যন্ত্রণার আইবিএস : কিভাবে চিনবেন, কী করবেন? by ডা: মোঃ হুমায়ুন কবীর
আমাশয়ের
সমস্যার মধ্যে একটি হলো আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম। এটি অন্ত্র ও
পরিপাকতন্ত্রের একটি জটিল সমস্যা। এটি একটি যন্ত্রণাদায়ক রোগ। হঠাৎ পেটে
কামড় তারপর সাথে সাথে মলত্যাগ করা জরুরি। এ রোগে পেট অধিকতর স্পর্শকাতর হয়
বলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্রিয়াশীল থাকে। পাশ্চাত্য দেশে প্রতি ১০ জনে
একজন অন্তত তার জীবদ্দশায় এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। সমীক্ষায় দেখা যায়,
একটি দেশের লোকসংখ্যার ২০ শতাংশ আইবিএসের লক্ষণ বহন করে এবং ১০ শতাংশ
ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়। পুরুষদের চেয়ে নারীরা দুই থেকে তিন গুণ বেশি এ রোগে
আক্রান্ত হয়ে থাকে। অন্ত্রের ক্যান্সারের সাথে এ রোগের মিল পাওয়া যায়। তবে
আইবিএস থেকে ক্যান্সারের সৃষ্টি হয় না।
আইবিএস কী
সিনড্রোম শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো একটি রোগের বিভিন্ন উপসর্গ। তাই আইবিএসকে পেটের বিভিন্ন উপসর্গের সংজ্ঞা হিসেবে ধরা হয়। মানবদেহে অন্ত্র ও খাদ্যনালী মাংসপেশি দ্বারা তৈরি টিউব বা নল। এই মাংসপেশির যখন অতিরিক্ত সংকোচন ও প্রসারণ হয় তখন অন্ত্রের মধ্যে থাকা ও মলের গতি ব্যাহত হয়। এরপর পালাক্রমে শুরু হয় কোষ্টকাঠিন্য বা ডায়রিয়া।
আইবিএসের কারণ কী
আইবিএসের প্রকৃত কারণ এ পর্যন্ত জানা যায়নি। অনেক কারণে এ রোগ হয় বলে চিকিৎসার আন্তর্নিহিত কারণ উদঘাটন সম্ভব হয়নি। তবে বিজ্ঞানীরা কারণও প্রভাবক হিসেবে অনেক বিষয়কে চিহ্নিত করেছেন। সেগুলোকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা :
শারীরবৃত্তীয় কারণ
এর মধ্যে অন্ত্রনালীর বেশি স্পর্শকাতরতা, অন্ত্রনালীর অস্বাভাবিক নাড়াচাড়া, এলার্জি ও ইনফেকশন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ গম ও দুধ জাতীয় খাবার সহ্যক্ষমতা কম অর্থাৎ এ জাতীয় খাবার খাওয়ার পরই আমাশয়ের সমস্যা তথা আইবিএস শুরু হয়।
মনোসামাজিক কারণ
এ সমস্যায় প্রথমেই আছে হতাশ ও দুশ্চিন্তা ইত্যাদি। এ ছাড়া অধিক মানসিক চাপ ও আইবিএসকে প্রভাবিত করে থাকে। আইবিএসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অল্প সমস্যা হলেই মানসিকভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ে ফলে তারা পরিস্থিতি সহজে মানিয়ে নিতে পারে না।
এ ছাড়া খাদ্যাভ্যাস, অন্ত্রের প্রদাহ, অন্ত্রের সংক্রমণ, মাদক গ্রহণ, পেটের অপারেশন, বংশগত কারণ, হরমোনজনিত কারণ বিশেষ করে মহিলাদের মাসিক চক্রের সমস্যা এবং অনেক সময় এন্টিবায়োটিকসহ অনেক ওষুধ সেবনও আইবিএসের সমস্যাকে ত্বরান্বিত করে।
