২১ আগস্ট ও শেখ হাসিনা by অধ্যাপক ড. নাসিম বানু
স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি নিষ্ঠুরতম এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতি
বর্হিভূত বর্বরোচিত ঘটনা হলো— ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা বর্তমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তত্কালীন
বিরোধীদলীয় নেতা এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ওপরে গ্রেনেড হামলা।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা করার অন্যতম প্রধান
কারণ ছিল আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা এবং স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে
পুনর্বাসন করা। বাংলাদেশের তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে
১৯ বার হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। কারণ স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির কাছে
অন্যতম প্রধান বাধার নাম হলেন শেখ হাসিনা। কখনো তার নিজ বাসভবনে, কখনো
জনসভায়, আবার কখনো তার গাড়িবহরে হামলা করা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম কালো অধ্যায়ের সূচনা হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশের
স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে পুনরায় সক্রিয় হয়ে
ওঠে আর এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয় এবং ২০০৪ সালের ২১
শে আগস্ট বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে আর্জেস
গ্রেনেড বিস্ফোরণ করে তাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। ২০০৪ সালের ২১ শে
আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সন্ত্রাসবিরোধী
শোভাযাত্রা করার কথা ছিল। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে একটি ট্রাক এনে মঞ্চ তৈরি
করা হয়েছিল। শোভাযাত্রা শুরু হওয়ার আগে সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিচ্ছিলেন
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ভাষণ শেষে তিনি “জয় বাংলা” “জয়
বঙ্গবন্ধু” বলার সঙ্গে সঙ্গে পর পর দুটি আর্জেস গ্রেনেড বিস্ফোরণ হয়। এরপর
সামান্য বিরতি দিয়ে একের পর এক গ্রেনেড বিস্ফোরণ শুরু হয়, শুরু হয় গুলির
আওয়াজ। হামলায় আহত নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগের অন্য নেতাকর্মীরা সাহায্য
করতে গেলে পুলিশ তাদের ওপরে টিয়ারসেল ছুড়ে উদ্ধার কাজে সাহায্য না করে
ব্যাহত করার চেষ্টা করে। শুধু তাই নয় পুলিশ সেই সময় মামলার আলামত সংরক্ষণ
না করে তা নষ্ট এবং বিলীন করে দিতে উদ্যোগী হয় বলেও অভিযোগ উঠে আসে। মঞ্চে
উপস্থিত নেতাকর্মীরা মানববর্ম তৈরি করে সেদিন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে
গ্রেনেড হামলার হাত থেকে রক্ষা করেন। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যায় আওয়ামী
লীগ সভানেত্রী। অপূরণীয় ক্ষতি হয় ২১ শে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী
লীগের। দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের
স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন।
এদের মধ্যে আইভি রহমান ৫৮ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জালড়ে ২৪ আগস্ট মারা যান। এবং প্রায় দেড় বছর পরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জালড়ে ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের মৃত্যু হয়। প্রায় কয়েকশ জন নেতাকর্মী আহত হন যারা হয় শরীরে স্প্লিন্টার বহন করে যন্ত্রণায় মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছে অথবা পঙ্গু জীবনযাপন করছে। যার ফলশ্রুতিতে কয়েকশ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রেনেড হামলার বিচারক তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ২১ শে আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার যে ষড়যন্ত্র তার মূল পরিকল্পনা হয়েছিল হাওয়া ভবনে। ইনডেমনিটি বিলের মাধ্যমে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র দেশে শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার ২৩ বছর দুই মাস পর জাতি, জাতির পিতা হত্যার দায় থেকে কলঙ্কমুক্ত হয় বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ জাতির পিতাকে হত্যা করার পর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে না গিয়ে বহমান থাকে। পরবর্তীতে ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট শনিবার আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার হীন প্রচেষ্টা চালানো হয়। শেখ হাসিনাকে হালকা নাসতা করানো হবে: এই উদ্ধৃতি দিয়ে দেশীয় জঙ্গি সংগঠনের কতিপয় সদস্য আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সহায়তায় হামলা করে। তত্কালীন রাষ্ট্রযন্ত্রীয় সহায়তায় প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটনাস্থল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ-এর সম্মুখে যুদ্ধে ব্যবহূত স্পেশালাইজড মরণাস্ত্র, আর্জেন্ট গ্রেনেড বিস্ফোরণের মাধ্যমে ঘটনা ঘটানো হয়। প্রশ্ন ওঠে কেন এই মরণাস্ত্রের ব্যবহার? রাজনীতি মানেই কি বিরোধী দলের ওপর পৈশাচিক আক্রমণ? শুধু আক্রমণই নয় দলকে নেতৃত্বশূন্য করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা। রাজনীতিতে অবশ্যম্ভাবীভাবে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের মধ্যে শত বিরোধ থাকবে। তাই বলে বিরোধী দলকে নেতৃত্বশূন্য করার প্রয়াস চালানো হবে এটা কাম্য নয়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ক্ষমতায় যে দলই থাকবে, বিরোধী দলের প্রতি তাদের উদার নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকবে। বিরোধীদলীয় নেতাদের হত্যা করে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক ফায়দা অর্জন করা মোটেও গণতান্ত্রিক চিন্তার বহিঃপ্রকাশ নয়।
আমাদের জাতির পিতার কন্যা বেঁচে গেলেন, বেঁচে গেলেন আমাদের জন্য, বাঙালি জাতিকে নেতৃত্ব দেবার জন্য, মুক্তি যুদ্ধের চেতনাকে বাস্তবায়ন করার জন্য, তারুণ্যের বাংলাদেশ গড়ার জন্য, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য।
>>>লেখক : ডিন, ফ্যাকাল্টি অব স্যোশাল সায়েন্স, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
এদের মধ্যে আইভি রহমান ৫৮ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জালড়ে ২৪ আগস্ট মারা যান। এবং প্রায় দেড় বছর পরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জালড়ে ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের মৃত্যু হয়। প্রায় কয়েকশ জন নেতাকর্মী আহত হন যারা হয় শরীরে স্প্লিন্টার বহন করে যন্ত্রণায় মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছে অথবা পঙ্গু জীবনযাপন করছে। যার ফলশ্রুতিতে কয়েকশ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রেনেড হামলার বিচারক তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ২১ শে আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার যে ষড়যন্ত্র তার মূল পরিকল্পনা হয়েছিল হাওয়া ভবনে। ইনডেমনিটি বিলের মাধ্যমে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র দেশে শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার ২৩ বছর দুই মাস পর জাতি, জাতির পিতা হত্যার দায় থেকে কলঙ্কমুক্ত হয় বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ জাতির পিতাকে হত্যা করার পর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে না গিয়ে বহমান থাকে। পরবর্তীতে ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট শনিবার আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার হীন প্রচেষ্টা চালানো হয়। শেখ হাসিনাকে হালকা নাসতা করানো হবে: এই উদ্ধৃতি দিয়ে দেশীয় জঙ্গি সংগঠনের কতিপয় সদস্য আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সহায়তায় হামলা করে। তত্কালীন রাষ্ট্রযন্ত্রীয় সহায়তায় প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটনাস্থল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ-এর সম্মুখে যুদ্ধে ব্যবহূত স্পেশালাইজড মরণাস্ত্র, আর্জেন্ট গ্রেনেড বিস্ফোরণের মাধ্যমে ঘটনা ঘটানো হয়। প্রশ্ন ওঠে কেন এই মরণাস্ত্রের ব্যবহার? রাজনীতি মানেই কি বিরোধী দলের ওপর পৈশাচিক আক্রমণ? শুধু আক্রমণই নয় দলকে নেতৃত্বশূন্য করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা। রাজনীতিতে অবশ্যম্ভাবীভাবে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের মধ্যে শত বিরোধ থাকবে। তাই বলে বিরোধী দলকে নেতৃত্বশূন্য করার প্রয়াস চালানো হবে এটা কাম্য নয়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ক্ষমতায় যে দলই থাকবে, বিরোধী দলের প্রতি তাদের উদার নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকবে। বিরোধীদলীয় নেতাদের হত্যা করে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক ফায়দা অর্জন করা মোটেও গণতান্ত্রিক চিন্তার বহিঃপ্রকাশ নয়।
আমাদের জাতির পিতার কন্যা বেঁচে গেলেন, বেঁচে গেলেন আমাদের জন্য, বাঙালি জাতিকে নেতৃত্ব দেবার জন্য, মুক্তি যুদ্ধের চেতনাকে বাস্তবায়ন করার জন্য, তারুণ্যের বাংলাদেশ গড়ার জন্য, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য।
>>>লেখক : ডিন, ফ্যাকাল্টি অব স্যোশাল সায়েন্স, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
No comments