জনশক্তি রপ্তানি নতুন বাজার ও দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে নজর দিতে হবে
যে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সবচেয়ে বড় খাত প্রবাসী শ্রমশক্তি, সে দেশের জনশক্তি রপ্তানি প্রায় অর্ধেক হ্রাস পাওয়া একটা বড় দুঃসংবাদ। বাংলাদেশের জন্য সত্যি তা-ই ঘটছে: গত এক বছরে এ দেশের জনশক্তি রপ্তানি হ্রাস পেয়ে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন দেশে আমাদের যেসব নাগরিক কাজকর্ম করে স্বদেশে অর্থ পাঠাচ্ছিলেন, তাঁদের এক বিরাট অংশ চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে আসছেন। ফিরে আসা শ্রমিকদের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
জনশক্তি রপ্তানি হ্রাস পাওয়া এবং শ্রমিকদের চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে আসার নেতিবাচক প্রভাব বৈদেশিক মুদ্রার প্রবৃদ্ধিতে এখনো তেমন দৃশ্যমান হয়ে ওঠেনি বটে, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধি কমে যাবে। এটা তো পরিষ্কার যে রপ্তানি কমে না গেলে, শ্রমিকেরা ফিরে না এলে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবৃদ্ধি বর্তমানের চেয়ে অনেক বেশি হতো। অর্থাত্ প্রবৃদ্ধির হার না কমলেও ক্ষতি হচ্ছে এবং আরও ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ছে। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়েছে এবং হচ্ছে। সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, দুবাই, ওমান, কাতার প্রভৃতি দেশে বাংলাদেশের শ্রমিকেরা রয়েছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যায়; আর শ্রমিক রপ্তানি কমে যাওয়া ও শ্রমিকদের ফিরে আসার হার বেড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে এসব দেশেই সবচেয়ে বেশি। লক্ষ করার বিষয়, এসব দেশে আমাদের শ্রমিকেরা মূলত অদক্ষ; বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যের নির্মাণশিল্পসহ শ্রমঘন শিল্পগুলোতে সংকট সৃষ্টিই মূলত এসব ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সংকুচিত হওয়ার কারণ। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের করার তেমন কিছু নেই। কিন্তু আমরা যদি আমাদের শ্রমশক্তিকে অদক্ষ থেকে আধাদক্ষ পর্যায়ে উন্নীত করার চেষ্টা করি, তাহলে বহির্বিশ্বে আমাদের শ্রমবাজারের আরও অনেক সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। কারণ অনেক দেশেই আধাদক্ষ ও দক্ষ শ্রমিকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে; যেমন—হাসপাতাল-ক্লিনিকের নার্স, বিভিন্ন ধরনের টেকিনিশিয়ান, বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতির অপারেটর, পর্যটনশিল্পের মাঝারি পর্যায়ের কর্মী, গাড়িচালক ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে কারিগরি ও ভোকেশনাল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক জনশক্তি গড়ে তোলা সম্ভব, যারা বিদেশে গিয়ে অদক্ষ শ্রমিকদের চেয়ে অনেক বেশি আয় করতে পারবেন।
নিকট ও দূর-ভবিষ্যতের জন্য এই লক্ষ্যেই আমাদের পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। তবে এ মুহূর্তে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, সেটা মোকাবিলারও বাস্তব কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। যে মানের শ্রমশক্তি আছে, তাকেই সম্ভাব্য সব বাজারে রপ্তানির জন্য কূটনৈতিক ও ব্যবসায়িক উদ্যোগ বাড়াতে হবে। জনশক্তি রপ্তানি খাতের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা বন্ধ করতে হবে, কারণ এদের কারণে মালয়েশিয়াসহ কিছু দেশের বাজার আমাদের জন্য নষ্ট হয়েছে। দেশের ভাবমূর্তিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমাদের কূটনৈতিক মিশনগুলো এসব ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না কেন তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এর মধ্যে আরও সাতটি দেশে নতুন মিশন সৃষ্টির সিদ্ধান্ত হয়েছে, তারা যেন বিদেশে আমাদের নাগরিকদের জন্য নতুন নতুন শ্রমবাজার উন্মুক্ত করায় উদ্যোগী হন। মোটের ওপর, শ্রমশক্তি রপ্তানি খাতে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলা করতে সরকারকে আন্তরিক উদ্যোগ নিতে হবে। নইলে বিপুল জনসংখ্যার ভারে জর্জরিত, নানামুখী সমস্যায় আক্রান্ত এই দেশে আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, শান্তি ও অগ্রগতিসাধন সত্যি কঠিন হয়ে উঠবে।
