সাকিবকে আইসিসির আরেকটি স্বীকৃতি
খবরটা পাওয়ার পর প্রথমেই কি তিনি কোচকে খুঁজেছেন? কাল সন্ধ্যায় সাকিব আল হাসান বললেন, কোচের কথা মনে পড়েছে, কিন্তু এখনো তাঁর সঙ্গে কথা বলেননি। আজ প্র্যাকটিসে সামনাসামনিই ধন্যবাদ জানাবেন জেমি সিডন্সকে। একমাত্র স্পিনার হিসেবে যে আইসিসি বর্ষসেরা টেস্ট দলে ঢুকে গেলেন, এতে বড় অবদান তো সিডন্সেরই!
বয়সভিত্তিক দলগুলোয় সমানে কথা বলেছে তাঁর ব্যাট-বল। জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন মূলত ডেভ হোয়াটমোরের ‘মিনি অলরাউন্ডার’ তত্ত্বে। ব্যাটিং-বোলিং দুটোই মোটামুটি করতেন, ফিল্ডিংটা ভালো ছিল। ওয়ানডে দলে ঢোকার পর হয়ে গেলেন পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার। ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রামে যখন টেস্ট অভিষেক, তত দিনে ৩১ ওয়ানডেতে করে ফেলেছেন ১ সেঞ্চুরি ও ৫ হাফ সেঞ্চুরি, নিয়েছেন ৩১ উইকেট। টেস্টে বড় ছিল তখন ব্যাটসম্যান পরিচয়টাই, ক্যারিয়ারের প্রথম ৬ টেস্টে তাই উইকেট মাত্র ৩টি।
গত বছরের অক্টোবরে সবকিছু পাল্টে দিলেন সিডন্স। দেশসেরা স্পিনার মোহাম্মদ রফিকের অবসরের পর প্রথম টেস্ট খেলতে নামছে বাংলাদেশ। দলের স্পিন বোলিংয়ের নেতৃত্ব দেবেন কে—এই প্রশ্নে চায়ের কাপে ঝড়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের আগের দিন কোচ আকস্মিক ঘোষণা দিলেন, মূল স্পিনার হিসেবে খেলবেন সাকিব। কোচের অদ্ভুত ঘোষণার রেশটা কাটতে না-কাটতেই চমক দিলেন সাকিব। বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস-সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়ে ৩৬ রানে নিলেন ৭ উইকেট। কোচের একটি ঘোষণায় কোনো ক্রিকেটারের এমন নাটকীয় রূপান্তরের ইতিহাস আর আছে কি না, কে জানে। তবে সেই থেকে নিয়মিতই কোচের কথাকে সত্য প্রমাণ করে চলেছেন সাকিব। ৬ টেস্টে ৩ উইকেট নেওয়া বোলার পরের ৮ টেস্টে নিয়েছেন ৪৫ উইকেট। পেস বোলারদের স্বর্গ দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটে টানা তিন ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট।
আইসিসির বর্ষসেরা টেস্ট দলের মূল স্পিনার নির্বাচিত হওয়াটা যেন এই অসাধারণ রূপান্তরেরই আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। হরভজন সিংয়ের মতো স্পিনার এই দলের দ্বাদশ ব্যক্তি, তথ্যটি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে এটির মাহাত্ম্য। পেতে পারতেন আরও বড় স্বীকৃতি। শুধু বোলার হিসেবেই নয় বা শুধু টেস্টেই নয়, এই সময়ে সব ধরনের ক্রিকেটেই ব্যাটে-বলে স্বপ্নের মতো সময় কাটিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশের ইতিহাস-সেরা সাফল্যে। আইসিসির বর্ষসেরা পুরস্কারের প্রাথমিক মনোনয়নের তালিকায় ছিল এই ধারাবাহিক নৈপুণ্যেরই প্রতিফলন। ছিলেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার ও বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের প্রাথমিক মনোনয়ন তালিকায়। পরে অবশ্য জায়গা হয়নি সংক্ষিপ্ত তালিকায়।
বর্ষসেরা টেস্ট দলে থাকতে পেরে গর্বিত মাগুরার এই তরুণ, ‘বিশ্ব ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তিদের সঙ্গে একই দলে থাকতে পারাটা বিশাল এক সম্মান। সম্ভবত বোলিংয়ের জন্যই আমাকে দলে নেওয়া হয়েছে। মুরালিধরন, হরভজন, ভেট্টোরির মতো তারকারা এখনো খেলছে, অথচ দলের একমাত্র স্পিনার আমি—এটা সম্মানটাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।’ এই দলটা শুধুই বছরজুড়ে সেরা পারফরমারদের স্বীকৃতি, কোনো ম্যাচ তারা খেলবে না। কিন্তু এমন যদি হতো, সত্যি সত্যি এই দল মাঠে নেমেছে, আর দলের একমাত্র স্পিনার তিনি, দায়িত্বটা কি খুব কঠিন হয়ে যেত না? চিরপরিচিত সেই হাসি দিয়ে সাকিব জানালেন, ‘জানি না তো দলে আর কে কে আছে!’
