ভালবাসার এই দিনে by তৌফিক অপু

চিরচেনা এ হৃদয় জাগানিয়া গান আজও যে কারও মনকে দোলা দিয়ে যায়। ভালবাসার শব্দগুলোই যেন এমন। আপন গতিতে সে এঁকে চলে জীবনরেখা। একটা সময় ছিল যখন ভালবাসা প্রকাশে যেমন ইতস্ততা ছিল ঠিক তেমনি সামাজিকভাবে ব্যাপারটি এড়িয়ে চলাই ছিল স্বাভাবিক।
কিন্তু বর্তমানে মনের কথা বলতে এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা দ্বিধাবোধ করে না। ব্যাপারটা এমন, অন্য সব কিছুকে পিছু হটিয়ে ভালবাসার পেছনে ছুটতে প্রস্তুত। আর এ ব্যকুলতা থেকেই বোধ হয় ভালবাসা দিবসের উৎপত্তি। যা আমাদের দেশে রীতিমতো উৎসবে পরিণত হয়েছে। ভালবাসা দিবস যদিও আমাদের নিজস্ব কোন উৎসব নয়, তারপরেও আড়ম্বরপূর্ণভাবেই পালিত হয় দিবসটি। ভালবাসার নির্দিষ্ট কোন সীমা-পরিসীমা নেই। নেই কোন বয়সের ভেদাভেদ। তাছাড়া ভালবাসা বলতে শুধু প্রেমিক যুগলের ভালবাসাকেই বোঝানো হয় তা কিন্তু নয়। বাবা-মায়ের ভালোবাসা সন্তানের প্রতি, বড়দের ভালবাসা ছোটদের প্রতি, স্বামী-স্ত্রীর ভালবাসা সবই এর আওতাভূক্ত। তবে সবকিছু ছাপিয়ে প্রেমিক যুগলের ভালবাসাই যেন ঠাঁই পায় ডায়েরির পাতায়। তরুণ-তরুণীর ভালবাসার গল্পগাঁথাই যেন ইতিহাস হয়ে ধরা দেয়। সেই প্রাচীন যুগ হতে আজ পর্যন্ত ভালবাসার যে আবেদন তা অপরিবর্তিত। হয়তো কালের প্রবাহমানতায় পাল্টেছে এর ধরন। যারা ভালবাসেন, ভালবাসা তাদের সর্বোক্ষণের সঙ্গী। চিন্তা ও মননে সবক্ষেত্রেই এক ধরনের মোহ তাদের আচ্ছন্ন করে রাখে। ভালবাসা তার নিজস্ব গতিতে চলে। কখন যে কার উপর ভর করে বসে তার ঠিক নেই। তারপরেও এ আসক্তি আমাদের সবার কাছেই প্রিয়। ভালবাসার এ উন্মাদনায় পিছিয়ে নেই ফ্যাশন হাউসগুলো। তরুণ-তরুণীদের কথা মাথায় রেখে ফ্যাশন হাউসগুলো ভালবাসা দিবসে বাজারে এনেছে নজড়কাড়া সব পোশাক। কারণ ভালবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে উপহার আদান প্রদান এক ধরনের রীতিতে পরিনত হয়েছে। সে সুবাদেই ফ্যাশন হাউসগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। পছন্দসই পোশাকটি পরে এদিনে একসঙ্গে ঘুরতে বের হবার আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হতেই এ প্রয়াস। এ প্রসঙ্গে ফ্যাশন ডিজাইনার শিরিন জানান, ভালবাসা দিবসের পোশাকে লাল রঙ কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কারন লাল গোলাপের স্নিগ্ধতা ভালবাসা দিবসের আবহ কে বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। আর এ দিকটাকে মাথায় রেখে পোশাকে লাল রঙকে প্রাধান্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ভালবাসা দিবসের প্রাধান্যতা। আবহাওয়ার বিষয়টিকেও মাথায় রাখা হয়েছে। ঋতু বৈচিত্রে এখন বসন্তকাল। বসন্তের পোশাক এবং ভালবাসার পোশাক শোভা পাচ্ছে পাশাপাশি। ভালবাসা দিবসের পোশাকে প্রাধান্য পেয়েছে আবহাওয়া। যে কারনে কাপড় হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছে কটন, এন্ডি কটন, জয়সিল্ক প্রাধান্য পেয়েছে। শাড়ির সঙ্গে কোয়র্টার এবং ফুলসিøভ ব্লাউজ সংযুক্ত হয়েছে। আবার ম্যাচ করা যুগল ড্রেসও রয়েছে। অর্থাৎ একই ডিজাইনে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের পোশাক তৈরি হয়েছে। যা ভালবাসা দিবসে অন্যরকম আবহ সৃষ্টি করেছে। ভালবাসা দিবসের পোশাকগুলোর মধ্যে শাড়ি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, সালোয়ার কামিজ, শর্ট পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, টপস্ ইত্যাদি। পোশাকের পাশাপাশি ম্যাচ করা বিভিন্ন অর্নমেন্টসও পাওয়া যাবে আউটলেটগুলোতে। ভ্যালেন্টাইনের শাড়ি পাওয়া যাবে ৯৫০ টাকা থেকে ২৫৫০ টাকা। সালোয়ার কামিজের মূল্য পড়বে ৮৫০ টাকা থেকে ৩২০০ টাকা। ফতুয়া, শর্ট পাঞ্জাবির মূল্য ৬৫০ টাকা থেকে ১৮৫০ টাকা। টি-শার্ট ২০০ থেকে ৬৫০ টাকা। এছাড়াও ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালবাসা দিবসে বিভিন্ন গিফট আইটেমেরও চাহিদা অনেক। এর মধ্যে ফূল, শো পিছ, মানিব্যাগ, ব্রেসলেট, ঘড়ি, কার্ড অন্যতম। জীবনের প্রতিটি দিন ভালবাসার দিন হলেও ১৪ম ফ্রেব্রুয়ারি ভালবাসা দিবসে এর তৎপরতা যেন আরও বেড়ে যায়। ভালবাসার নতুন মাত্রা যোগ করতে যুগলরা নতুন রূপে শপথ নিবে। সিদ্ধান্ত নেবে অন্তহীন ভালবাসার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌছানোর।

ছবি : আরিফ আহমেদ
মডেল : অপূর্ব ও তিন্নি

No comments

Powered by Blogger.