গুন্টার গ্রাসের বিদায়
নারায়ণগঞ্জে সোনারগাঁওয়ের পানাম নগর ঘুরে দেখেছিলেন সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাস। ছবি: নাসির আলী মামুন |
ঢাকার রাস্তায় রিকশা ভ্রমণে সাহিত্যে নোবেলজয়ী জার্মান সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাস। ছবি: নাসির আলী মামুন |
সাহিত্যে
নোবেলজয়ী জার্মান লেখক গুন্টার গ্রাস আর নেই। আজ সোমবার ৮৭ বছর বয়সে
তিনি মারা গেছেন। তাঁর প্রকাশকদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি ও বিবিসি
অনলাইন এ খবর জানায়।
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান স্টাইডল টুইটারে বলেছে, এই নোবেলজয়ী জার্মানির উত্তরাঞ্চলের শহর লুইবেকের এক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
প্রথম উপন্যাস ‘দ্য টিন ড্রাম’ দিয়েই পাঠকের মন জয় করেছিলেন গুন্টার গ্রাস। এ ছাড়া তাঁর খ্যাতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে ‘ক্যাট অ্যান্ড মাউস’ ও ‘ডগ ইয়ার্স’ উপন্যাসের নামও। তিনটি বইয়েই তিনি তুলে আনেন তাঁর নিজের শহর ডানজিশে হিটলারের নাৎসি বাহিনীর উত্থান ও নির্মমতার কথা। ডানজিশ শহরটি এখন অবশ্য পোলান্ডে পড়েছে, নাম গদানস্ক।
গুন্টার গ্রাস ১৯৯৯ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। এ ছাড়া অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। স্টাইলিশ গোঁফ আর তামাকের পাইপ এই ঔপন্যাসিক, কবি, নাট্যকার ও ভাস্করের ব্যক্তিত্বের অংশ হয়ে গিয়েছিল।
গুন্টার গ্রাস ছিলেন রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিত্ব। তাঁর লেখায় এই বিষয়টির উপস্থিতি ছিল অনেক শক্তিশালী। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ এর তীব্র সমালোচক ছিলেন এই সাহিত্যিক। তিনি মনে করতেন, বুশ এই যুদ্ধের নামে ধর্মকে ব্যবহার করছেন। ইসরায়েলেরও কড়া সমালোচক ছিলেন তিনি। এক কবিতায় তিনি বলেছেন, ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় হুমকি। ইসরায়েলের সমালোচনা করে ২০১২ সালে তিনি ‘হোয়াট মাস্ট বি সেইড’ নামের একটি গদ্য-কবিতা লেখেন। ইসরায়েল তখন তাঁর বিরুদ্ধে অ্যান্টি-সেমিটিজমের (ইহুদিবাদ-বিদ্বেষী) অভিযোগ এনে তাঁকে দেশটিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কিশোর গুন্টার গ্রাসকে হিটলারের নাৎসি বাহিনীতে যোগ দিতে হয়েছিল। আর এ কারণেই ইসরায়েল তাঁকে পছন্দ করত না। ইসরায়েল মনে করে, তিনি হিটলারের নাৎসি বাহিনীর হয়ে কাজ করেছেন বলেই ইহুদি-বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করেন। মুদি দোকানদার বাবা-মায়ের ঘরে ১৯২৭ সালের ১৬ অক্টোবর গুন্টার গ্রাসের জন্ম। তিনি পড়াশোনা করেছেন ভাস্কর্য ও গ্রাফিকস নিয়ে। তবে তিনি ছিলেন শখের ভিজুয়্যাল শিল্পী। তাঁর লেখা আর শিল্পে বারবার এসেছে জার্মানির অতীত ইতিহাস।
গুন্টার গ্রাসের লেখা প্রথম তিনটি বই ডানজিশ ট্রিলজি হিসেবে পরিচিত। এই বইগুলোতে উঠে এসেছে তাঁর শৈশব ও অতীত দিনের কথা। তাঁর প্রথম উপন্যাস দ্য টিন ড্রাম অনুসরণে চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছিল। ২০০২ সালে গুন্টার গ্রাসের লেখা ‘ক্র্যাবওয়াক’ উপন্যাসেও উঠে এসেছে বর্তমানের ওপর অতীতের প্রভাবের কথা।
১৯৬৯ সালে এক সাক্ষাৎকারে গুন্টার গ্রাস নিজেকে মানবতাবাদী হিসেবে উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, কোনো বিশ্বাসকে চূড়ান্ত সত্য বলে ধরে নিয়ে তা প্রতিষ্ঠার নামে অন্যের ওপর আক্রমণাত্মক মনোভাবের বিরোধী তিনি।
একটি অনুষ্ঠানের সূচি থেকে লেখক সালমান রুশদির রচনা পাঠ বাদ দেওয়ায় ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়ে জার্মানির জনপ্রিয় লেখক গুন্টার গ্রাস ১৯৮৯ সালে বার্লিন একাডেমি অব আর্টস থেকে পদত্যাগ করেন। ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাসের জন্য ইরানের আয়াতুল্লাহ খোমেনি তখন সালমান রুশদিকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। দুই জার্মানির একত্রীকরণের বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন গুন্টার গ্রাস।
