সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি প্রার্থীদের -সিইসির মতবিনিময় সভায় হট্টগোল
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থীরা গতকাল রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে সিইসির সাথে মতবিনিময় করতে যান |
সুষ্ঠু
নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সেনা মোতায়েনের দাবি করেছে সিটি করপোরেশন
নির্বাচনের অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেভাবে সম্পন্ন
করার জন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী
রকিবউদ্দীন আহমদ। এ সময় কাউকে অযথা হয়রানি না করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের
প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সিইসির বক্তব্যের প্রতি আস্থা না থাকায় তার
বক্তব্যের আগেই সভাস্থল ত্যাগ করেন বেশির ভাগ প্রার্থী। সভায় কথা বলার সমান
সুযোগ না পাওয়ায় প্রার্থীদের মধ্যে হট্টগোল বেধে যায়। পরে ইসি সচিবের
হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে রোববার সকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ ঘটনা ঘটে। উত্তর সিটির রিটার্নিং অফিসার এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আপনারা দৃঢ়তা ও নিরপেতার সঙ্গে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন।’
প্রার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেভাবে ভোট সম্পন্ন করার জন্য আপনারা সব ধরনের সহযোগিতা করবেন। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিজেকে বিপদগ্রস্ত করবেন না। নির্বাচনের প্রতিটি ত্রে ও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ রয়েছে। তিনি সবাইকে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনের সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সে দিনটি আসুক, যে দিন নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজন হবে না। প্রয়োজন হবে না ম্যাজিস্ট্রেট ও ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়োগের। আসুন, গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র পরমতসহিষ্ণুতার মধ্য দিয়ে ভোটারদের রায় খোলা মনে নেয়ার সংস্কৃতির চর্চা করি।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপে করার জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। ইতোমধ্যে অধিকসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আরো বাড়ানো হবে।
সভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, আমাকে সমর্থন দিয়েছে ২০ দলীয় জোট। সেই জোটের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী কারাগারে আছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন মামলায় আত্মগোপনে আছেন। আটককৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এ ছাড়া প্রতিটি নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের উদ্যোগ নেয়া হয়; কিন্তু এখন পর্যন্ত এ রকম কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে উদ্যোগ নেয়ার জন্য সিইসির প্রতি আহ্বান জানান।
সবার বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক বলেন, আমি সব মেয়র প্রার্থীদের সাথে একমত। সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। অনেক প্রার্থী সভায় অভিযোগ করলেন, তাদের কার্যক্রম মিডিয়ায় প্রচার হচ্ছে না। আমি অনুরোধ করব আপনারা সবার নির্বাচনী কার্যক্রম সমানভাবে প্রচার করুন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে কেউ প্রচার চালাতে পারবে না। গণভবন থেকে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হচ্ছে, এগুলো বন্ধ করতে হবে।
নির্বাচন যেন ‘বিত্তবানদের লড়াই’ না হয় সেজন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি করে কে কত টাকা খরচ করছেন তা তদারকির প্রস্তাব দেন বিকল্প ধারার মাহী বি চৌধুরী।
তার বক্তব্যের সাথে সহমত প্রকাশ করে গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘নির্বাচনে পেশি শক্তি ও টাকার খেলা বন্ধ করতে কমিশনকে উদ্যোগ নিতে হবে।’
নির্বাচনের আগে বক্তব্য দেয়ার েেত্র সতর্ক থাকতে নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সমর্থিত প্রার্থী নাদের চৌধুরী।
নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের হয়রানি বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সমর্থিত প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কাফী রতন।
সভায় বেশির ভাগ প্রার্থী বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। এ সময় ইসি সচিব অভিযোগকারী প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করুন। ইসি অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক, মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ, জাবেদ আলী ও মোহাম্মদ আবু হাফিজ, ইসি সচিব মো: সিরাজুল ইসলাম, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো: শাহ আলম প্রমুখ।
সিইসির বক্তব্যের প্রতি আস্থা নেই প্রার্থীদের : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের বক্তব্যের প্রতি আস্থা নেই প্রার্থীদের। ইসির ডাকা মতবিনিময় সভায় সিইসির বক্তব্যের আগেই সভাস্থল ত্যাগ করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীরা। একই সাথে বেরিয়ে পড়েন বেশির ভাগ কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এ সময় সভাস্থল শ্রোতাশূন্য হয়ে পড়ে।
