বিব্রত বিপ্লব এবং কোচের উচ্চাশা
বাংলাদেশের কোচ নিকোলা ইলিয়েভস্কি বারবার একটা কথাই বলে গেলেন, ‘লেবানন নিজেদের মাটিতে আমাদের ৪ গোল দিয়েছে। আমরা কেন আমাদের মাটিতে ৫ গোল দিতে পারব না। আমাদের প্রতিপক্ষ তো আর আর্জেন্টিনা নয়। কাজেই পারব না কেন?’ ‘হোয়াই’, ‘হোয়াই’ বলে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন নিজেই।
পেশাদার কোচের চোখে সরল সমীকরণ। কিন্তু আন্তর্জাতিক ফুটবল তো আর দুধভাত নয়। মাঠে নেমে আগে খেলতে হবে। বাংলাদেশ সেটি পারেনি আগের ম্যাচে। লেবাননের কাছে ২৩ জুলাই উড়ে গেছে ৪-০ গোলে!
সেই পরাজয়ের ব্যবচ্ছেদ নানাভাবে হয়েছে গত কদিন। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের পায়ে তো কিছু নেই-ই, মাথায়ও নাকি কিছু নেই—রাখঢাক না রেখে বলে দিয়েছেন ইলিয়েভস্কি। অথচ আজ সেই খেলোয়াড়দের কাছেই কি না ৫ গোলের ব্যবধানে জয় চান কোচ!
সত্যিই চান? ‘কেন সম্ভব নয়’ বললেও ‘জিততে চাই’ কথাটা সরাসরি বলতে পারেননি কোচ। কখনো খেলোয়াড়দের ভূয়সী প্রশংসায় ভরান, কখনো তুলাধোনা করেন। তাতে বিভ্রান্তিই তৈরি হয়। আজকের ম্যাচে আসলে তাঁর কী লক্ষ্য? ‘ভেরি ইন্টারেস্টিং প্রশ্ন’—বলে কথা বাড়ালেন না মেসিডোনিয়ান কোচ।
কিন্তু প্রশ্নবাণ ছুটলই। অধিনায়ক বিপ্লবকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে রাখঢাক না করে জানিয়ে দেন, ‘না, বিপ্লবকে কালও খেলাব না। গোলরক্ষক হিসেবে আমি আগের ম্যাচের মতো মামুুন খানকেই রাখছি।’
বিপ্লবের সঙ্গে কি নিষ্ঠুর রসিকতাই করা হলো না? সংবাদ সম্মেলনে তিনি অধিনায়ক, কিন্তু মাঠে অধিনায়ক আরেকজন! বিপ্লব ‘নন-প্লেয়িং’ ক্যাপ্টেন।
বিপ্লবের বিব্রত ভাবটা বোঝা গেল, তাঁর চোখ দুটোও ছলছল করে উঠল। কিন্তু কথাবার্তায় ধীরস্থির থাকলেন, ‘আমরা একটা পরিবার। আমরা চাই, সেরা ফুটবল খেলতে। কোচের সিদ্ধান্তকে আমি সম্মান জানাই। কোচই বস। জাতীয় দলে আমি ৫ মিনিটে খেলার সুযোগ পেলেও খেলব।’
লেবানন ম্যাচের আগে অধিনায়ক বিপ্লবকে একাদশ থেকে বাদ দেন কোচ। নতুন অধিনায়ক হিসেবে সহ-অধিনায়ক আরিফ দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানালে তিন বছর পর দলে ফেরা সুজনকে পরতে হয়েছে অধিনায়কত্বের বাহুবন্ধনী। সুজনের প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন আরিফ!
