শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব
সাভারের ভবনধসে হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও বেশি। দুর্ঘটনা-পরবর্তী বিভিন্ন আলোচনায় ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের কথা উঠে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশি একজন পোশাকশ্রমিকের জীবনের মূল্য কতখানি? কর্মক্ষম একজন মানুষের মৃত্যু তাঁর পরিবারকে যে আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয়, কতটুকু আর্থিক ক্ষতিপূরণ সেই বিপর্যয় সামাল দেওয়ার জন্য যথেষ্ট? অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে এই মূল্যমান যাচাইয়ের কাজটি প্রায় অসম্ভব। তবু ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারগুলোকে যাতে আর্থিকভাবে বঞ্চিত করা না হয়, সে লক্ষ্যে পরিসংখ্যানগত কাঠামোর ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণের সর্বনিম্ন অঙ্ক পরিমাপ করা প্রয়োজন।
সরকারি মন্ত্রণালয় ও বস্ত্রশিল্প সমিতিগুলোর নথিপত্র ও ইন্টারনেটের বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ওপর নির্ভর করে আমরা এই বিশ্লেষণটি করেছি। একজন শ্রমিক কর্মস্থলে দুর্ঘটনার শিকার হলে, প্রথমে যে ক্ষতিটি আর্থিকভাবে পরিমাপযোগ্য তা হলো দুর্ঘটনার ফলে শ্রমিকটি যে উপার্জন হতে বঞ্চিত হলো, সেই পরিমাণটা। এই অর্থনৈতিক ক্ষতি পরিমাপ করার জন্য প্রথমে আমাদের জানতে হবে দুর্ঘটনার সময় শ্রমিকটির বয়স এবং বাংলাদেশে শ্রমিকদের অবসর গ্রহণের গড় বয়স। শ্রমিকটি বেঁচে থাকলে অবসর গ্রহণ পর্যন্ত যত উপার্জন করতেন, সেই উপার্জনকে আমরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে বিবেচনা করেছি। মোট মজুরির সঙ্গে বর্তমান বাজারদর, মুদ্রাস্ফীতি ও সুদের হারের সামঞ্জস্য রেখে ক্ষতিপূরণের একটি অনুমিত সংখ্যা হিসাব করা হয়েছে।
সিঙ্গাপুরসহ আরও কিছু উন্নত দেশের মানবসম্পদ অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, কর্মরত কোনো শ্রমিক দায়িত্ব পালনকালে মারা গেলে তাঁদের বয়সের ওপর ভিত্তি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই কম বয়স্কদের জন্য ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বেশি হয়। সাভারের দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে আমরা হিসাবটি করেছি এভাবে—ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বয়স ২০ বছর বা এর নিচে হলে তাঁর জন্য ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হবে ৩০ বছরের হারানো উপার্জনের সমপরিমাণ। ২১-২৫ বছর বয়সীদের জন্য ২৫ বছর, ২৬-৩০ বছর বয়সীদের জন্য ১৫ বছর এবং ৩১-৩৫ বছর বয়সীদের জন্য ১০ বছরের হারানো উপার্জনের সমান ক্ষতিপূরণ ধরা হয়েছে। শ্রমিকদের অবসর গ্রহণের গড় বয়স ৫০ বছর ধরা হয়েছে, যা অবসর গ্রহণের জাতীয় গড়ের চেয়ে কম। অনুমান করে নেওয়া হয়েছে অন্তত প্রতি পাঁচ বছরে একবার গ্রেডভিত্তিক পদোন্নতি হবে।
বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, কর্মরত ব্যক্তিরা মূলত দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত। যাঁরা রপ্তানি বস্ত্র প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে জড়িত (শ্রমিক) এবং যাঁরা সরাসরি জড়িত নন (কর্মচারী)। কর্মচারীদের বেতনকাঠামো চারটি গ্রেডে বিভক্ত। শ্রমিকদের বেতনকাঠামো সাতটি গ্রেডে বিভক্ত। যত ওপরের গ্রেডে পদোন্নতি হয়, মজুরি ও অন্যান্য সুবিধা তত বৃদ্ধি পায়। যেমন গ্রেড-৭-এর অন্তর্ভুক্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সুইং মেশিন অপারেটর, অ্যাসিস্ট্যান্ট নিটিং মেশিন অপারেটরদের বেতন মাসিক তিন হাজার টাকা। অন্যদিকে গ্রেড-১-এর প্যাটার্ন মাস্টার, চিফ কাটিং মাস্টারদের বেতন মাসিক নয় হাজার ৩০০ টাকা। অদক্ষ ও নতুন শ্রমিকেরা শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার সাধারণত তিন-চার মাস পরে গ্রেড-৭ শ্রমিক হিসেবে পদোন্নতি পান।
