সংঘাত নয়, সংলাপে বসুন
দেশের সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টিকে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। তাই সংঘাতের পথ ছেড়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
গতকাল শনিবার ঢাকা সফরের দ্বিতীয় দিনে বিভিন্ন আলোচনায় এ অভিমত দিয়েছেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো। বাংলাদেশের নির্বাচন-পূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গত শুক্রবার চার দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন তিনি।
গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো। সন্ধ্যায় তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর গুলশানের কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সকালে বিএনপির এবং দুপুরে জাতীয় পার্টির দুটি প্রতিনিধিদল তাঁর সঙ্গে হোটেল সোনারগাঁওয়ে দেখা করে।
বৈঠকসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, সংলাপের প্রশ্নে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিবকে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিরোধী দলের সময় বেঁধে দেওয়া ও সহিংস কার্যক্রম সত্ত্বেও তাঁর আলোচনার প্রস্তাব ‘এখনো অব্যাহত’ রয়েছে।
অন্যদিকে বিরোধীদলীয় নেতা জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য বিএনপি সব দরজা খোলা রাখছে।
গতকালের বিভিন্ন আলোচনায় জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব বাংলাদেশের সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিস্থিতি, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জাতিসংঘের এ উদ্বেগ অতীতের চেয়ে বেশি। এমনকি বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে অতীতের নির্বাচন-পূর্ব পরিস্থিতি মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁর মতে, অব্যাহতভাবে চলা এসব সহিংসতার অবসান হওয়া উচিত। সংঘাত বন্ধে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সমঝোতায় পৌঁছানো জরুরি।
জানা গেছে, গতকালের বিভিন্ন বৈঠকে নির্বাচনকালীন সরকারের ধরন কী হবে, তা নিয়ে বিভিন্ন মত এসেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন দলের মতের মধ্যে মিলও দেখা গেছে। এসব আলোচনা থেকে অস্কার ফার্নান্দেজ এ ধারণা পেয়েছেন যে, নেতাদের মতের মিল থাকলেও শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভাগ্যটা ঝুলে থাকছে দুই নেত্রীর ওপর।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে সংবিধানের আওতায় কীভাবে এগোনো যায়, সে সম্পর্কেও অস্কার ফার্নান্দেজ জানতে চেয়েছেন। এ ক্ষেত্রে সংবিধানে কী কী বিকল্প রয়েছে, সেগুলো তিনি বিভিন্ন জনের কাছে শুনেছেন। সাংবিধানিক প্রতিবন্ধকতাগুলোও তিনি জানতে চেয়েছেন। অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সম্পন্ন নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতা, ওই সব নির্বাচনের ত্রুটি-বিচ্যুতি এসব নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। তিনি জানতে চেয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সন্দেহ আর বিভ্রান্তির উৎসটা কোথায়।
তবে বিভিন্ন বৈঠকে জাতিসংঘের জ্যেষ্ঠ এ কর্মকর্তা আভাস দিয়েছেন যে, অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিয়ে সংকট নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে যাবে জাতিসংঘ।
প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের প্রশংসা: বাসস জানায়, জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বাংলাদেশের চলমান ‘রাজনৈতিক অচলাবস্থা’ নিরসনের জন্য বিরোধী দলের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার প্রস্তাবের প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি এই উদ্যোগকে তিনি ‘সাহসী ও মহৎ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় জাতিসংঘের মহাসচিবের এ বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেন।
বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
অবাধ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বান কি মুন বলেন, এ ক্ষেত্রে সংলাপের জন্য কোনো পূর্বশর্ত থাকতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সরকার নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করেছে। জাতীয় সংসদের ১৬টি আসনে উপনির্বাচনসহ পাঁচ হাজার ৬৩৬টির বেশি নির্বাচন অবাধ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এসব নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠেনি।
বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সন্ধ্যায় বৈঠক করেন ফার্নান্দেজ তারানকো। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাল সোমবার তারানকো আবার বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। গতকালের বৈঠকে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে নির্বাচনকালীন সরকার ও সংলাপ। বৈঠকে এ দুটি ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে সমঝোতার ব্যাপারে তেমন আশাবাদী হতে পারেনি বিএনপি। তবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য বিএনপি সম্ভাব্য সব দরজা খোলা রাখছে বলে জাতিসংঘের প্রতিনিধিকে জানিয়েছে।
বৈঠক শেষে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, জাতিসংঘ একটি সমঝোতার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তারা আশা করে, সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। বৈঠকে তারানকো বিএনপির চেয়ারপারসনের কাছে জাতিসংঘের মহাসচিবের একটি চিঠি পৌঁছে দেন।
খালেদা জিয়া দেশের বর্তমান অবস্থায় এবং এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে বিএনপির নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, শমসের মবিন চৌধুরী, রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, ওসমান ফারুক ও জয়নুল আবদিন ফারুক উপস্থিত ছিলেন।
অন্তর্বর্তী সরকার চায় জাপা: সাম্প্রতিক সময়ে দেশে একের পর এক সংঘাতের ঘটনার উল্লেখ করে এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোভাব জানতে চেয়েছে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল।
জানতে চাইলে জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংঘাতময় পরিস্থিতি অবসানের লক্ষ্যে সরকার ও বিরোধী দলকে সমঝোতায় বসাতে আমরা জাতিসংঘের জোরালো ভূমিকা চেয়েছি। নইলে সামনের দিনগুলোতে সংঘাত বাড়বে।’
জাপা নির্বাচনকালে ১০ জন নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের কথা বলেছে। এর প্রধান হবেন একজন সর্বজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি, যাকে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা যেতে পারে।
দুই সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক: দুপুরে সোনারগাঁও হোটেলে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও দ্য ডেইলি স্টার-এর সম্পাদক মাহ্ফুজ আনামের সঙ্গে মতবিনিময় করেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব ফার্নান্দেজ তারানকো। তাঁরা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেন।
ফার্নান্দেজ তারানকো এ সময় বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে এবং সংঘাতময় পরিস্থিতির অবসানে গণমাধ্যমের ভূমিকা রয়েছে।
গতকাল শনিবার ঢাকা সফরের দ্বিতীয় দিনে বিভিন্ন আলোচনায় এ অভিমত দিয়েছেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো। বাংলাদেশের নির্বাচন-পূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গত শুক্রবার চার দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন তিনি।
গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো। সন্ধ্যায় তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর গুলশানের কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সকালে বিএনপির এবং দুপুরে জাতীয় পার্টির দুটি প্রতিনিধিদল তাঁর সঙ্গে হোটেল সোনারগাঁওয়ে দেখা করে।
বৈঠকসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, সংলাপের প্রশ্নে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিবকে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিরোধী দলের সময় বেঁধে দেওয়া ও সহিংস কার্যক্রম সত্ত্বেও তাঁর আলোচনার প্রস্তাব ‘এখনো অব্যাহত’ রয়েছে।
অন্যদিকে বিরোধীদলীয় নেতা জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য বিএনপি সব দরজা খোলা রাখছে।
গতকালের বিভিন্ন আলোচনায় জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব বাংলাদেশের সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিস্থিতি, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জাতিসংঘের এ উদ্বেগ অতীতের চেয়ে বেশি। এমনকি বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে অতীতের নির্বাচন-পূর্ব পরিস্থিতি মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁর মতে, অব্যাহতভাবে চলা এসব সহিংসতার অবসান হওয়া উচিত। সংঘাত বন্ধে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সমঝোতায় পৌঁছানো জরুরি।
