স্মারক পেয়ে অভিভূত রোনাল্ডো বলেছেন, ‘আমার জাদুঘরে এই ট্রফিটি ছিল না। আমার ভাই নিশ্চয় এটার জন্য জায়গা ঠিক করে রেখেছে!’ সতীর্থদের ধন্যবাদ জানাতেও ভুল করেননি রোনাল্ডো, ‘এই পুরস্কারের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি। তাই সত্যিই খুব ভালো লাগছে। সবার আগে আমি আমার দল ও সতীর্থদের ধন্যবাদ জানাই। ওদের সাহায্য ছাড়া এই ট্রফি জেতা অসম্ভব ছিল। দুর্দান্ত মৌসুম গেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, স্প্যানিশ কাপ ও উয়েফা সুপার কাপ জিতেছি আমরা। লা ডেসিমার জন্য বহু বছর ধরে অপেক্ষায় ছিল সমর্থকরা।’ চ্যাম্পিয়ন্স লীগে টানা দু’বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নজির নেই কোনো দলের। এবার ইতিহাস গড়ার হাতছানি রিয়ালের সামনে। বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিচ্ছেন রোনাল্ডো, ‘কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। আমরা এবারও জিততে পারি।’ এবার রিয়ালের গ্র“পেই পড়েছে পুরনো শত্র“ লিভারপুল। ২০০৮-০৯ মৌসুমে সর্বশেষ সাক্ষাতে দু’লেগ মিলিয়ে ৫-০ গোলে হেরেছিল রিয়াল। রোনাল্ডো তখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলতেন। সেটা উল্লেখ করে লিভারপুলকে এবার দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে রাখলেন রোনাল্ডো, ‘৫-০? আমি তখন রিয়ালে ছিলাম না। এবারের গল্পটা অন্যরকম হবে। লিভারপুলের সঙ্গে খেলতে ভালোই লাগবে আমার। মাঠেই প্রমাণ হয়ে যাবে কে সেরা।’ ওয়েবসাইট।
No comments