দলের সহ-অধিনায়ক, সর্বশেষ দুই সিরিজে ছিলেন অধিনায়ক, বিশ্ব ক্রিকেটের বিশাল এক স্বীকৃতির দিনে তাই ভুলে যাননি দল ও দেশের কথাও, ‘বছর দুয়েক ধরেই বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ভালো হচ্ছে। অনেকগুলো ম্যাচে আমরা ভালো দলগুলোকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলেছি। টেস্ট দলে আমার অন্তর্ভুক্তি প্রমাণ করে বিশেষজ্ঞরাও এখন বাংলাদেশকে আমলে নিচ্ছে।’ আর আজকের অবস্থানে আসতে যাঁর অবদান অনস্বীকার্য, সেই সিডন্সের প্রতিক্রিয়া কী? ‘সাকিবের এটা দারুণ এক অর্জন। বছরটা সে অসাধারণ কাটিয়েছে, প্রমাণ করেছে সে বিশ্বের সেরা বোলার। আমার তো মনে হয়, খেলাটায় এখন সে-ই সেরা অলরাউন্ডার। মাশরাফির অনুপস্থিতিতে আক্রমণের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে, করছেও দুর্দান্ত। সে আসলে বিশ্বমানের’—বলেছেন বাংলাদেশের কোচ।
এই দল কোনো ম্যাচ হয়তো খেলবে না। হবে না হয়তো টেন্ডুলকার-ধোনি-ক্লার্কদের সঙ্গে মাঠে নামাও। কিন্তু দলের একমাত্র স্পিনার মানে গত এক বছরে বিশ্বের সেরা স্পিনার তিনি, এই স্বীকৃতিটাও কি কম?
বর্ষসেরা টেস্ট দল
গৌতম গম্ভীর, অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস, এবি ডি ভিলিয়ার্স, শচীন টেন্ডুলকার, থিলান সামারাবীরা, মাইকেল ক্লার্ক, মহেন্দ্র সিং ধোনি (অধি.), সাকিব আল হাসান, মিচেল জনসন, স্টুয়ার্ট ব্রড, ডেল স্টেইন। দ্বাদশ—হরভজন সিং।
বয়সভিত্তিক দলগুলোয় সমানে কথা বলেছে তাঁর ব্যাট-বল। জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন মূলত ডেভ হোয়াটমোরের ‘মিনি অলরাউন্ডার’ তত্ত্বে। ব্যাটিং-বোলিং দুটোই মোটামুটি করতেন, ফিল্ডিংটা ভালো ছিল। ওয়ানডে দলে ঢোকার পর হয়ে গেলেন পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার। ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রামে যখন টেস্ট অভিষেক, তত দিনে ৩১ ওয়ানডেতে করে ফেলেছেন ১ সেঞ্চুরি ও ৫ হাফ সেঞ্চুরি, নিয়েছেন ৩১ উইকেট। টেস্টে বড় ছিল তখন ব্যাটসম্যান পরিচয়টাই, ক্যারিয়ারের প্রথম ৬ টেস্টে তাই উইকেট মাত্র ৩টি।
গত বছরের অক্টোবরে সবকিছু পাল্টে দিলেন সিডন্স। দেশসেরা স্পিনার মোহাম্মদ রফিকের অবসরের পর প্রথম টেস্ট খেলতে নামছে বাংলাদেশ। দলের স্পিন বোলিংয়ের নেতৃত্ব দেবেন কে—এই প্রশ্নে চায়ের কাপে ঝড়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের আগের দিন কোচ আকস্মিক ঘোষণা দিলেন, মূল স্পিনার হিসেবে খেলবেন সাকিব। কোচের অদ্ভুত ঘোষণার রেশটা কাটতে না-কাটতেই চমক দিলেন সাকিব। বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস-সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়ে ৩৬ রানে নিলেন ৭ উইকেট। কোচের একটি ঘোষণায় কোনো ক্রিকেটারের এমন নাটকীয় রূপান্তরের ইতিহাস আর আছে কি না, কে জানে। তবে সেই থেকে নিয়মিতই কোচের কথাকে সত্য প্রমাণ করে চলেছেন সাকিব। ৬ টেস্টে ৩ উইকেট নেওয়া বোলার পরের ৮ টেস্টে নিয়েছেন ৪৫ উইকেট। পেস বোলারদের স্বর্গ দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটে টানা তিন ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট।