তথ্য-উপাত্তের সীমাবদ্ধতার কারণে আমাদের কিছু অনুমানের ভিত্তিতে হিসাব করতে হয়েছে। ক্ষতিপূরণ হিসাবের সময় মূল মজুরি গণনা করা হয়েছে। ওভারটাইম, উৎসব বোনাস ইত্যাদি বিবেচনা করা হয়নি। আমরা অনুমান করেছি যে নতুন শ্রমবছরের শুরুতে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি হয় গত ২৫ বছরের গড় মুদ্রাস্ফীতির সমান হারে (৬ দশমিক ২৮ শতাংশ, তথ্যসূত্র: ওয়ার্ল্ড ব্যাংক)। বাস্তবে শ্রমিকদের বেতন বছর বছর বাড়ে না।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই ক্ষতিপূরণ এককালীন দেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। এ জন্য আমরা শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ বার্ষিক মজুরির বর্তমান মূল্য (প্রেজেন্ট ডিসকাউন্টেড ভ্যালু) হিসাব করেছি। এই রেট ধরা হয়েছে গত ২৫ বছরের গড় রিয়েল ডিসকাউন্টেড রেটের সমান (২ দশমিক ৭২ শতাংশ, তথ্যসূত্র: ওয়ার্ল্ড ব্যাংক) হিসেবে।
এই আলোচনা অনুযায়ী আমাদের বিস্তারিত হিসাবটি ইন্টারনেটে রয়েছে (http://savartragedz.wordpress.com)। আমাদের হিসাব অনুযায়ী, ২০ ও ২০ বছরের কম বয়সীদের জন্য ক্ষতিপূরণ সর্বনিম্ন ২৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা (দুর্ঘটনার সময় গ্রেড-৭) এবং সর্বোচ্চ ৫৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকা (দুর্ঘটনার সময় গ্রেড-৩)। ২১-২৫ বছর বয়সের শ্রমিকদের জন্য সর্বনিম্ন ১৮ লাখ ১৩ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। যাঁদের বয়স ২৬-৩০ বছর, তাঁদের জন্য ক্ষতিপূরণ ১২ লাখ ৫৮ হাজার এবং ৩৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। ৩১ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের জন্য ক্ষতিপূরণ নয় লাখ ৭৮ হাজার এবং সর্বোচ্চ ২৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। যাঁদের বয়স ৩৫ বছরের বেশি, তাঁদের জন্য ক্ষতিপূরণ সর্বনিম্ন আট লাখ ৯৯ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।
এই হিসাব কেবল নিহত শ্রমিক ও কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য। আহত শ্রমিকদের জন্য হিসাবের কাঠামো ভিন্ন হবে। আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের খরচও বিবেচনায় আনা প্রয়োজন, যা জটিলতা পরিহার করতে আমাদের হিসাবে ধরা হয়নি। কাঠামোগত কিছু রদবদল করে আমরা বিভিন্ন মাত্রার অঙ্গহানি বা শারীরিক ক্ষতির মাত্রা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের হার হিসাব করতে পারি, যা অন্যান্য উন্নত দেশে ব্যবহূত হচ্ছে। যাঁরা আহত অবস্থা থেকে অল্প সময়েই সেরে উঠবেন, তাঁদেরও ন্যূনতম দুই-তিন মাসের মজুরি এবং অন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া দরকার।
স্বল্পপরিসরে কাজ করার কারণে আমাদের হিসাব-প্রক্রিয়ায় কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাত্ত্বিকভাবে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, বরং মানসিক ও সামাজিক বিপর্যয়কেও বিবেচনায় আনা উচিত। সমস্যা হলো মানসিক আঘাতের মূল্যমান নিরূপণ করা দুঃসাধ্য একটি কাজ। দুর্ঘটনায় আটকে পড়া শ্রমিকদের অনেকেই বিভিন্ন মাত্রায় মানসিক আঘাত পেয়েছেন এবং তাঁদের জন্য একই কাজের পরিবেশে ফিরে যাওয়া কষ্টকর।