‘পিলিং দ্য ওনিয়ন’ নামে ২০০৬ সালে একটি আত্মজীবনী লিখেছিলেন এই নোবেলজয়ী। সেখানে তিনি ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে নাৎসি বাহিনীর সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা গোপন রাখার ব্যাখ্যা দেন। তাঁর ভাষায়, ‘যুদ্ধের পর আমি আমার কৈশোরের লজ্জাটুকু আড়াল রাখতে চেয়েছিলাম।’
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান স্টাইডল টুইটারে বলেছে, এই নোবেলজয়ী জার্মানির উত্তরাঞ্চলের শহর লুইবেকের এক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
প্রথম উপন্যাস ‘দ্য টিন ড্রাম’ দিয়েই পাঠকের মন জয় করেছিলেন গুন্টার গ্রাস। এ ছাড়া তাঁর খ্যাতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে ‘ক্যাট অ্যান্ড মাউস’ ও ‘ডগ ইয়ার্স’ উপন্যাসের নামও। তিনটি বইয়েই তিনি তুলে আনেন তাঁর নিজের শহর ডানজিশে হিটলারের নাৎসি বাহিনীর উত্থান ও নির্মমতার কথা। ডানজিশ শহরটি এখন অবশ্য পোলান্ডে পড়েছে, নাম গদানস্ক।
গুন্টার গ্রাস ১৯৯৯ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। এ ছাড়া অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। স্টাইলিশ গোঁফ আর তামাকের পাইপ এই ঔপন্যাসিক, কবি, নাট্যকার ও ভাস্করের ব্যক্তিত্বের অংশ হয়ে গিয়েছিল।
গুন্টার গ্রাস ছিলেন রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিত্ব। তাঁর লেখায় এই বিষয়টির উপস্থিতি ছিল অনেক শক্তিশালী। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ এর তীব্র সমালোচক ছিলেন এই সাহিত্যিক। তিনি মনে করতেন, বুশ এই যুদ্ধের নামে ধর্মকে ব্যবহার করছেন। ইসরায়েলেরও কড়া সমালোচক ছিলেন তিনি। এক কবিতায় তিনি বলেছেন, ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় হুমকি। ইসরায়েলের সমালোচনা করে ২০১২ সালে তিনি ‘হোয়াট মাস্ট বি সেইড’ নামের একটি গদ্য-কবিতা লেখেন। ইসরায়েল তখন তাঁর বিরুদ্ধে অ্যান্টি-সেমিটিজমের (ইহুদিবাদ-বিদ্বেষী) অভিযোগ এনে তাঁকে দেশটিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কিশোর গুন্টার গ্রাসকে হিটলারের নাৎসি বাহিনীতে যোগ দিতে হয়েছিল। আর এ কারণেই ইসরায়েল তাঁকে পছন্দ করত না। ইসরায়েল মনে করে, তিনি হিটলারের নাৎসি বাহিনীর হয়ে কাজ করেছেন বলেই ইহুদি-বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করেন। মুদি দোকানদার বাবা-মায়ের ঘরে ১৯২৭ সালের ১৬ অক্টোবর গুন্টার গ্রাসের জন্ম। তিনি পড়াশোনা করেছেন ভাস্কর্য ও গ্রাফিকস নিয়ে। তবে তিনি ছিলেন শখের ভিজুয়্যাল শিল্পী। তাঁর লেখা আর শিল্পে বারবার এসেছে জার্মানির অতীত ইতিহাস।
গুন্টার গ্রাসের লেখা প্রথম তিনটি বই ডানজিশ ট্রিলজি হিসেবে পরিচিত। এই বইগুলোতে উঠে এসেছে তাঁর শৈশব ও অতীত দিনের কথা। তাঁর প্রথম উপন্যাস দ্য টিন ড্রাম অনুসরণে চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছিল। ২০০২ সালে গুন্টার গ্রাসের লেখা ‘ক্র্যাবওয়াক’ উপন্যাসেও উঠে এসেছে বর্তমানের ওপর অতীতের প্রভাবের কথা।
১৯৬৯ সালে এক সাক্ষাৎকারে গুন্টার গ্রাস নিজেকে মানবতাবাদী হিসেবে উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, কোনো বিশ্বাসকে চূড়ান্ত সত্য বলে ধরে নিয়ে তা প্রতিষ্ঠার নামে অন্যের ওপর আক্রমণাত্মক মনোভাবের বিরোধী তিনি।
একটি অনুষ্ঠানের সূচি থেকে লেখক সালমান রুশদির রচনা পাঠ বাদ দেওয়ায় ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়ে জার্মানির জনপ্রিয় লেখক গুন্টার গ্রাস ১৯৮৯ সালে বার্লিন একাডেমি অব আর্টস থেকে পদত্যাগ করেন। ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাসের জন্য ইরানের আয়াতুল্লাহ খোমেনি তখন সালমান রুশদিকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। দুই জার্মানির একত্রীকরণের বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন গুন্টার গ্রাস।
‘পিলিং দ্য ওনিয়ন’ নামে ২০০৬ সালে একটি আত্মজীবনী লিখেছিলেন এই নোবেলজয়ী। সেখানে তিনি ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে নাৎসি বাহিনীর সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা গোপন রাখার ব্যাখ্যা দেন। তাঁর ভাষায়, ‘যুদ্ধের পর আমি আমার কৈশোরের লজ্জাটুকু আড়াল রাখতে চেয়েছিলাম।’
No comments