ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল: একটি বাজে চিন্তা by জাও লিয়াঙ
রাজনৈতিক
বাস্তববাদিতা সাধারণভাবে বিশ্বাস করে যে থুসিদিদেস ট্র্যাপ (এটি এমন
আইডিয়া যাতে বলা হয়, উদীয়মান শক্তি অনিবার্যভাবেই বিদ্যমান শক্তিগুলোকে
চ্যালেঞ্জ করবে এবং বিদ্যমান শক্তিগুলো উদীয়মানের এ ধরনের চ্যালেঞ্জের যে
জবাব দেবে তাতে করে যুদ্ধ অনিবার্য করে তুলবে) এড়ানো যাবে না। এখন যদিও চীন
বিশ্বকে বোঝানোর চেষ্টা করছে যে সে শান্তিপূর্ণভাবে উত্থানের চেষ্টা করছে,
কিন্তু মনে হচ্ছে যে বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতায় যুদ্ধ ইতোমধ্যেই
শুরু হয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী হুয়াওয়ের পেছনে ছুটতে মিত্রদের ঐক্যবদ্ধ করা ও
চীনের বিরুদ্ধে শুল্ক যুদ্ধ লিপ্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন এখন
তার ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির মধ্যে নেপাল ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য
দেশকেও সামিল করার কঠোর প্রয়াস চালাচ্ছে।
রাজনৈতিক সংস্কার
১৯৪০-এর দশকের শেষ দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বে সামরিক জোট হিসেবে নর্থ আটলান্টিক ট্রি অর্গ্যানাইজেশন (ন্যাটো) প্রতিষ্ঠিত হয়। ৭০ বছর পর প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরঙ্কুশ শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র এখন দক্ষিণ এশিয়ায় তার উপস্থিতি আরো জোরদার করার হাতিয়ার হিসেবে সামরিক সহযোগিতা কামনা করছে। এর প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্ব উদ্বিগ্ন।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে যে তার ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির প্রধান উদ্দেশ্য হলো মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কার কাছ থেকে মুক্ত ও কী থেকে মুক্ত। সহজেই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে না বলা হুমকিটি হলো চীন। চীনকে মোকাবিলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যদি ন্যাটোর মতো করে ইন্দো-প্যাসিপিক সংস্করণ তৈরি করতে চায়, তবে তাতে হয়তো সে সফল হবে না। সামরিকবাদী সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপরীতে চীন কোনো ধরনের সামরিক প্রতিযোগিতা একেবারেই পছন্দ করে না। ইতিহাস ও বাস্তবতা চীনকে ঘরোয়া স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের গুরুত্ব বেশি করে বুঝিয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। আর এর ভিত্তি হলো পারস্পরিক কল্যাণ ও অভিন্ন উন্নয়ন। এই অঞ্চলে বসবাসরত লোকজনের অভিন্ন সমৃদ্ধি ও জীবনযানের উন্নতি নিশ্চিত করাটা একটি বিরাট অর্জন। যুক্তরাষ্ট্র যদি দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের অস্তিত্বকে উন্মুক্ততা ও স্বাধীনতার প্রতি হুমকি বিবেচনা করে, তাহলে এ ধরনের বৈষম্যের ভিত্তি হবে কেবলই আদর্শগত ও রাজনৈতিক বদ্ধমূল ধারনা, যা সক্রিয় বিরোধিতার কারণে পরিণত হবে। চীন কখনো যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করেনি, করবেও না। মার্কিন প্রাধান্যবিশিষ্ট বিশ্বব্যবস্থাতেই চীন বিকশিত হয়েছে। খুবই সম্ভাবনা রয়েছে যে চীন এই বিশ্বব্যবস্থা ভাঙবে না, নিজদের জন্য কোনো কিছু তৈরি করবে না।
আরেকটি বাধার সৃষ্টি
সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির অংশগ্রহণকারী হিসেবে নেপালকে তালিকাভুক্ত করেছে এবং এই ভিত্তিতে তাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক সম্প্রসারণ করতে চাইছে। নেপাল সবসময় তার দুই প্রতিবেশীর মধ্যে গতিশীল ভারসাম্যবজায় রেখে তার জাতীয় স্বার্থ সর্বোচ্চভাবে পূরণ করার আশা করে। সাম্প্রতিক সময়ে নেপালের ঘরোয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অগ্রগতি ও চীনের সাথে সমন্বয় সাধন ও ভারতের সংশ্লিষ্ট কৌশলকে কেন্দ্র করে ভারসাম্য বজায় রাখার কাজটি করা হয়েছে। এখন নেপাল যদি চীনকে সংযত করার জন্য মার্কিন কৌশলে যোগ দেয়, তবে তা কঠোর শ্রমে অর্জিত ভারসাম্যে মৌলিক পরিবর্তন আনবে, পুরো অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক পরিবেশকে বদলে দেবে।
