বিদ্যমান পরিসংখ্যান-ব্যবস্থা দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি আটকে রেখেছে -গোলটেবিল বৈঠকে বক্তাদের অভিমত
উন্নতি আটকে রেখেছে দেশের পরিসংখ্যান-ব্যবস্থা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) থেকে সঠিক ও যথাযথ কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। আর তথ্যের অভাবে তেমন কোনো গবেষণাও হয় না দেশে। স্বাভাবিক কারণেই গবেষণা না থাকায় নীতি প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়ন করা দুঃসাধ্য। বিদ্যমান পরিসংখ্যান-ব্যবস্থা এতই খারাপ যে, প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথে একে ‘সমস্যা’ না বলে ‘সংকট’ বলে অভিহিত করতে হবে। জাতীয় প্রয়োজনেই শক্তিশালী করতে হবে বিবিএসকে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে ‘দরিদ্রবান্ধব প্রবৃদ্ধি অর্জন: গবেষণা থেকে নীতিনির্ধারণ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস), ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপ (ইআরজি) এবং ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টার (আইজিসি) যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন। আর বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বৈঠকে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান ও বিআইডিএসের মহাপরিচালক মুস্তফা কে মুজেরী।
আলোচনায় অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম, বিআইডিএসের গবেষক রুশিদান ইসলাম প্রমুখ। এ ছাড়া ইয়েল, কলাম্বিয়া, ব্রাউন, বোস্টন, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের আটজন অর্থনীতিবিদও আলোচনায় অংশ নেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, পরিসংখ্যান-ব্যবস্থার দুর্বলতা দেশের উন্নতিকে অনেকখানিই আটকে রেখেছে। এটি এক মারাত্মক সংকট যে, কোনো কিছুরই যথাযথ তথ্য পাওয়া যায় না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নতির জন্য গবেষণার দরকার। কারণ, গবেষণার ফল নিয়েই নীতি প্রণয়ন করা হয়। বাংলাদেশের জন্মের পেছনেও গবেষণার অবদান রয়েছে বলে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারও গবেষণাচালিত সরকার।
আবদুল মুহিত বলেন, অনুদান নেওয়ার মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। এখন বিদেশি অনুদান পাওয়া যায় নামমাত্র। অথচ কর আদায় সামান্য বাড়লেই অনুদানের দরকার পড়বে না। রপ্তানিপণ্যের বহুমুখিতা শুধু তৈরি পোশাক খাতেই নয়, অন্য খাতেও দরকার বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী।
মসিউর রহমান বলেন, সঠিক নীতিনির্ধারণ করতে না পারা বড় সমস্যা। তবে এ-ও দেখতে হবে, রাজনৈতিক কারণে কীভাবে এই নীতিনির্ধারণ প্রভাবিত হয়। নীতিনির্ধারণের আগে গবেষণার দরকার বলে মনে করেন তিনি।
বিদ্যমান পরিসংখ্যান-ব্যবস্থা শুধু সমস্যা নয়, বরং একে অন্যতম সংকট বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা। আর গবেষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনুদানের অর্থে গবেষণা হলে তা হবে ওই দাতা সংস্থার চাওয়া মতোই। জাতীয় প্রয়োজনেই বিবিএসকে শক্তিশালী এবং এর মহাপরিচালক পদটিকে যুগ্ম সচিব মর্যাদার না রেখে সচিব মর্যাদায় উন্নীত করা উচিত বলে মনে করেন মসিউর রহমান।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, মাঝারি আয়ের দেশে পরিণত হতে হলে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা আরও ব্যাপক ও নিবিড়ভাবে গবেষণাভিত্তিক হওয়া উচিত। আর অর্থনীতিবিদদের উচিত নীতিনির্ধারণে মতামত ব্যক্ত করা। এ থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখলে তার ফল হবে মারাত্মক। দারিদ্র্য দূরীকরণ সহায়ক প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা বিবেচনায় নিয়ে গবেষণার জন্য কিছু ভালো বিষয়বস্তু ঠিক করার পরামর্শ দেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের শিল্প (এসএমই) এবং কৃষিতে। এর ফল পাওয়া যাবে ভবিষ্যতে।
আইসিসিবির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, নীতিনির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় গবেষণা নেই। বিবিএস অনাধুনিক এবং বিআইডিএসকেও যথাযথ ব্যবহার করা হচ্ছে না। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম বলেন, অগ্রাধিকার খাত হিসেবে চিহ্নিত জাহাজ নির্মাণ শিল্প যে এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, তা কোনো গবেষণায় উঠে আসেনি। তা একান্তই উদ্যোক্তাদের চেষ্টার ফল।
বৈঠক শেষে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ আজ আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে। দুর্যোগ, মন্দাসহ এত কিছুর পরও বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখছে কীভাবে গবেষকদের কাছে তা বিস্ময়ের ব্যাপার। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ ক্ষতির শিকার। স্বল্প মেয়াদে তা মোকাবিলায় ভালো করছে বাংলাদেশ। তবে সাহায্যের সুযোগ নিতে চাইলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। তবে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্তদের ওপর কী প্রভাব পড়বে, তার কোনো গবেষণা নেই।