লেখকেরা: যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন-সিয়াটল, ইউনিভার্সিটি অব অ্যালবার্টা, সেন্ট লুইস ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় উচ্চশিক্ষারত।
bdsavartragedz@gmail.com
সরকারি মন্ত্রণালয় ও বস্ত্রশিল্প সমিতিগুলোর নথিপত্র ও ইন্টারনেটের বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ওপর নির্ভর করে আমরা এই বিশ্লেষণটি করেছি। একজন শ্রমিক কর্মস্থলে দুর্ঘটনার শিকার হলে, প্রথমে যে ক্ষতিটি আর্থিকভাবে পরিমাপযোগ্য তা হলো দুর্ঘটনার ফলে শ্রমিকটি যে উপার্জন হতে বঞ্চিত হলো, সেই পরিমাণটা। এই অর্থনৈতিক ক্ষতি পরিমাপ করার জন্য প্রথমে আমাদের জানতে হবে দুর্ঘটনার সময় শ্রমিকটির বয়স এবং বাংলাদেশে শ্রমিকদের অবসর গ্রহণের গড় বয়স। শ্রমিকটি বেঁচে থাকলে অবসর গ্রহণ পর্যন্ত যত উপার্জন করতেন, সেই উপার্জনকে আমরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে বিবেচনা করেছি। মোট মজুরির সঙ্গে বর্তমান বাজারদর, মুদ্রাস্ফীতি ও সুদের হারের সামঞ্জস্য রেখে ক্ষতিপূরণের একটি অনুমিত সংখ্যা হিসাব করা হয়েছে।
সিঙ্গাপুরসহ আরও কিছু উন্নত দেশের মানবসম্পদ অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, কর্মরত কোনো শ্রমিক দায়িত্ব পালনকালে মারা গেলে তাঁদের বয়সের ওপর ভিত্তি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই কম বয়স্কদের জন্য ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বেশি হয়। সাভারের দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে আমরা হিসাবটি করেছি এভাবে—ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বয়স ২০ বছর বা এর নিচে হলে তাঁর জন্য ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হবে ৩০ বছরের হারানো উপার্জনের সমপরিমাণ। ২১-২৫ বছর বয়সীদের জন্য ২৫ বছর, ২৬-৩০ বছর বয়সীদের জন্য ১৫ বছর এবং ৩১-৩৫ বছর বয়সীদের জন্য ১০ বছরের হারানো উপার্জনের সমান ক্ষতিপূরণ ধরা হয়েছে। শ্রমিকদের অবসর গ্রহণের গড় বয়স ৫০ বছর ধরা হয়েছে, যা অবসর গ্রহণের জাতীয় গড়ের চেয়ে কম। অনুমান করে নেওয়া হয়েছে অন্তত প্রতি পাঁচ বছরে একবার গ্রেডভিত্তিক পদোন্নতি হবে।
বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, কর্মরত ব্যক্তিরা মূলত দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত। যাঁরা রপ্তানি বস্ত্র প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে জড়িত (শ্রমিক) এবং যাঁরা সরাসরি জড়িত নন (কর্মচারী)। কর্মচারীদের বেতনকাঠামো চারটি গ্রেডে বিভক্ত। শ্রমিকদের বেতনকাঠামো সাতটি গ্রেডে বিভক্ত। যত ওপরের গ্রেডে পদোন্নতি হয়, মজুরি ও অন্যান্য সুবিধা তত বৃদ্ধি পায়। যেমন গ্রেড-৭-এর অন্তর্ভুক্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সুইং মেশিন অপারেটর, অ্যাসিস্ট্যান্ট নিটিং মেশিন অপারেটরদের বেতন মাসিক তিন হাজার টাকা। অন্যদিকে গ্রেড-১-এর প্যাটার্ন মাস্টার, চিফ কাটিং মাস্টারদের বেতন মাসিক নয় হাজার ৩০০ টাকা। অদক্ষ ও নতুন শ্রমিকেরা শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার সাধারণত তিন-চার মাস পরে গ্রেড-৭ শ্রমিক হিসেবে পদোন্নতি পান।
