কানাডার পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করলে তার পাল্টা জবাব দেয়া হবে। শুক্রবার এমন মন্তব্য করেন কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলোনি জলি। এছাড়া কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধ হতে পারে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। যা কয়েকযুগের মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ বলে ধারণা করেন মেলোনি। এ প্রসঙ্গে ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চাপ নিতে প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প যদি অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্তে অটল থাকেন সেক্ষেত্রে কানাডার কাছেও বিকল্প আছে। সরকারি সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপে চিন্তা করছে অটোয়া। তবে, তা কানাডার ভোগ্যপণ্য ও চাকরির বাজারের ওপর প্রভাব ফেলবে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন যেসমস্ত চাকরি আছে তা হুমকির মুখে পড়বে। এছাড়া দাম বৃদ্ধি পাবে কানাডায় ব্যবহৃত যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের। দাম বৃদ্ধি পেতে পারে ইস্পাত, টয়লেট ও সিংক (সিরামিকের), কাচের তৈরি জিনিস ও কমলার শরবতের মতো পণ্যের। এতে হুমকির মুখে পড়বে দুই দেশের সম্মিলিত নিরাপত্তা। এছাড়া এর প্রভাবে পুরো মহাদেশ জুড়ে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাবে। মেলোনি আরও বলেন, ট্রাম্প যে হারে শুল্ক আরোপ করছেন তাতে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র ‘ট্রাম্প শুল্কের’ মাধ্যমে নিষ্পেষিত হবে।
এদিকে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, কানাডা ও কানাডার জনগণকে রক্ষায় দ্ব্যর্থহীন থাকবে তার সরকার। উল্লেখ্য, স্কটিয়া ব্যাংকের এক দৃশ্যপট বলছে, সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধে কানাডার জিডিপি কমতে পারে শতকরা ৫ শতাংশের বেশি। ফলে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতি। ২০শে জানুয়ারি মার্কিন মসনদে প্রত্যাবর্তন করতে যাচ্ছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতায় আসার পর কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ কর আরোপ করার অঙ্গীকার করেন তিনি। নিজের অর্থনৈতিক ও পররাষ্ট্র নীতির অধীনে এমন সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কানাডা ছাড়াও মেক্সিকো ও চীনা পণ্যের ওপরও কর আরোপের কথা জানান ট্রাম্প। তার এমন সিদ্ধান্ত হৈচৈ শুরু হয় কানাডার রাজনীতিতে। এমনিতেই করোনার পর থেকে আবাসন ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ার কারণে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করতে থাকে দেশটির সাধারণ জনগণ। এরপর ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের কথা জনসম্মুখে আসার পর ট্রুডোর ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন জনগণ। এর পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগ করেন ট্রুডো।

No comments