জানা গেছে, গতকালের বিভিন্ন বৈঠকে নির্বাচনকালীন সরকারের ধরন কী হবে, তা নিয়ে বিভিন্ন মত এসেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন দলের মতের মধ্যে মিলও দেখা গেছে। এসব আলোচনা থেকে অস্কার ফার্নান্দেজ এ ধারণা পেয়েছেন যে, নেতাদের মতের মিল থাকলেও শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভাগ্যটা ঝুলে থাকছে দুই নেত্রীর ওপর।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে সংবিধানের আওতায় কীভাবে এগোনো যায়, সে সম্পর্কেও অস্কার ফার্নান্দেজ জানতে চেয়েছেন। এ ক্ষেত্রে সংবিধানে কী কী বিকল্প রয়েছে, সেগুলো তিনি বিভিন্ন জনের কাছে শুনেছেন। সাংবিধানিক প্রতিবন্ধকতাগুলোও তিনি জানতে চেয়েছেন। অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সম্পন্ন নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতা, ওই সব নির্বাচনের ত্রুটি-বিচ্যুতি এসব নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। তিনি জানতে চেয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সন্দেহ আর বিভ্রান্তির উৎসটা কোথায়।
তবে বিভিন্ন বৈঠকে জাতিসংঘের জ্যেষ্ঠ এ কর্মকর্তা আভাস দিয়েছেন যে, অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিয়ে সংকট নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে যাবে জাতিসংঘ।
প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের প্রশংসা: বাসস জানায়, জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বাংলাদেশের চলমান ‘রাজনৈতিক অচলাবস্থা’ নিরসনের জন্য বিরোধী দলের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার প্রস্তাবের প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি এই উদ্যোগকে তিনি ‘সাহসী ও মহৎ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় জাতিসংঘের মহাসচিবের এ বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেন।
বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
অবাধ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বান কি মুন বলেন, এ ক্ষেত্রে সংলাপের জন্য কোনো পূর্বশর্ত থাকতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সরকার নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করেছে। জাতীয় সংসদের ১৬টি আসনে উপনির্বাচনসহ পাঁচ হাজার ৬৩৬টির বেশি নির্বাচন অবাধ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এসব নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠেনি।
বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সন্ধ্যায় বৈঠক করেন ফার্নান্দেজ তারানকো। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাল সোমবার তারানকো আবার বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। গতকালের বৈঠকে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে নির্বাচনকালীন সরকার ও সংলাপ। বৈঠকে এ দুটি ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে সমঝোতার ব্যাপারে তেমন আশাবাদী হতে পারেনি বিএনপি। তবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য বিএনপি সম্ভাব্য সব দরজা খোলা রাখছে বলে জাতিসংঘের প্রতিনিধিকে জানিয়েছে।
বৈঠক শেষে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, জাতিসংঘ একটি সমঝোতার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তারা আশা করে, সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। বৈঠকে তারানকো বিএনপির চেয়ারপারসনের কাছে জাতিসংঘের মহাসচিবের একটি চিঠি পৌঁছে দেন।
খালেদা জিয়া দেশের বর্তমান অবস্থায় এবং এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে বিএনপির নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, শমসের মবিন চৌধুরী, রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, ওসমান ফারুক ও জয়নুল আবদিন ফারুক উপস্থিত ছিলেন।
অন্তর্বর্তী সরকার চায় জাপা: সাম্প্রতিক সময়ে দেশে একের পর এক সংঘাতের ঘটনার উল্লেখ করে এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোভাব জানতে চেয়েছে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল।
জানতে চাইলে জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংঘাতময় পরিস্থিতি অবসানের লক্ষ্যে সরকার ও বিরোধী দলকে সমঝোতায় বসাতে আমরা জাতিসংঘের জোরালো ভূমিকা চেয়েছি। নইলে সামনের দিনগুলোতে সংঘাত বাড়বে।’
জাপা নির্বাচনকালে ১০ জন নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের কথা বলেছে। এর প্রধান হবেন একজন সর্বজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি, যাকে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা যেতে পারে।
দুই সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক: দুপুরে সোনারগাঁও হোটেলে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও দ্য ডেইলি স্টার-এর সম্পাদক মাহ্ফুজ আনামের সঙ্গে মতবিনিময় করেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব ফার্নান্দেজ তারানকো। তাঁরা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেন।
ফার্নান্দেজ তারানকো এ সময় বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে এবং সংঘাতময় পরিস্থিতির অবসানে গণমাধ্যমের ভূমিকা রয়েছে।
No comments