নেপালের নীতিনির্ধারকেরা এই ইস্যুতে বিচক্ষণ দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মিলিনিয়াম চ্যালেঞ্জ করপোরেশন কমপ্যাক্ট প্রোগ্রাম গ্রহণ করা সত্ত্বেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে ভূমিকা পালন করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন স্পষ্টভাবেই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে নেপাল এই কৌশলে যোগ দিতে প্রস্তুত নয়। এখন নেপালের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি, আর যা করা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা হলো কোনো বড় শক্তির খেলায় যোগ না দেয়া। ওই স্ট্র্যাটেজিতে যোগদান ও চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন অবরোধে সামনের দিকে দেশকে নিয়ে যাওয়া হবে চীন ও নেপালের জন্য দুঃস্বপ্ন।
আন্দোলিত করা
ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির ফোকাস হবে ভারত মহাসাগর অঞ্চল। এই অঞ্চলে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান শক্তি আছে। সে হলো ভারত। এই দেশেরও উচ্চ প্রত্যাশা ও উচ্চাভিলাষ আছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের ঐতিহ্যবাহী কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে এবং তা রক্ষার জন্য সে কখনো ইতস্তত করে না। বড় দেশ হিসেবে ভারতের পক্ষে কখনো যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত ইচ্ছা পুরোপুরি গ্রহণ করা সম্ভব নয়। আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ভারতীয়রা স্পষ্টভাবেই দেখছে যে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে থুসিদিদেস ট্র্যাপ ঘটে গেলে তাতে যেই জয়ী হোক না কেন, আগে হোক বা পরে হোক, ভারতই হবে পরবর্তী শক্তি।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ়প্রত্যয় ও সক্ষমতা। আমেরিকা ফার্স্ট স্ট্র্যাটেজি বিকাশকারী ট্রাম্প প্রশাসন বারবার অন্যান্য দেশের সাথে করা প্রতিশ্রুতি ও চুক্তি লঙ্ঘন করছে। এটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশটির বিশ্বাসযোগ্যতা ব্যাপকভাবে দুর্বল করেছে। তাছাড়া অবাধ্য রাষ্ট্রগুলোকে বাধ্য করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের শ্রেয়তর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান প্রয়োগ করার ফলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো ভীত হয়ে পড়ে। ব্যবসায়িক মানসিকতাসম্পন্ন লোকদের প্রাধান্যপূর্ণ বর্তমান মার্কিন প্রশাসন আসলে পানিতে ঢেউ তুলে সেটাই করার চেষ্টা করছে।
রাজনৈতিক সংস্কার
১৯৪০-এর দশকের শেষ দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বে সামরিক জোট হিসেবে নর্থ আটলান্টিক ট্রি অর্গ্যানাইজেশন (ন্যাটো) প্রতিষ্ঠিত হয়। ৭০ বছর পর প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরঙ্কুশ শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র এখন দক্ষিণ এশিয়ায় তার উপস্থিতি আরো জোরদার করার হাতিয়ার হিসেবে সামরিক সহযোগিতা কামনা করছে। এর প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্ব উদ্বিগ্ন।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে যে তার ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির প্রধান উদ্দেশ্য হলো মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কার কাছ থেকে মুক্ত ও কী থেকে মুক্ত। সহজেই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে না বলা হুমকিটি হলো চীন। চীনকে মোকাবিলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যদি ন্যাটোর মতো করে ইন্দো-প্যাসিপিক সংস্করণ তৈরি করতে চায়, তবে তাতে হয়তো সে সফল হবে না। সামরিকবাদী সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপরীতে চীন কোনো ধরনের সামরিক প্রতিযোগিতা একেবারেই পছন্দ করে না। ইতিহাস ও বাস্তবতা চীনকে ঘরোয়া স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের গুরুত্ব বেশি করে বুঝিয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। আর এর ভিত্তি হলো পারস্পরিক কল্যাণ ও অভিন্ন উন্নয়ন। এই অঞ্চলে বসবাসরত লোকজনের অভিন্ন