এর আগে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক, বিএনপি সমর্থিত তাবিথ আউয়াল ও বিকল্প ধারা সমর্থিত মাহী বি চৌধুরী। তাদের বক্তব্য শেষ হলে তারা সিইসির বক্তব্যের আগেই সভাস্থল ত্যাগ করেন। এ সময় একজন কাউন্সিলর প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতিদিনই বিভিন্ন বক্তব্য দেয়া হচ্ছে; কিন্তু সেসব বক্তব্যে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে না। প্রতিদিনই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। সরকার সমর্থিত প্রার্থীরা হুমকি দিচ্ছে।
এরপর বক্তব্য রাখেন উপস্থিত কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থী। এ সময় তারা সিইসিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি যাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য এই বৈঠকের আয়োজন করলেন, তারা আপনার কথা না শুনেই চলে গেলেন।’
গণমাধ্যমে প্রচারে সমান সুযোগ চান প্রার্থীরা : প্রধান দুই দল সমর্থিতদের দিকেই গণমাধ্যমের নজর থাকার অভিযোগ তুলে প্রচারের েেত্র সমান সুযোগ দাবি করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা বেশির ভাগ প্রার্থী।
মতবিনিময়ের শুরুতে নির্দলীয় প্রার্থী মো: আনিসুজ্জামান খোকন বিএনএ সমর্থিত প্রার্থী শেখ শহীদুজ্জামানও প্রচারে ‘সুযোগ না দেয়ায়’ গণমাধ্যমের সমালোচনা করেন।
গণমাধ্যমে সমান সুযোগ চেয়ে তারা বলেন, প্রত্যেক প্রার্থীর প্রচার এবং নির্বাচনী ইশতেহার গণমাধ্যমে প্রচার করতে হবে। এ জন্য প্রচারিত সময়কে প্রত্যেকের জন্য সমান ভাগে ভাগ করে দিতে হবে।
প্রার্থীদের বক্তব্যের পরিপ্রেেিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘অনেকে বলছেন, গণমাধ্যমে প্রচার পাচ্ছেন না, সকলের নাম যেন প্রচারিত হয় সেজন্য গণমাধ্যমকে অনুরোধ করব। সকলে যেন সমান সুযোগ পায় এটি নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম যেন সহযোগিতা করে।
সিইসির মতবিনিময় সভায় হট্টগোল : আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সিইসির সাথে প্রার্থীদের মতবিনিময় সভায় বৈষম্যমূলক প্রচারণাকে কেন্দ্র করে মেয়র প্রার্থীদের সাথে কাউন্সিলর প্রার্থীদের হট্টগোল দেখা দেয়। এ ঘটনায় অনেকে সভা শেষ হওয়ার আগেই চলে যান। এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন রিটার্নিং অফিসার মো: শাহ আলম এ ঘটনায় ােভ প্রকাশ করে বলেন, যারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সভা শেষের আগে চলে গেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় ভোটে ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে ১৬ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭৭ এবং সংরতি নারী কাউন্সিলর পদে ৮৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। এ সিটিতে একজন মেয়র এবং ৩৬ কাউন্সিলর ও ১২ সংরতি নারী কাউন্সিলর পেতে ভোট দেবেন ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৩৭৪ জন ভোটার।
রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে রোববার সকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ ঘটনা ঘটে। উত্তর সিটির রিটার্নিং অফিসার এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আপনারা দৃঢ়তা ও নিরপেতার সঙ্গে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন।’
প্রার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেভাবে ভোট সম্পন্ন করার জন্য আপনারা সব ধরনের সহযোগিতা করবেন। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিজেকে বিপদগ্রস্ত করবেন না। নির্বাচনের প্রতিটি ত্রে ও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ রয়েছে। তিনি সবাইকে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনের সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সে দিনটি আসুক, যে দিন নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজন হবে না। প্রয়োজন হবে না ম্যাজিস্ট্রেট ও ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়োগের। আসুন, গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র পরমতসহিষ্ণুতার মধ্য দিয়ে ভোটারদের রায় খোলা মনে নেয়ার সংস্কৃতির চর্চা করি।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপে করার জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। ইতোমধ্যে অধিকসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আরো বাড়ানো হবে।
সভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, আমাকে সমর্থন দিয়েছে ২০ দলীয় জোট। সেই জোটের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী কারাগারে আছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন মামলায় আত্মগোপনে আছেন। আটককৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এ ছাড়া প্রতিটি নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের উদ্যোগ নেয়া হয়; কিন্তু এখন পর্যন্ত এ রকম কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে উদ্যোগ নেয়ার জন্য সিইসির প্রতি আহ্বান জানান।