জনশক্তি রপ্তানি হ্রাস পাওয়া এবং শ্রমিকদের চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে আসার নেতিবাচক প্রভাব বৈদেশিক মুদ্রার প্রবৃদ্ধিতে এখনো তেমন দৃশ্যমান হয়ে ওঠেনি বটে, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধি কমে যাবে। এটা তো পরিষ্কার যে রপ্তানি কমে না গেলে, শ্রমিকেরা ফিরে না এলে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবৃদ্ধি বর্তমানের চেয়ে অনেক বেশি হতো। অর্থাত্ প্রবৃদ্ধির হার না কমলেও ক্ষতি হচ্ছে এবং আরও ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ছে। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়েছে এবং হচ্ছে। সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, দুবাই, ওমান, কাতার প্রভৃতি দেশে বাংলাদেশের শ্রমিকেরা রয়েছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যায়; আর শ্রমিক রপ্তানি কমে যাওয়া ও শ্রমিকদের ফিরে আসার হার বেড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে এসব দেশেই সবচেয়ে বেশি। লক্ষ করার বিষয়, এসব দেশে আমাদের শ্রমিকেরা মূলত অদক্ষ; বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যের নির্মাণশিল্পসহ শ্রমঘন শিল্পগুলোতে সংকট সৃষ্টিই মূলত এসব ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সংকুচিত হওয়ার কারণ। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের করার তেমন কিছু নেই। কিন্তু আমরা যদি আমাদের শ্রমশক্তিকে অদক্ষ থেকে আধাদক্ষ পর্যায়ে উন্নীত করার চেষ্টা করি, তাহলে বহির্বিশ্বে আমাদের শ্রমবাজারের আরও অনেক সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। কারণ অনেক দেশেই আধাদক্ষ ও দক্ষ শ্রমিকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে; যেমন—হাসপাতাল-ক্লিনিকের নার্স, বিভিন্ন ধরনের টেকিনিশিয়ান, বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতির অপারেটর, পর্যটনশিল্পের মাঝারি পর্যায়ের কর্মী, গাড়িচালক ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে কারিগরি ও ভোকেশনাল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক জনশক্তি গড়ে তোলা সম্ভব, যারা বিদেশে গিয়ে অদক্ষ শ্রমিকদের চেয়ে অনেক বেশি আয় করতে পারবেন।
নিকট ও দূর-ভবিষ্যতের জন্য এই লক্ষ্যেই আমাদের পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। তবে এ মুহূর্তে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, সেটা মোকাবিলারও বাস্তব কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। যে মানের শ্রমশক্তি আছে, তাকেই সম্ভাব্য সব বাজারে রপ্তানির জন্য কূটনৈতিক ও ব্যবসায়িক উদ্যোগ বাড়াতে হবে। জনশক্তি রপ্তানি খাতের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা বন্ধ করতে হবে, কারণ এদের কারণে মালয়েশিয়াসহ কিছু দেশের বাজার আমাদের জন্য নষ্ট হয়েছে। দেশের ভাবমূর্তিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমাদের কূটনৈতিক মিশনগুলো এসব ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না কেন তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এর মধ্যে আরও সাতটি দেশে নতুন মিশন সৃষ্টির সিদ্ধান্ত হয়েছে, তারা যেন বিদেশে আমাদের নাগরিকদের জন্য নতুন নতুন শ্রমবাজার উন্মুক্ত করায় উদ্যোগী হন। মোটের ওপর, শ্রমশক্তি রপ্তানি খাতে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলা করতে সরকারকে আন্তরিক উদ্যোগ নিতে হবে। নইলে বিপুল জনসংখ্যার ভারে জর্জরিত, নানামুখী সমস্যায় আক্রান্ত এই দেশে আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, শান্তি ও অগ্রগতিসাধন সত্যি কঠিন হয়ে উঠবে।
No comments