উত্তরটা আপাকেই দিতে হবে by শামীমুল হক
দপ্তরগুলোর মধ্যে রয়েছে শেখ হাসিনা জাতীয় যুব কেন্দ্র। জামালপুরের মেলান্দহে রয়েছে শেখ হাসিনা পল্লী উন্নয়ন একাডেমি। রয়েছে নৌবাহিনী জাহাজ বিএনএস শেখ হাসিনা। ভবনের মধ্যে রয়েছে- ঢাকায় শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মানিকগঞ্জেও রয়েছে শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। জামালপুরে রয়েছে শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক পল্লী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- নেত্রকোনায় শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়। খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। কিশোরগঞ্জে শেখ হাসিনা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। শেখ হাসিনা কৃষি ইনস্টিটিউট, কৃষি অনুষদ, বশেমুরবিপ্রবি। হলের মধ্যে রয়েছে- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা হল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনা হল, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনা হল, বুটেক্সে রয়েছে শেখ হাসিনা হল, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে শেখ হাসিনা হল, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনা হল, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনা হল, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনা হল। এ ছাড়া কলেজগুলোর মধ্যে রয়েছে- হবিগঞ্জে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ, মেলান্দহ, জামালপুরে শেখ হাসিনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মাদারীপুরের ডাসারে সরকারি শেখ হাসিনা একাডেমি অ্যান্ড উইমেন্স কলেজ, গোপালগঞ্জে শেখ হাসিনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, ঝিনাইদহে শেখ হাসিনা পদ্মপুকুর ডিগ্রি কলেজ, পিরোজপুরে শেখ হাসিনা একাডেমি, পাবনার আতাইকুলায় শেখ হাসিনা উচ্চবিদ্যালয়। ইনস্টিটিউটগুলোর মধ্যে রয়েছে- জামালপুরের ইসলামপুরে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল টেকনোলজি, ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট। সড়কের মধ্যে রয়েছে- মাদারীপুর-শরীয়তপুর শেখ হাসিনা মহাসড়ক, চট্টগ্রামে শেখ হাসিনা রোড, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শেখ হাসিনা মহাসড়ক। সেতুর মধ্যে রয়েছে গংগাচড়া শেখ হাসিনা সেতু। সামরিক স্থাপনার মধ্যে রয়েছে পটুয়াখালীতে শেখ হাসিনা সেনানিবাস, কক্সবাজারে বানৌজা শেখ হাসিনা।
আচ্ছা, হাসু আপা, এত নামের কী দরকার। যেখানে প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশের ইতিহাসে নাম লেখিয়েছেন। দেশের জন্য কাজ করেছেন। কিন্তু বারবার প্রধানমন্ত্রী হতে হবে কেন? এ প্রশ্নটা করতাম না। কারণ আপনি নিজেই নিজের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। শতাধিক দিন হরতাল করে যে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি দেশে আনলেন সেটা কলমের এক খোঁচায় বাদ দিয়ে দিলেন। আবার এতে ব্যবহার করলেন আদালতকে। আপনার এ উদ্দেশ্য ছিল একেবারে নিজের স্বার্থে। যার পরিণতিতে আপনি হয়ে উঠেছিলেন স্বৈরশাসক। মনে পড়ে আপা, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিরোধী দলকে নিয়ে আপনি বৈঠকে বসেছিলেন। সেই বৈঠকে বলেছিলেন- আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে, আমাকে একবার বিশ্বাস করে দেখুন। আপনার এ কথায় বিশ্বাস করে বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে গেল। নির্বাচনী প্রচারণাকালীন সময়েই বুঝা গেছে কেমন নির্বাচন হবে। বিরোধী দলের প্রার্থীদের কোনো পোস্টার লাগাতে দেয়া হয়নি। কেউ সাহস করে প্রচারণায় বেরুলে তার ওপর হামলা হয়েছে। মামলা হয়েছে। কেউ কোনো দিন চিন্তা করেনি আগের রাতেই ব্যালট বাক্স পূরণ হয়ে যাবে। দিনের বেলা শুধু লোক দেখানো নির্বাচন। যদিও দিনের বেলায় ৫ শতাংশের বেশি মানুষ ভোট দিতে যায়নি। রাতের ভোটে আপনি পাস। এরপর জোর গলায় বলে বেড়িয়েছেন জনগণ আওয়ামী লীগকে চায়। এ কারণেই তারা আওয়ামী লীগকে বারবার ভোট দেয়। আপা আপাগো, দেশের মানুষ যা দেখে তার উল্টোটা আপনি বলে বেড়ান সভা-সমাবেশে। তা শুনে মানুষ হাসে। ইদানীং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে আপনার একটি সাক্ষাৎকার। যেখানে আপনাকে বলতে শোনা যায়- আমি প্রধানমন্ত্রী হলে সপ্তাহে একদিন টিভিতে দেখতে পাবেন। আপনার এ কথা যে কতোটুকু মেনেছেন তা জাতি দেখেছে। এভাবেই আপনি নিজের দেয়া কথা বেমালুম ভুলে যান। তবে কেন? আপা, এর উত্তরটা আপনার কাছে চাই। দয়া করে বলবেন কি?
No comments