তথ্য-উপাত্তের সীমাবদ্ধতার কারণে আমাদের কিছু অনুমানের ভিত্তিতে হিসাব করতে হয়েছে। ক্ষতিপূরণ হিসাবের সময় মূল মজুরি গণনা করা হয়েছে। ওভারটাইম, উৎসব বোনাস ইত্যাদি বিবেচনা করা হয়নি। আমরা অনুমান করেছি যে নতুন শ্রমবছরের শুরুতে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি হয় গত ২৫ বছরের গড় মুদ্রাস্ফীতির সমান হারে (৬ দশমিক ২৮ শতাংশ, তথ্যসূত্র: ওয়ার্ল্ড ব্যাংক)। বাস্তবে শ্রমিকদের বেতন বছর বছর বাড়ে না।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই ক্ষতিপূরণ এককালীন দেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। এ জন্য আমরা শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ বার্ষিক মজুরির বর্তমান মূল্য (প্রেজেন্ট ডিসকাউন্টেড ভ্যালু) হিসাব করেছি। এই রেট ধরা হয়েছে গত ২৫ বছরের গড় রিয়েল ডিসকাউন্টেড রেটের সমান (২ দশমিক ৭২ শতাংশ, তথ্যসূত্র: ওয়ার্ল্ড ব্যাংক) হিসেবে।
এই আলোচনা অনুযায়ী আমাদের বিস্তারিত হিসাবটি ইন্টারনেটে রয়েছে (http://savartragedz.wordpress.com)। আমাদের হিসাব অনুযায়ী, ২০ ও ২০ বছরের কম বয়সীদের জন্য ক্ষতিপূরণ সর্বনিম্ন ২৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা (দুর্ঘটনার সময় গ্রেড-৭) এবং সর্বোচ্চ ৫৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকা (দুর্ঘটনার সময় গ্রেড-৩)। ২১-২৫ বছর বয়সের শ্রমিকদের জন্য সর্বনিম্ন ১৮ লাখ ১৩ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। যাঁদের বয়স ২৬-৩০ বছর, তাঁদের জন্য ক্ষতিপূরণ ১২ লাখ ৫৮ হাজার এবং ৩৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। ৩১ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের জন্য ক্ষতিপূরণ নয় লাখ ৭৮ হাজার এবং সর্বোচ্চ ২৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। যাঁদের বয়স ৩৫ বছরের বেশি, তাঁদের জন্য ক্ষতিপূরণ সর্বনিম্ন আট লাখ ৯৯ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।
এই হিসাব কেবল নিহত শ্রমিক ও কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য। আহত শ্রমিকদের জন্য হিসাবের কাঠামো ভিন্ন হবে। আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের খরচও বিবেচনায় আনা প্রয়োজন, যা জটিলতা পরিহার করতে আমাদের হিসাবে ধরা হয়নি। কাঠামোগত কিছু রদবদল করে আমরা বিভিন্ন মাত্রার অঙ্গহানি বা শারীরিক ক্ষতির মাত্রা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের হার হিসাব করতে পারি, যা অন্যান্য উন্নত দেশে ব্যবহূত হচ্ছে। যাঁরা আহত অবস্থা থেকে অল্প সময়েই সেরে উঠবেন, তাঁদেরও ন্যূনতম দুই-তিন মাসের মজুরি এবং অন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া দরকার।
স্বল্পপরিসরে কাজ করার কারণে আমাদের হিসাব-প্রক্রিয়ায় কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাত্ত্বিকভাবে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, বরং মানসিক ও সামাজিক বিপর্যয়কেও বিবেচনায় আনা উচিত। সমস্যা হলো মানসিক আঘাতের মূল্যমান নিরূপণ করা দুঃসাধ্য একটি কাজ। দুর্ঘটনায় আটকে পড়া শ্রমিকদের অনেকেই বিভিন্ন মাত্রায় মানসিক আঘাত পেয়েছেন এবং তাঁদের জন্য একই কাজের পরিবেশে ফিরে যাওয়া কষ্টকর।
লেখকেরা: যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন-সিয়াটল, ইউনিভার্সিটি অব অ্যালবার্টা, সেন্ট লুইস ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় উচ্চশিক্ষারত।
bdsavartragedz@gmail.com
No comments