অধিনায়ক-নাটকের পর জোটে একরাশ লজ্জা। লেবানন সম্পর্কে পুরো ধারণা ছিল না। তাদের একটা ভিডিও পর্যন্ত জোগাড় করতে পারেননি বাফুফের কর্তারা। ৪ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে দল। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক সুজন দেশে ফিরে বলেছেন, ‘লেবানন গিয়ে ঘুমাতে না-পারা, খেতে না-পারা—এগুলো আমাদের খেলায় প্রভাব ফেলেছে। এত বাজে ফুটবল খেলব কল্পনাও করিনি।’
সেই ক্ষত মোছার সুযোগ আজ। বাংলাদেশ দল ঘরের মাঠে ফিরতি ম্যাচটা খেলতে নামছে সন্ধ্যা ৬টায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। ঘরের মাঠ, পরিবেশ-পরিস্থিতি সবই অনুকূল—অজুহাত দেওয়ার সুযোগ নেই সুজনদের।
তবে খেলোয়াড়েরা কিন্তু কোচের আস্থা অর্জন করতে পারেননি। নইলে কেন বলবেন, ‘৯০ মিনিট খেলার সামর্থ্য এঁদের নেই, এঁরা ৪৫ মিনিটের প্লেয়ার। জাহিদ খুব ভালো প্লেয়ার, অথচ ফিজিক নেই। ওয়ালি ভালো ডিফেন্ডার, দম নেই...।’
এই ‘নেই’-এর সমাহারে সুজন লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ‘জিতব’ মুখ ফুটে বলার সাহস অবশ্য নেই। তবে ভেতরের প্রত্যাশাটা হলো, অন্তত ড্র করে মান বাঁচানো এবং এটা প্রমাণ করা, লেবাননের কাছে বাংলাদেশ চার গোলের হারার দল নয়।
লেবাননও চাইছে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে। যদিও কোচ এমিলি রুস্তমের আকাঙ্ক্ষাটা বেরোল ঘোরা পথে, ‘জিততে চাইব না, এমন কোনো লক্ষ্য নিয়ে মাঠে যাব না। পৃথিবীর কোনো কোচই এভাবে চিন্তা করেন না।’
অধিনায়ক কোজার ইনজুরি কাটিয়ে আজ ফিরছেন। কোচের পাশে বসে আজকের ম্যাচ নিয়ে বেশি কিছু বলেননি এই মিডফিল্ডার। আনুষ্ঠানিকতা সারলেন সংক্ষিপ্ত দুটি বাক্যে, ‘বাংলাদেশ ভালো দল। আমরা ভালো দলের সঙ্গেই খেলতে এসেছি।’
বাংলাদেশ ‘ভালো দল’—এটা প্রতিপক্ষকে সম্মান দেখানো। সম্মানটা পুনরুদ্ধার করতে আরিফ, সুজনদের সামনে আজ বড় চ্যালেঞ্জ। জ্বলে ওঠার আজই উপযুক্ত সময়।
তবে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আসলে অন্য। সে হলো পরিকল্পনাহীনতা। না হলে ইতিহাসের হাতছোঁয়া দূরত্বে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ কেন কোনো আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলে প্রস্তুত হবে না?
পেশাদার কোচের চোখে সরল সমীকরণ। কিন্তু আন্তর্জাতিক ফুটবল তো আর দুধভাত নয়। মাঠে নেমে আগে খেলতে হবে। বাংলাদেশ সেটি পারেনি আগের ম্যাচে। লেবাননের কাছে ২৩ জুলাই উড়ে গেছে ৪-০ গোলে!
সেই পরাজয়ের ব্যবচ্ছেদ নানাভাবে হয়েছে গত কদিন। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের পায়ে তো কিছু নেই-ই, মাথায়ও নাকি কিছু নেই—রাখঢাক না রেখে বলে দিয়েছেন ইলিয়েভস্কি। অথচ আজ সেই খেলোয়াড়দের কাছেই কি না ৫ গোলের ব্যবধানে জয় চান কোচ!
