গুলির মুখে শরীর পেতে দিয়ে ছাত্রদের প্রাণ বাঁচানো হিরো
ফ্লোরিডার
পার্কল্যান্ডে বুধবার যেসব স্কুলে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে একজন বন্দুকধারী
১৭ জনকে হত্যা করে, তার একজন ফুটবল কোচ অ্যারন ফেজ। প্রাণে বেঁচে যাওয়া
ছাত্ররা বলছে, তাদের কোচ সেদিন ‘হিরো’ বা নায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ
হয়েছিলেন। গুলির মুখে ছাত্রদের প্রাণ বাঁচাতে নিজের শরীর দিয়ে তাদের
আড়াল করেছিলেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে কোচ ফেজের ছবি দিয়ে স্কুলের এক ছাত্র
লিখেছে- ভদ্র মহোদয় ও ভদ্র মহিলাগণ, দেখুন একজন নায়কের মুখ। মেজরিটি
স্টোনম্যান হাইস্কুলের এই ফুটবল কোচ একজন ছাত্রকে তার শরীর দিয়ে আড়াল করে
বাঁচাতে গিয়ে গুলিতে মারাত্মক জখম হয়েছেন। তিনি এখন হাসপাতালে।
স্টোনম্যান স্কুল থেকে পাস করে ফেজ নব্বইয়ের দশক থেকে কোচ হিসেবে সেখানেই
কাজ করছেন। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এখন তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। স্থানীয় এক
পত্রিকায় তার সহকর্মী অ্যান্ড্রু হফম্যান বলেন, অ্যারন একজন চুপচাপ ধরনের
মানুষ। কিন্তু স্কুলের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আপস সে করে না। এটি কি সত্য?
মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে স্কুলে মহড়া হয়েছিল- কোনো বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটলে
কী করতে হবে। বুধবার যখন প্রথম গুলি হয়,
শিক্ষক মেলিসা ফাকোস্কি ভেবেছিলেন
মহড়া বোধহয় এখনও শেষ হয়নি। আমাদের কেউ কেউ ভেবেছিলেন মহড়ার চূড়ান্ত
পর্ব হয়তো চলছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর যখন তিনি বুঝতে পারলেন এটি সত্যিকারের
হামলা, তার মাথায় প্রথম চিন্তা ঢোকে যে ছাত্রদের বাঁচাতে হবে। দ্রুত
ক্লাসরুমের একটি আলমারির ভেতর ১৯ ছাত্রকে ঢুকিয়ে দেন তিনি। তার পর পুলিশ
আসা পর্যন্ত ৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে থাকেন। তিনি বলেন, মহড়া থেকে যা
শিখেছিলাম তা কাজে লাগিয়েছিলাম সেদিন। না হলে কী করতাম জানি না। প্রমান
দাও যে তুমি পুলিশ জিম গার্ড নামে আরেক শিক্ষক কজন ছাত্রছাত্রীকে ক্লাসরুমে
লুকিয়ে রেখেছিলেন। গুলির আওয়াজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অঙ্কের এই শিক্ষক
রুমের দরজা বন্ধ করে দেন। গ্রাড সিএনএনকে বলেন, আমি শুনতে পাচ্ছিলাম পুলিশ
করিডর দিয়ে এগিয়ে আসছে। পুলিশ দরজায় ধাক্কা দিচ্ছিল। কিন্তু প্রশিক্ষণে
গ্রাড শিখেছিলেন হঠাৎ কাউকে বিশ্বাস না করতে। তিনি বলেন, স্পেশাল ফোর্স যখন
ক্লাসরুমের কাছে এলো, আমি আমার ছাত্রদের আলমারির মধ্যে ঢুকে যেতে বললাম।
এর পর একটি কাগজ দিয়ে জানালা ঢেকে পুলিশকে পরিচয় দিতে বললাম। তারা যখন
বলল তারা পুলিশ, আমি প্রমাণ চাইলাম। তারা যখন বাইরে থেকে তাদের পরিচয়পত্র
দেখাল, শুধু তখনই আমি দরজা খুলি। বিবিসি বাংলা।
No comments