বিবিএসের বর্তমান নাজুক অবস্থা কোনো আধুনিক রাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে না বলে মনে করেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে ‘দরিদ্রবান্ধব প্রবৃদ্ধি অর্জন: গবেষণা থেকে নীতিনির্ধারণ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস), ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপ (ইআরজি) এবং ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টার (আইজিসি) যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন। আর বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বৈঠকে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান ও বিআইডিএসের মহাপরিচালক মুস্তফা কে মুজেরী।
আলোচনায় অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম, বিআইডিএসের গবেষক রুশিদান ইসলাম প্রমুখ। এ ছাড়া ইয়েল, কলাম্বিয়া, ব্রাউন, বোস্টন, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের আটজন অর্থনীতিবিদও আলোচনায় অংশ নেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, পরিসংখ্যান-ব্যবস্থার দুর্বলতা দেশের উন্নতিকে অনেকখানিই আটকে রেখেছে। এটি এক মারাত্মক সংকট যে, কোনো কিছুরই যথাযথ তথ্য পাওয়া যায় না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নতির জন্য গবেষণার দরকার। কারণ, গবেষণার ফল নিয়েই নীতি প্রণয়ন করা হয়। বাংলাদেশের জন্মের পেছনেও গবেষণার অবদান রয়েছে বলে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারও গবেষণাচালিত সরকার।
আবদুল মুহিত বলেন, অনুদান নেওয়ার মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। এখন বিদেশি অনুদান পাওয়া যায় নামমাত্র। অথচ কর আদায় সামান্য বাড়লেই অনুদানের দরকার পড়বে না। রপ্তানিপণ্যের বহুমুখিতা শুধু তৈরি পোশাক খাতেই নয়, অন্য খাতেও দরকার বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী।
মসিউর রহমান বলেন, সঠিক নীতিনির্ধারণ করতে না পারা বড় সমস্যা। তবে এ-ও দেখতে হবে, রাজনৈতিক কারণে কীভাবে এই নীতিনির্ধারণ প্রভাবিত হয়। নীতিনির্ধারণের আগে গবেষণার দরকার বলে মনে করেন তিনি।
বিদ্যমান পরিসংখ্যান-ব্যবস্থা শুধু সমস্যা নয়, বরং একে অন্যতম সংকট বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা। আর গবেষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনুদানের অর্থে গবেষণা হলে তা হবে ওই দাতা সংস্থার চাওয়া মতোই। জাতীয় প্রয়োজনেই বিবিএসকে শক্তিশালী এবং এর মহাপরিচালক পদটিকে যুগ্ম সচিব মর্যাদার না রেখে সচিব মর্যাদায় উন্নীত করা উচিত বলে মনে করেন মসিউর রহমান।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, মাঝারি আয়ের দেশে পরিণত হতে হলে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা আরও ব্যাপক ও নিবিড়ভাবে গবেষণাভিত্তিক হওয়া উচিত। আর অর্থনীতিবিদদের উচিত নীতিনির্ধারণে মতামত ব্যক্ত করা। এ থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখলে তার ফল হবে মারাত্মক। দারিদ্র্য দূরীকরণ সহায়ক প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা বিবেচনায় নিয়ে গবেষণার জন্য কিছু ভালো বিষয়বস্তু ঠিক করার পরামর্শ দেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের শিল্প (এসএমই) এবং কৃষিতে। এর ফল পাওয়া যাবে ভবিষ্যতে।
আইসিসিবির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, নীতিনির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় গবেষণা নেই। বিবিএস অনাধুনিক এবং বিআইডিএসকেও যথাযথ ব্যবহার করা হচ্ছে না। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম বলেন, অগ্রাধিকার খাত হিসেবে চিহ্নিত জাহাজ নির্মাণ শিল্প যে এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, তা কোনো গবেষণায় উঠে আসেনি। তা একান্তই উদ্যোক্তাদের চেষ্টার ফল।
বৈঠক শেষে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ আজ আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে। দুর্যোগ, মন্দাসহ এত কিছুর পরও বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখছে কীভাবে গবেষকদের কাছে তা বিস্ময়ের ব্যাপার। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ ক্ষতির শিকার। স্বল্প মেয়াদে তা মোকাবিলায় ভালো করছে বাংলাদেশ। তবে সাহায্যের সুযোগ নিতে চাইলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। তবে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্তদের ওপর কী প্রভাব পড়বে, তার কোনো গবেষণা নেই।
বিবিএসের বর্তমান নাজুক অবস্থা কোনো আধুনিক রাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে না বলে মনে করেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
No comments