খুনিদের মৃত্যুদণ্ডের বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত তিন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে গতকাল মঙ্গলবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। তামিল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ২৩ বছর আগে রাজীব গান্ধী নিহত হন। প্রধান বিচারপতি পি সদাশিবমের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্ট ওই তিন খুনিকে মৃত্যুদণ্ড মওকুপের পক্ষে যুক্তি দেন, তাঁদের প্রাণভিক্ষার আবেদনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে ভারতের একাধিক রাষ্ট্রপতি ১১ বছর সময় নিয়েছিলেন।
রায় ঘোষণা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রাণভিক্ষার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ঘোষণার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করছি।’ ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গত মাসে এক রায়ের মাধ্যমে ১৫ জন অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই দেন। এতে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের মতো কঠোর শাস্তি নিয়ন্ত্রণের দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়। রাজীব গান্ধীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত তিন ব্যক্তি হলেন মুরুগান, সান্থান ও পেরারিভালান। তাঁরা তিনজনই শ্রীলঙ্কাভিত্তিক লিবারেশন টাইগার অব তামিল ইলমের (এলটিটিই) সদস্য। এই তিনজন ১৯৯১ সালের ২১ মে একজন নারী আত্মঘাতী হামলাকারীর মাধ্যমে রাজীবকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুতে এক নির্বাচনী জনসভায় রাজীব ওই হামলার শিকার হয়ে নিহত হন।
১৯৮৭ সালে শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় শান্তিরক্ষী পাঠানোর ঘটনায় রাজীবের ওপর অসন্তুষ্ট হয়ে তামিল বিদ্রোহীরা ওই হামলা চালায়। অবশ্য ওই ঘটনার জন্য ২০০৬ সালে তারা ‘দুঃখ প্রকাশ’ করে। শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী ২০০৯ সালে তামিল বিদ্রোহীদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৯৮৪ সালের অক্টোবরে খুন হওয়ার পর তাঁর ছেলে রাজীব দেশটির সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি পাঁচ বছর পর নির্বাচনে পরাজিত হন। তাঁর স্ত্রী সোনিয়া গান্ধী বর্তমানে দেশটির ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর রাজীব-সোনিয়ার ছেলে রাহুল গান্ধীও কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তাঁকে সামনে রেখেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দলটি প্রচারণা চালাচ্ছে। এএফপি ও বিবিসি।
No comments