সমৃদ্ধি ও জীবনযানের উন্নতি নিশ্চিত করাটা একটি বিরাট অর্জন। যুক্তরাষ্ট্র যদি দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের অস্তিত্বকে উন্মুক্ততা ও স্বাধীনতার প্রতি হুমকি বিবেচনা করে, তাহলে এ ধরনের বৈষম্যের ভিত্তি হবে কেবলই আদর্শগত ও রাজনৈতিক বদ্ধমূল ধারনা, যা সক্রিয় বিরোধিতার কারণে পরিণত হবে। চীন কখনো যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করেনি, করবেও না। মার্কিন প্রাধান্যবিশিষ্ট বিশ্বব্যবস্থাতেই চীন বিকশিত হয়েছে। খুবই সম্ভাবনা রয়েছে যে চীন এই বিশ্বব্যবস্থা ভাঙবে না, নিজদের জন্য কোনো কিছু তৈরি করবে না।
আরেকটি বাধার সৃষ্টি
সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির অংশগ্রহণকারী হিসেবে নেপালকে তালিকাভুক্ত করেছে এবং এই ভিত্তিতে তাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক সম্প্রসারণ করতে চাইছে। নেপাল সবসময় তার দুই প্রতিবেশীর মধ্যে গতিশীল ভারসাম্যবজায় রেখে তার জাতীয় স্বার্থ সর্বোচ্চভাবে পূরণ করার আশা করে। সাম্প্রতিক সময়ে নেপালের ঘরোয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অগ্রগতি ও চীনের সাথে সমন্বয় সাধন ও ভারতের সংশ্লিষ্ট কৌশলকে কেন্দ্র করে ভারসাম্য বজায় রাখার কাজটি করা হয়েছে। এখন নেপাল যদি চীনকে সংযত করার জন্য মার্কিন কৌশলে যোগ দেয়, তবে তা কঠোর শ্রমে অর্জিত ভারসাম্যে মৌলিক পরিবর্তন আনবে, পুরো অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক পরিবেশকে বদলে দেবে।
নেপালের নীতিনির্ধারকেরা এই ইস্যুতে বিচক্ষণ দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মিলিনিয়াম চ্যালেঞ্জ করপোরেশন কমপ্যাক্ট প্রোগ্রাম গ্রহণ করা সত্ত্বেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে ভূমিকা পালন করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন স্পষ্টভাবেই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে নেপাল এই কৌশলে যোগ দিতে প্রস্তুত নয়। এখন নেপালের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি, আর যা করা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা হলো কোনো বড় শক্তির খেলায় যোগ না দেয়া। ওই স্ট্র্যাটেজিতে যোগদান ও চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন অবরোধে সামনের দিকে দেশকে নিয়ে যাওয়া হবে চীন ও নেপালের জন্য দুঃস্বপ্ন।
আন্দোলিত করা
ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির ফোকাস হবে ভারত মহাসাগর অঞ্চল। এই অঞ্চলে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান শক্তি আছে। সে হলো ভারত। এই দেশেরও উচ্চ প্রত্যাশা ও উচ্চাভিলাষ আছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের ঐতিহ্যবাহী কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে এবং তা রক্ষার জন্য সে কখনো ইতস্তত করে না। বড় দেশ হিসেবে ভারতের পক্ষে কখনো যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত ইচ্ছা পুরোপুরি গ্রহণ করা সম্ভব নয়। আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ভারতীয়রা স্পষ্টভাবেই দেখছে যে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে থুসিদিদেস ট্র্যাপ ঘটে গেলে তাতে যেই জয়ী হোক না কেন, আগে হোক বা পরে হোক, ভারতই হবে পরবর্তী শক্তি।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ়প্রত্যয় ও সক্ষমতা। আমেরিকা ফার্স্ট স্ট্র্যাটেজি বিকাশকারী ট্রাম্প প্রশাসন বারবার অন্যান্য দেশের সাথে করা প্রতিশ্রুতি ও চুক্তি লঙ্ঘন করছে। এটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশটির বিশ্বাসযোগ্যতা ব্যাপকভাবে দুর্বল করেছে। তাছাড়া অবাধ্য রাষ্ট্রগুলোকে বাধ্য করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের শ্রেয়তর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান প্রয়োগ করার ফলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো ভীত হয়ে পড়ে। ব্যবসায়িক মানসিকতাসম্পন্ন লোকদের প্রাধান্যপূর্ণ বর্তমান মার্কিন প্রশাসন আসলে পানিতে ঢেউ তুলে সেটাই করার চেষ্টা করছে।
>>>লেখক: ডক্টরাল স্টুডেন্ট, সিচুয়ান ইউনিভার্সিটি, চীন
No comments