আইসিসির বর্ষসেরা টেস্ট দলের মূল স্পিনার নির্বাচিত হওয়াটা যেন এই অসাধারণ রূপান্তরেরই আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। হরভজন সিংয়ের মতো স্পিনার এই দলের দ্বাদশ ব্যক্তি, তথ্যটি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে এটির মাহাত্ম্য। পেতে পারতেন আরও বড় স্বীকৃতি। শুধু বোলার হিসেবেই নয় বা শুধু টেস্টেই নয়, এই সময়ে সব ধরনের ক্রিকেটেই ব্যাটে-বলে স্বপ্নের মতো সময় কাটিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশের ইতিহাস-সেরা সাফল্যে। আইসিসির বর্ষসেরা পুরস্কারের প্রাথমিক মনোনয়নের তালিকায় ছিল এই ধারাবাহিক নৈপুণ্যেরই প্রতিফলন। ছিলেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার ও বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের প্রাথমিক মনোনয়ন তালিকায়। পরে অবশ্য জায়গা হয়নি সংক্ষিপ্ত তালিকায়।
বর্ষসেরা টেস্ট দলে থাকতে পেরে গর্বিত মাগুরার এই তরুণ, ‘বিশ্ব ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তিদের সঙ্গে একই দলে থাকতে পারাটা বিশাল এক সম্মান। সম্ভবত বোলিংয়ের জন্যই আমাকে দলে নেওয়া হয়েছে। মুরালিধরন, হরভজন, ভেট্টোরির মতো তারকারা এখনো খেলছে, অথচ দলের একমাত্র স্পিনার আমি—এটা সম্মানটাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।’ এই দলটা শুধুই বছরজুড়ে সেরা পারফরমারদের স্বীকৃতি, কোনো ম্যাচ তারা খেলবে না। কিন্তু এমন যদি হতো, সত্যি সত্যি এই দল মাঠে নেমেছে, আর দলের একমাত্র স্পিনার তিনি, দায়িত্বটা কি খুব কঠিন হয়ে যেত না? চিরপরিচিত সেই হাসি দিয়ে সাকিব জানালেন, ‘জানি না তো দলে আর কে কে আছে!’
দলের সহ-অধিনায়ক, সর্বশেষ দুই সিরিজে ছিলেন অধিনায়ক, বিশ্ব ক্রিকেটের বিশাল এক স্বীকৃতির দিনে তাই ভুলে যাননি দল ও দেশের কথাও, ‘বছর দুয়েক ধরেই বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ভালো হচ্ছে। অনেকগুলো ম্যাচে আমরা ভালো দলগুলোকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলেছি। টেস্ট দলে আমার অন্তর্ভুক্তি প্রমাণ করে বিশেষজ্ঞরাও এখন বাংলাদেশকে আমলে নিচ্ছে।’ আর আজকের অবস্থানে আসতে যাঁর অবদান অনস্বীকার্য, সেই সিডন্সের প্রতিক্রিয়া কী? ‘সাকিবের এটা দারুণ এক অর্জন। বছরটা সে অসাধারণ কাটিয়েছে, প্রমাণ করেছে সে বিশ্বের সেরা বোলার। আমার তো মনে হয়, খেলাটায় এখন সে-ই সেরা অলরাউন্ডার। মাশরাফির অনুপস্থিতিতে আক্রমণের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে, করছেও দুর্দান্ত। সে আসলে বিশ্বমানের’—বলেছেন বাংলাদেশের কোচ।
এই দল কোনো ম্যাচ হয়তো খেলবে না। হবে না হয়তো টেন্ডুলকার-ধোনি-ক্লার্কদের সঙ্গে মাঠে নামাও। কিন্তু দলের একমাত্র স্পিনার মানে গত এক বছরে বিশ্বের সেরা স্পিনার তিনি, এই স্বীকৃতিটাও কি কম?
বর্ষসেরা টেস্ট দল
গৌতম গম্ভীর, অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস, এবি ডি ভিলিয়ার্স, শচীন টেন্ডুলকার, থিলান সামারাবীরা, মাইকেল ক্লার্ক, মহেন্দ্র সিং ধোনি (অধি.), সাকিব আল হাসান, মিচেল জনসন, স্টুয়ার্ট ব্রড, ডেল স্টেইন। দ্বাদশ—হরভজন সিং।
No comments