সত্যিই চান? ‘কেন সম্ভব নয়’ বললেও ‘জিততে চাই’ কথাটা সরাসরি বলতে পারেননি কোচ। কখনো খেলোয়াড়দের ভূয়সী প্রশংসায় ভরান, কখনো তুলাধোনা করেন। তাতে বিভ্রান্তিই তৈরি হয়। আজকের ম্যাচে আসলে তাঁর কী লক্ষ্য? ‘ভেরি ইন্টারেস্টিং প্রশ্ন’—বলে কথা বাড়ালেন না মেসিডোনিয়ান কোচ।
কিন্তু প্রশ্নবাণ ছুটলই। অধিনায়ক বিপ্লবকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে রাখঢাক না করে জানিয়ে দেন, ‘না, বিপ্লবকে কালও খেলাব না। গোলরক্ষক হিসেবে আমি আগের ম্যাচের মতো মামুুন খানকেই রাখছি।’
বিপ্লবের সঙ্গে কি নিষ্ঠুর রসিকতাই করা হলো না? সংবাদ সম্মেলনে তিনি অধিনায়ক, কিন্তু মাঠে অধিনায়ক আরেকজন! বিপ্লব ‘নন-প্লেয়িং’ ক্যাপ্টেন।
বিপ্লবের বিব্রত ভাবটা বোঝা গেল, তাঁর চোখ দুটোও ছলছল করে উঠল। কিন্তু কথাবার্তায় ধীরস্থির থাকলেন, ‘আমরা একটা পরিবার। আমরা চাই, সেরা ফুটবল খেলতে। কোচের সিদ্ধান্তকে আমি সম্মান জানাই। কোচই বস। জাতীয় দলে আমি ৫ মিনিটে খেলার সুযোগ পেলেও খেলব।’
লেবানন ম্যাচের আগে অধিনায়ক বিপ্লবকে একাদশ থেকে বাদ দেন কোচ। নতুন অধিনায়ক হিসেবে সহ-অধিনায়ক আরিফ দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানালে তিন বছর পর দলে ফেরা সুজনকে পরতে হয়েছে অধিনায়কত্বের বাহুবন্ধনী। সুজনের প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন আরিফ!
অধিনায়ক-নাটকের পর জোটে একরাশ লজ্জা। লেবানন সম্পর্কে পুরো ধারণা ছিল না। তাদের একটা ভিডিও পর্যন্ত জোগাড় করতে পারেননি বাফুফের কর্তারা। ৪ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে দল। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক সুজন দেশে ফিরে বলেছেন, ‘লেবানন গিয়ে ঘুমাতে না-পারা, খেতে না-পারা—এগুলো আমাদের খেলায় প্রভাব ফেলেছে। এত বাজে ফুটবল খেলব কল্পনাও করিনি।’
সেই ক্ষত মোছার সুযোগ আজ। বাংলাদেশ দল ঘরের মাঠে ফিরতি ম্যাচটা খেলতে নামছে সন্ধ্যা ৬টায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। ঘরের মাঠ, পরিবেশ-পরিস্থিতি সবই অনুকূল—অজুহাত দেওয়ার সুযোগ নেই সুজনদের।
তবে খেলোয়াড়েরা কিন্তু কোচের আস্থা অর্জন করতে পারেননি। নইলে কেন বলবেন, ‘৯০ মিনিট খেলার সামর্থ্য এঁদের নেই, এঁরা ৪৫ মিনিটের প্লেয়ার। জাহিদ খুব ভালো প্লেয়ার, অথচ ফিজিক নেই। ওয়ালি ভালো ডিফেন্ডার, দম নেই...।’
এই ‘নেই’-এর সমাহারে সুজন লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ‘জিতব’ মুখ ফুটে বলার সাহস অবশ্য নেই। তবে ভেতরের প্রত্যাশাটা হলো, অন্তত ড্র করে মান বাঁচানো এবং এটা প্রমাণ করা, লেবাননের কাছে বাংলাদেশ চার গোলের হারার দল নয়।
লেবাননও চাইছে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে। যদিও কোচ এমিলি রুস্তমের আকাঙ্ক্ষাটা বেরোল ঘোরা পথে, ‘জিততে চাইব না, এমন কোনো লক্ষ্য নিয়ে মাঠে যাব না। পৃথিবীর কোনো কোচই এভাবে চিন্তা করেন না।’
অধিনায়ক কোজার ইনজুরি কাটিয়ে আজ ফিরছেন। কোচের পাশে বসে আজকের ম্যাচ নিয়ে বেশি কিছু বলেননি এই মিডফিল্ডার। আনুষ্ঠানিকতা সারলেন সংক্ষিপ্ত দুটি বাক্যে, ‘বাংলাদেশ ভালো দল। আমরা ভালো দলের সঙ্গেই খেলতে এসেছি।’
বাংলাদেশ ‘ভালো দল’—এটা প্রতিপক্ষকে সম্মান দেখানো। সম্মানটা পুনরুদ্ধার করতে আরিফ, সুজনদের সামনে আজ বড় চ্যালেঞ্জ। জ্বলে ওঠার আজই উপযুক্ত সময়।
তবে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আসলে অন্য। সে হলো পরিকল্পনাহীনতা। না হলে ইতিহাসের হাতছোঁয়া দূরত্বে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ কেন কোনো আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলে প্রস্তুত হবে না?
No comments