আইবিএস কোন বয়সে হয়
এ রোগে পুরুষ ও মহিলা উভয়ই ভুগে থাকেন। পুরুষের তুলনায় মহিলারা আনুপাতিক হারে বেশি ভুগে থাকেন। সাধারণত ১৮-৪০ বছরের মহিলা ও পুরুষের মধ্যে রোগের উপসর্গ দেখা দেয়।
উপসর্গ বা লক্ষণাবলি
পাতলা পায়খানা ও কোষ্টকাঠিন্য উভয়ই দেখা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কিছু দিন কোষ্টকাঠিন্য আবার কিছু দিন পাতলা পায়খানা হচ্ছে। তবে কোনটি বেশি হচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে আইবিএসকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়। কোষ্টকাঠিন্য প্রধান এবং আমাশয় প্রধান। এসব ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত উপসর্গাদি দেখা যায়।
পেটে ভুটভাট শব্দ হয়।
যাদের কোষ্টকাঠিন্য তাদের পেট ব্যথার সাথে ছোট ছোট কষ্টকর মলত্যাগ।
আমাশয় প্রধান আইবিএসে ঘন ঘন কিন্তু অল্প পরিমাণ পায়খানা হয়। এ ক্ষেত্রে ওজন ঠিক থাকে। আর মলের সাথে আম যায়। রক্ত যায় না।
খাদ্য গ্রহণের পরে পেটে অশান্তি বোধ এবং পেট ফুলে যায়।।
ডায়রিয়া সাধারণত সকালে মলত্যাগের সময় হয়ে থাকে।
পিচ্ছিল পদার্থ যা চর্বিযুক্ত মলত্যাগ।
মলত্যাগের পর ও মলত্যাগের ইচ্ছা অনুভব।
এ সমস্যাগুলো ৬ মাসের বেশি সময় থাকলে চিকিৎসকরা আইবিএস হয়েছে বলে সন্দেহ করেন। এ ছাড়াও যাদের এ সমস্যা আছে, তারা পোলাও, কোর্মা, বিরিয়ানি, তেহারি ইত্যাদি তেলযুক্ত খাবার এবং দুধ, দই, দুধ-চা, পায়েস, সেমাই ইত্যাদি খাবার খেলেই পেট খারাপ হয়ে পড়ে। আমাদের দেশে লিভার সেন্টারের গবেষণা হতে দেখা গেছে, যেসব রোগীর দীর্ঘমেয়াদি লিভার প্রদাহ থাকে এবং ফ্যাটি লিভার থাকে তাদের অধিকাংশই কোনো না কোনো সময় আইবিএসে আক্রান্ত হয়। আবার যেসব রোগীর পায়খানার অভ্যাসের পরিবর্তন, পেট ফোলা, পেটে ব্যথা, পেটে শব্দ, খাদ্য হজমে সমস্যা নিয়ে আসে তাদের অধিকাংশই পরবর্তীতে লিভার সিরোসিস ধরা পড়ে।
বলা বাহুল্য, বমিভাব, বমি, ঢেঁকুর ওঠা, ক্ষুধামন্দা, ঘাম হওয়া, মাথাব্যথা, অনিদ্রা, জ্ঞান হারানো, রক্ত মিশ্রিত পায়খানা এগুলো আইবিএসের উপসর্গ হিসেবে সুনির্দিষ্ট নয়। উপসর্গগুলো কয়েক দিন, কয়েক সপ্তাহ, কয়েক মাসও থাকতে পারে। যদিও উপসর্গগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে ঘটে থাকে।
রোগ নির্ণয়
আইবিএস সাধারণত উপসর্গের ওপর ভিত্তি করে নির্ণয় করা হয়। তবে আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য নিম্নোক্ত পরীক্ষাগুলো করা প্রয়োজন।
*মল পরীক্ষা
*পেটের এক্স-রে
*রক্ত পরীক্ষা
*বেরিয়াম এনেমা
*কলোনোস্কোপি ইত্যাদি।
চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা
আইবিএস সাধারণত উপসর্গভিত্তিক রোগ আর এর চিকিৎসাও উপসর্গানুসারে প্রদান করা হয়। আইবিএসের উপসর্গগুলো কমানোর জন্য বাজারে নানা রকম ওষুধ আছে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কোনো ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।।
ওষুধ খাওয়ার আগে আপনার রোগ সম্পর্কে চিকিৎসকের কাছে বিস্তারিত বলুন।
আইবিএস একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ।
খাদ্যভ্যাস : আঁশযুক্ত খাবার আইবিএসকে প্রতিহত করে। ধীরে ধীরে আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
শাকজাতীয় যেসব খাবার গ্যাস উদ্রেক করে তা বর্জন করতে হবে।
দুধ ও দুধ জাতীয় খাবার রোগীর উপসর্গ বাড়িয়ে দেয়। তাই এগুলো পরিহার করতে হবে।
চর্বিযুক্ত খাবার, তৈলাক্ত খাবার ও ভাজাপোড়া খাবার বর্জন করতে হবে।
অতিরিক্ত মসলাযুক্ত ও গুরুপাক খাবার বর্জন করতে হবে।
ইসবগুলের ভূষি ও অন্য আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে।
মানসিক চাপের সাথে সম্পর্কযুক্ত :
মানসিক চাপ কমাতে হবে। সহনীয় পর্যায়ের মানসিক চাপ মানুষকে উদ্বিগ্ন করে কিন্তু অসহনীয় মানসিক চাপ মানুষকে বিষাদগ্রস্ত করে, ফলে আইবিএসের উপসর্গাদি দেখা দেয়।
আইবিএস হতে মুক্তি পেতে হলে মানসিক চাপ কমাতে হবে। দৈনন্দিন জীবনে মানসিক চাপ কমানো যায় না তবে আয়ত্তের মধ্যে রাখা সম্ভব। মানসিক চাপ কমানোর জন্য ব্যায়াম একটি উপকারী প্রভাবক। তাই ব্যায়াম করতে এবং মনকে আনন্দ ও প্রশান্তি দিতে পারে এমন কিছু করতে হবে। রিলাক্সেশন থেরাপি, হিপনোথেরাপি, বায়োফিতব্যাক মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানো সম্ভব।
আইবিএস একটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ। তাই এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য রোগীর মানসিক শক্তি ও নিয়ন্ত্রণ জীবনযাত্রায় যথেষ্ট।
>>>লেখক : হোমিও বিশেষজ্ঞ, ফোন : ০১৭১৭৪৬১৪৫০
আইবিএস কী
সিনড্রোম শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো একটি রোগের বিভিন্ন উপসর্গ। তাই আইবিএসকে পেটের বিভিন্ন উপসর্গের সংজ্ঞা হিসেবে ধরা হয়। মানবদেহে অন্ত্র ও খাদ্যনালী মাংসপেশি দ্বারা তৈরি টিউব বা নল। এই মাংসপেশির যখন অতিরিক্ত সংকোচন ও প্রসারণ হয় তখন অন্ত্রের মধ্যে থাকা ও মলের গতি ব্যাহত হয়। এরপর পালাক্রমে শুরু হয় কোষ্টকাঠিন্য বা ডায়রিয়া।
আইবিএসের কারণ কী
আইবিএসের প্রকৃত কারণ এ পর্যন্ত জানা যায়নি। অনেক কারণে এ রোগ হয় বলে চিকিৎসার আন্তর্নিহিত কারণ উদঘাটন সম্ভব হয়নি। তবে বিজ্ঞানীরা কারণও প্রভাবক হিসেবে অনেক বিষয়কে চিহ্নিত করেছেন। সেগুলোকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা :
শারীরবৃত্তীয় কারণ