সবার বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক বলেন, আমি সব মেয়র প্রার্থীদের সাথে একমত। সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। অনেক প্রার্থী সভায় অভিযোগ করলেন, তাদের কার্যক্রম মিডিয়ায় প্রচার হচ্ছে না। আমি অনুরোধ করব আপনারা সবার নির্বাচনী কার্যক্রম সমানভাবে প্রচার করুন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে কেউ প্রচার চালাতে পারবে না। গণভবন থেকে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হচ্ছে, এগুলো বন্ধ করতে হবে।
নির্বাচন যেন ‘বিত্তবানদের লড়াই’ না হয় সেজন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি করে কে কত টাকা খরচ করছেন তা তদারকির প্রস্তাব দেন বিকল্প ধারার মাহী বি চৌধুরী।
তার বক্তব্যের সাথে সহমত প্রকাশ করে গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘নির্বাচনে পেশি শক্তি ও টাকার খেলা বন্ধ করতে কমিশনকে উদ্যোগ নিতে হবে।’
নির্বাচনের আগে বক্তব্য দেয়ার েেত্র সতর্ক থাকতে নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সমর্থিত প্রার্থী নাদের চৌধুরী।
নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের হয়রানি বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সমর্থিত প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কাফী রতন।
সভায় বেশির ভাগ প্রার্থী বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। এ সময় ইসি সচিব অভিযোগকারী প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করুন। ইসি অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক, মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ, জাবেদ আলী ও মোহাম্মদ আবু হাফিজ, ইসি সচিব মো: সিরাজুল ইসলাম, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো: শাহ আলম প্রমুখ।
সিইসির বক্তব্যের প্রতি আস্থা নেই প্রার্থীদের : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের বক্তব্যের প্রতি আস্থা নেই প্রার্থীদের। ইসির ডাকা মতবিনিময় সভায় সিইসির বক্তব্যের আগেই সভাস্থল ত্যাগ করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীরা। একই সাথে বেরিয়ে পড়েন বেশির ভাগ কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এ সময় সভাস্থল শ্রোতাশূন্য হয়ে পড়ে।
এর আগে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক, বিএনপি সমর্থিত তাবিথ আউয়াল ও বিকল্প ধারা সমর্থিত মাহী বি চৌধুরী। তাদের বক্তব্য শেষ হলে তারা সিইসির বক্তব্যের আগেই সভাস্থল ত্যাগ করেন। এ সময় একজন কাউন্সিলর প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতিদিনই বিভিন্ন বক্তব্য দেয়া হচ্ছে; কিন্তু সেসব বক্তব্যে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে না। প্রতিদিনই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। সরকার সমর্থিত প্রার্থীরা হুমকি দিচ্ছে।
এরপর বক্তব্য রাখেন উপস্থিত কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থী। এ সময় তারা সিইসিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি যাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য এই বৈঠকের আয়োজন করলেন, তারা আপনার কথা না শুনেই চলে গেলেন।’
গণমাধ্যমে প্রচারে সমান সুযোগ চান প্রার্থীরা : প্রধান দুই দল সমর্থিতদের দিকেই গণমাধ্যমের নজর থাকার অভিযোগ তুলে প্রচারের েেত্র সমান সুযোগ দাবি করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা বেশির ভাগ প্রার্থী।
মতবিনিময়ের শুরুতে নির্দলীয় প্রার্থী মো: আনিসুজ্জামান খোকন বিএনএ সমর্থিত প্রার্থী শেখ শহীদুজ্জামানও প্রচারে ‘সুযোগ না দেয়ায়’ গণমাধ্যমের সমালোচনা করেন।
গণমাধ্যমে সমান সুযোগ চেয়ে তারা বলেন, প্রত্যেক প্রার্থীর প্রচার এবং নির্বাচনী ইশতেহার গণমাধ্যমে প্রচার করতে হবে। এ জন্য প্রচারিত সময়কে প্রত্যেকের জন্য সমান ভাগে ভাগ করে দিতে হবে।
প্রার্থীদের বক্তব্যের পরিপ্রেেিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘অনেকে বলছেন, গণমাধ্যমে প্রচার পাচ্ছেন না, সকলের নাম যেন প্রচারিত হয় সেজন্য গণমাধ্যমকে অনুরোধ করব। সকলে যেন সমান সুযোগ পায় এটি নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম যেন সহযোগিতা করে।
সিইসির মতবিনিময় সভায় হট্টগোল : আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সিইসির সাথে প্রার্থীদের মতবিনিময় সভায় বৈষম্যমূলক প্রচারণাকে কেন্দ্র করে মেয়র প্রার্থীদের সাথে কাউন্সিলর প্রার্থীদের হট্টগোল দেখা দেয়। এ ঘটনায় অনেকে সভা শেষ হওয়ার আগেই চলে যান। এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন রিটার্নিং অফিসার মো: শাহ আলম এ ঘটনায় ােভ প্রকাশ করে বলেন, যারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সভা শেষের আগে চলে গেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় ভোটে ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে ১৬ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭৭ এবং সংরতি নারী কাউন্সিলর পদে ৮৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। এ সিটিতে একজন মেয়র এবং ৩৬ কাউন্সিলর ও ১২ সংরতি নারী কাউন্সিলর পেতে ভোট দেবেন ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৩৭৪ জন ভোটার।
No comments