রাষ্ট্রায়ত্ত ১৪ প্রতিষ্ঠানে লাগাম by মিজান চৌধুরী
দুর্নীতি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে লাগাম বেঁধে দেয়া হয়েছে ব্যাংক-বীমাসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ১৪ প্রতিষ্ঠানকে। খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা ও অনাদায়ী ঋণ আদায়ের টার্গেট নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে। পাশাপাশি নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাদের ব্যয় কমানোর ও সঠিক খাতে ঋণ দেয়ার। বেঁধে দেয়াকে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মকর্তাকে জবাবদিহিতা করতে হবে।
বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ সংক্রান্ত চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন, জীবন বীমা কর্পোরেশন ও সাধারণ বীমা কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও সিইও এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সচিব ড. এম আসলাম আলম চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন।
চুক্তির ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ব্যাংকিং খাতের সংস্কারের আওতায় এ চুক্তি করা হয়েছে। এ খাতের অগ্রগতির জন্য সংস্কারের প্রয়োজন আছে। এ সংস্কারের কারণে দায়বদ্ধতাকে আরও শক্তিশালী করবে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা প্রতিবেদনে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশকিছু সমস্যা উঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক, বীমা ও প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছে। পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে ব্যাংকের শাখাগুলোতে ঋণ বিতরণ কার্যক্রম গুটিয়ে আনা হচ্ছে। উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ ও ধার-দেনা করে চলতে গিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে একাধিক ব্যাংক।
২১শ’ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য সোনালী ব্যাংকের : এই চুক্তির আওতায় সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে দু’ হাজার ১০০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়েছে। অবশ্য এ ব্যাংকের গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বকেয়া ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ২৮ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা এবং শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ আট হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। জানা গেছে, এ পর্যন্ত সোনালী ব্যাংক শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে ৭৩৮ কোটি টাকা আদায় করেছে। যা মোট শ্রেণীকৃত ঋণের ৩৫.১৪ শতাংশ।
আটশ’ কোটি টাকা আদায় করতে হবে জনতা ব্যাংককে : আগামী এক বছরে জনতা ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে আদায় করতে হবে আটশ’ কোটি টাকা। এ ব্যাংকের গত ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট বকেয়া ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ২৯ হাজার ৫৯ কোটি টাকা এবং শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে তিন হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা।
অগ্রণী ব্যাংক : আগামী এক বছরে এক হাজার কোটি টাকা শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়েছে অগ্রণী ব্যাংককে। বর্তমান অগ্রণী ব্যাংকের শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে তিন হাজার ৭০৬ কোটি টাকা এবং বকেয়া ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ২০ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা।
রূপালী ব্যাংক : এ সংস্কারের আওতায় রূপালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে ১২৫ কোটি টাকা আদায় করতে হবে। বর্তমান এ ব্যাংকের শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ১৫০ কোটি টাকা এবং বকেয়া ঋণের পরিমাণ হচ্ছে এক হাজার ২৩৭ কোটি টাকা।
বেসিক ব্যাংক : বেসিক ব্যাংককে ২৬৮ কোটি টাকা শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের বর্তমান বকেয়া ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ছয় হাজার ৩১০ কোটি টাকা এবং শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৬৩০ কোটি টাকা।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) : এ ব্যাংকের মোট অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৪ হাজার ১৪৬ কোটি ৮ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৪০৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা। চুক্তির আওতায় বকেয়া ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক : কৃষি ঋণের শ্রেণীকৃত হওয়ার পরিমাণ বেশি। খেলাপি ঋণ এ ব্যাংকের একটি সমস্যা। ব্যাংকের কস্ট অব ফান্ড হচ্ছে ১১.৪৯ শতাংশ। শস্য ঋণের সুদের হার ১২ শতাংশ। ফলে ব্যাংকের পরিচালনা ব্যয় নিয়েও সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে সংস্কারের আওতায় পরিচালনা ব্যয় কমাতে বলা হয়। আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক : এ ব্যাংকের প্রধান সমস্যা হচ্ছে মূলধন ঘাটতি। ব্যাংকের পরিশোধিত ১০০ কোটি টাকা মূলধনের মধ্যে সরকার ২৫ কোটি টাকা পূরণ করেছে। ব্যাংকের তহবিল সংকট দেখা দিয়েছে। উচ্চ সুদে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে মেয়াদি আমানত সংগ্রহ করা হচ্ছে। ফলে ব্যাংকের ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। অর্থের অভাবে বর্তমান শাখাগুলোতে ঋণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা যাচ্ছে না। এ ব্যাংকের কর্পোরেট ট্যাক্স থেকে অব্যাহতি চেয়েছে।
কর্মসংস্থান ব্যাংক : এ ব্যাংক নিজস্ব উদ্যোক্তা ও বাইরে থেকে আমানত সংগ্রহ করতে পারছে না। নতুন ঋণ বিতরণের জন্য সরকারের সরবরাহ করা তহবিলের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। সরকারের তহবিলের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে স্থায়ী আমানত সংগ্রহের অনুমোদন চাওয়া হয়। কর্মসংস্থান ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ৭০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৫২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪৫ কোটি টাকা বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক এখনও পরিশোধ করেনি।
বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ সংক্রান্ত চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন, জীবন বীমা কর্পোরেশন ও সাধারণ বীমা কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও সিইও এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সচিব ড. এম আসলাম আলম চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন।
চুক্তির ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ব্যাংকিং খাতের সংস্কারের আওতায় এ চুক্তি করা হয়েছে। এ খাতের অগ্রগতির জন্য সংস্কারের প্রয়োজন আছে। এ সংস্কারের কারণে দায়বদ্ধতাকে আরও শক্তিশালী করবে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা প্রতিবেদনে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশকিছু সমস্যা উঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক, বীমা ও প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছে। পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে ব্যাংকের শাখাগুলোতে ঋণ বিতরণ কার্যক্রম গুটিয়ে আনা হচ্ছে। উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ ও ধার-দেনা করে চলতে গিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে একাধিক ব্যাংক।
২১শ’ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য সোনালী ব্যাংকের : এই চুক্তির আওতায় সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে দু’ হাজার ১০০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়েছে। অবশ্য এ ব্যাংকের গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বকেয়া ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ২৮ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা এবং শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ আট হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। জানা গেছে, এ পর্যন্ত সোনালী ব্যাংক শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে ৭৩৮ কোটি টাকা আদায় করেছে। যা মোট শ্রেণীকৃত ঋণের ৩৫.১৪ শতাংশ।
আটশ’ কোটি টাকা আদায় করতে হবে জনতা ব্যাংককে : আগামী এক বছরে জনতা ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে আদায় করতে হবে আটশ’ কোটি টাকা। এ ব্যাংকের গত ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট বকেয়া ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ২৯ হাজার ৫৯ কোটি টাকা এবং শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে তিন হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা।
অগ্রণী ব্যাংক : আগামী এক বছরে এক হাজার কোটি টাকা শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়েছে অগ্রণী ব্যাংককে। বর্তমান অগ্রণী ব্যাংকের শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে তিন হাজার ৭০৬ কোটি টাকা এবং বকেয়া ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ২০ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা।
রূপালী ব্যাংক : এ সংস্কারের আওতায় রূপালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে ১২৫ কোটি টাকা আদায় করতে হবে। বর্তমান এ ব্যাংকের শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ১৫০ কোটি টাকা এবং বকেয়া ঋণের পরিমাণ হচ্ছে এক হাজার ২৩৭ কোটি টাকা।
বেসিক ব্যাংক : বেসিক ব্যাংককে ২৬৮ কোটি টাকা শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের বর্তমান বকেয়া ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ছয় হাজার ৩১০ কোটি টাকা এবং শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৬৩০ কোটি টাকা।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) : এ ব্যাংকের মোট অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৪ হাজার ১৪৬ কোটি ৮ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৪০৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা। চুক্তির আওতায় বকেয়া ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক : কৃষি ঋণের শ্রেণীকৃত হওয়ার পরিমাণ বেশি। খেলাপি ঋণ এ ব্যাংকের একটি সমস্যা। ব্যাংকের কস্ট অব ফান্ড হচ্ছে ১১.৪৯ শতাংশ। শস্য ঋণের সুদের হার ১২ শতাংশ। ফলে ব্যাংকের পরিচালনা ব্যয় নিয়েও সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে সংস্কারের আওতায় পরিচালনা ব্যয় কমাতে বলা হয়। আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক : এ ব্যাংকের প্রধান সমস্যা হচ্ছে মূলধন ঘাটতি। ব্যাংকের পরিশোধিত ১০০ কোটি টাকা মূলধনের মধ্যে সরকার ২৫ কোটি টাকা পূরণ করেছে। ব্যাংকের তহবিল সংকট দেখা দিয়েছে। উচ্চ সুদে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে মেয়াদি আমানত সংগ্রহ করা হচ্ছে। ফলে ব্যাংকের ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। অর্থের অভাবে বর্তমান শাখাগুলোতে ঋণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা যাচ্ছে না। এ ব্যাংকের কর্পোরেট ট্যাক্স থেকে অব্যাহতি চেয়েছে।
কর্মসংস্থান ব্যাংক : এ ব্যাংক নিজস্ব উদ্যোক্তা ও বাইরে থেকে আমানত সংগ্রহ করতে পারছে না। নতুন ঋণ বিতরণের জন্য সরকারের সরবরাহ করা তহবিলের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। সরকারের তহবিলের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে স্থায়ী আমানত সংগ্রহের অনুমোদন চাওয়া হয়। কর্মসংস্থান ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ৭০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৫২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪৫ কোটি টাকা বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক এখনও পরিশোধ করেনি।
No comments