এর মধ্যে অন্ত্রনালীর বেশি স্পর্শকাতরতা, অন্ত্রনালীর অস্বাভাবিক নাড়াচাড়া, এলার্জি ও ইনফেকশন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ গম ও দুধ জাতীয় খাবার সহ্যক্ষমতা কম অর্থাৎ এ জাতীয় খাবার খাওয়ার পরই আমাশয়ের সমস্যা তথা আইবিএস শুরু হয়।
মনোসামাজিক কারণ
এ সমস্যায় প্রথমেই আছে হতাশ ও দুশ্চিন্তা ইত্যাদি। এ ছাড়া অধিক মানসিক চাপ ও আইবিএসকে প্রভাবিত করে থাকে। আইবিএসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অল্প সমস্যা হলেই মানসিকভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ে ফলে তারা পরিস্থিতি সহজে মানিয়ে নিতে পারে না।
এ ছাড়া খাদ্যাভ্যাস, অন্ত্রের প্রদাহ, অন্ত্রের সংক্রমণ, মাদক গ্রহণ, পেটের অপারেশন, বংশগত কারণ, হরমোনজনিত কারণ বিশেষ করে মহিলাদের মাসিক চক্রের সমস্যা এবং অনেক সময় এন্টিবায়োটিকসহ অনেক ওষুধ সেবনও আইবিএসের সমস্যাকে ত্বরান্বিত করে।
আইবিএস কোন বয়সে হয়
এ রোগে পুরুষ ও মহিলা উভয়ই ভুগে থাকেন। পুরুষের তুলনায় মহিলারা আনুপাতিক হারে বেশি ভুগে থাকেন। সাধারণত ১৮-৪০ বছরের মহিলা ও পুরুষের মধ্যে রোগের উপসর্গ দেখা দেয়।
উপসর্গ বা লক্ষণাবলি
পাতলা পায়খানা ও কোষ্টকাঠিন্য উভয়ই দেখা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কিছু দিন কোষ্টকাঠিন্য আবার কিছু দিন পাতলা পায়খানা হচ্ছে। তবে কোনটি বেশি হচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে আইবিএসকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়। কোষ্টকাঠিন্য প্রধান এবং আমাশয় প্রধান। এসব ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত উপসর্গাদি দেখা যায়।
পেটে ভুটভাট শব্দ হয়।
যাদের কোষ্টকাঠিন্য তাদের পেট ব্যথার সাথে ছোট ছোট কষ্টকর মলত্যাগ।
আমাশয় প্রধান আইবিএসে ঘন ঘন কিন্তু অল্প পরিমাণ পায়খানা হয়। এ ক্ষেত্রে ওজন ঠিক থাকে। আর মলের সাথে আম যায়। রক্ত যায় না।
খাদ্য গ্রহণের পরে পেটে অশান্তি বোধ এবং পেট ফুলে যায়।।
ডায়রিয়া সাধারণত সকালে মলত্যাগের সময় হয়ে থাকে।
পিচ্ছিল পদার্থ যা চর্বিযুক্ত মলত্যাগ।
মলত্যাগের পর ও মলত্যাগের ইচ্ছা অনুভব।
এ সমস্যাগুলো ৬ মাসের বেশি সময় থাকলে চিকিৎসকরা আইবিএস হয়েছে বলে সন্দেহ করেন। এ ছাড়াও যাদের এ সমস্যা আছে, তারা পোলাও, কোর্মা, বিরিয়ানি, তেহারি ইত্যাদি তেলযুক্ত খাবার এবং দুধ, দই, দুধ-চা, পায়েস, সেমাই ইত্যাদি খাবার খেলেই পেট খারাপ হয়ে পড়ে। আমাদের দেশে লিভার সেন্টারের গবেষণা হতে দেখা গেছে, যেসব রোগীর দীর্ঘমেয়াদি লিভার প্রদাহ থাকে এবং ফ্যাটি লিভার থাকে তাদের অধিকাংশই কোনো না কোনো সময় আইবিএসে আক্রান্ত হয়। আবার যেসব রোগীর পায়খানার অভ্যাসের পরিবর্তন, পেট ফোলা, পেটে ব্যথা, পেটে শব্দ, খাদ্য হজমে সমস্যা নিয়ে আসে তাদের অধিকাংশই পরবর্তীতে লিভার সিরোসিস ধরা পড়ে।
