ইরানকে ৪০ কোটি ডলার মুক্তিপণ ওবামা প্রশাসনের!
যুক্তরাষ্ট্র গত জানুয়ারি মাসে অতি গোপনে ইরানে বিমানে করে ৪০ কোটি ডলার পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে। ইরানে জিম্মি চার আমেরিকানের মুক্তির আগে এ অর্থ পাঠানো হয়। সমালোচকরা বলছেন, মুক্তিপণ হিসেবে ইরানকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এ অর্থ দিয়েছে। তবে ওবামা প্রশাসন তা অস্বীকার করেছে। মঙ্গলবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ওবামা প্রশাসন বলছে, ১৯৭৯ সালে ইরানের বিপ্লবের আগের একটি অস্ত্র চুক্তি নিয়ে সমঝোতা বাবদ ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের ১৭০ কোটি ডলার দেয়ার কথা ছিল। ৪০ কোটি ডলার সেই অর্থের অংশ। ইরানে জিম্মি চার আমেরিকানের মুক্তির জন্য ওই অর্থ দেয়ার কথা অস্বীকার করে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, আমরা স্পষ্ট করেই বলেছি যে চার আমেরিকানের দেশে ফেরার আলোচনার সঙ্গে (অস্ত্র চুক্তি নিয়ে) সমঝোতার আলোচনার কোনো সম্পর্ক ছিল না। দুটি আলোচনা শুধু পৃথকই ছিল না, আলোচনাকারীও ছিল ভিন্ন। তিনি বলেন, ইরানের বিপ্লবোত্তর অস্ত্র চুক্তি নিয়ে হেগে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই আলোচনা চলছিল এবং এতে বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। ওয়াল স্ট্রিট জানায়, নেদারল্যান্ডস ও সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এই অর্থ কেনা হয় এবং কাঠের বাক্সে ভরে ইউরো, সুইস ফ্রাঁ এবং অন্যান্য মুদ্রা বেনামি একটি কার্গো বিমানে তেহরান পাঠানো হয়। ১৯৭৯ সালে ইরানের বিপ্লবের আগে শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভীর সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইলিনয়েসের সিনেটর মার্ক কির্ক বলেছেন, ইরানকে দেয়া ৪০ কোটি ডলার ছিল মুক্তিপণ। অপহরণকারীদের মুক্তিপণ দিয়ে আমেরিকানদের উদ্ধার করায় ঝুঁকি আরও বেড়েছে বলে মত দেন কির্ক।
পরমাণু কর্মসূচি ফের শুরু করার হুমকি গত বছর ইরানের সঙ্গে ছয় জাতিগোষ্ঠীর সই হওয়া পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়ন করতে আমেরিকা অব্যাহতভাবে অবহেলা করলে তার দেশ পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি আবারও চালু করতে পারে বলে জানিয়েছেন ইরান সংসদ পরিচালক বোর্ডের মুখপাত্র বেহরুজ নেমাতি। মঙ্গলবার ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা পার্সটুডেকে তিনি বলেন, পরমাণু সমঝোতা বা জেসিপিওএ’র প্রতিশ্রুতি পালন করতে আমেরিকা ব্যর্থ হলে তা হবে সমঝোতাবিরোধী কর্মকাণ্ড। তিনি বলেন, জেসিপিওএ একটি ব্যাপক ভিত্তিক সমঝোতা। আমেরিকা যদি এটি পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন না করে তাহলে আমরাও অনুরূপ ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করেন যে, তারা তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করেছেন। তবে তাদের কর্মকাণ্ডে সেটি সমর্থন করে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। ইরানের এই আইনপ্রণেতা বলেন, জেসিপিওএ বাস্তবায়নের সময় প্রায় ছয় মাস অতিক্রম করলেও ইরানের সঙ্গে ছোট ব্যাংকগুলোর সীমিত লেনদেন ব্যতীত বড় বড় ব্যাংকগুলো পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়ন করা থেকে বিরত রয়েছে। নেমাতি বলেন, ইরান আশা করে যে, ছয় জাতিগোষ্ঠীর দেশগুলো পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়ন করবে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি সোমবার বলেছেন, ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে তার দেশের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা প্রমাণ করে যে শত্র“দের বিশ্বাস করা যায় না। তিনি বলেন, পরমাণু চুক্তির ফলে ইরানের সাধারণ জনগণের কোনো লাভ হয়নি।
No comments