বলা বাহুল্য, বমিভাব, বমি, ঢেঁকুর ওঠা, ক্ষুধামন্দা, ঘাম হওয়া, মাথাব্যথা, অনিদ্রা, জ্ঞান হারানো, রক্ত মিশ্রিত পায়খানা এগুলো আইবিএসের উপসর্গ হিসেবে সুনির্দিষ্ট নয়। উপসর্গগুলো কয়েক দিন, কয়েক সপ্তাহ, কয়েক মাসও থাকতে পারে। যদিও উপসর্গগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে ঘটে থাকে।
রোগ নির্ণয়
আইবিএস সাধারণত উপসর্গের ওপর ভিত্তি করে নির্ণয় করা হয়। তবে আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য নিম্নোক্ত পরীক্ষাগুলো করা প্রয়োজন।
*মল পরীক্ষা
*পেটের এক্স-রে
*রক্ত পরীক্ষা
*বেরিয়াম এনেমা
*কলোনোস্কোপি ইত্যাদি।
চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা
আইবিএস সাধারণত উপসর্গভিত্তিক রোগ আর এর চিকিৎসাও উপসর্গানুসারে প্রদান করা হয়। আইবিএসের উপসর্গগুলো কমানোর জন্য বাজারে নানা রকম ওষুধ আছে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কোনো ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।।
ওষুধ খাওয়ার আগে আপনার রোগ সম্পর্কে চিকিৎসকের কাছে বিস্তারিত বলুন।
আইবিএস একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ।
খাদ্যভ্যাস : আঁশযুক্ত খাবার আইবিএসকে প্রতিহত করে। ধীরে ধীরে আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
শাকজাতীয় যেসব খাবার গ্যাস উদ্রেক করে তা বর্জন করতে হবে।
দুধ ও দুধ জাতীয় খাবার রোগীর উপসর্গ বাড়িয়ে দেয়। তাই এগুলো পরিহার করতে হবে।
চর্বিযুক্ত খাবার, তৈলাক্ত খাবার ও ভাজাপোড়া খাবার বর্জন করতে হবে।
অতিরিক্ত মসলাযুক্ত ও গুরুপাক খাবার বর্জন করতে হবে।
ইসবগুলের ভূষি ও অন্য আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে।
মানসিক চাপের সাথে সম্পর্কযুক্ত :
মানসিক চাপ কমাতে হবে। সহনীয় পর্যায়ের মানসিক চাপ মানুষকে উদ্বিগ্ন করে কিন্তু অসহনীয় মানসিক চাপ মানুষকে বিষাদগ্রস্ত করে, ফলে আইবিএসের উপসর্গাদি দেখা দেয়।
আইবিএস হতে মুক্তি পেতে হলে মানসিক চাপ কমাতে হবে। দৈনন্দিন জীবনে মানসিক চাপ কমানো যায় না তবে আয়ত্তের মধ্যে রাখা সম্ভব। মানসিক চাপ কমানোর জন্য ব্যায়াম একটি উপকারী প্রভাবক। তাই ব্যায়াম করতে এবং মনকে আনন্দ ও প্রশান্তি দিতে পারে এমন কিছু করতে হবে। রিলাক্সেশন থেরাপি, হিপনোথেরাপি, বায়োফিতব্যাক মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানো সম্ভব।
আইবিএস একটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ। তাই এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য রোগীর মানসিক শক্তি ও নিয়ন্ত্রণ জীবনযাত্রায় যথেষ্ট।
>>>লেখক : হোমিও বিশেষজ্ঞ, ফোন : ০১৭১৭৪৬১৪৫০
No comments