দুই হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ (বন্যা-ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি) মোকাবেলায় বাজেট সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। যার পরিমাণ হবে ২৫ কোটি ডলার, যা (স্থানীয় মুদ্রায় প্রতি ডলার ৮০ টাকা ধরে) প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। ২৩ জুলাই বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বাজেট সহায়তার এ ঋণ প্রস্তাব নিয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তাদের সামনে একটি উপস্থাপনা দেয়া হয়। বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে এ ঋণ পাওয়া যাবে। আইডিএ থেকে নিয়মিত যে ঋণ বাংলাদেশ পায়, এ ঋণ সহায়তা তার বাইরে। ইআরডি সূত্র জানায়, বন্যা, পাহাড় ধস, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ-পরবর্তী ত্রাণ ও পুনর্বাসনে বাংলাদেশকে তাৎক্ষণিকভাবে অর্থ দিতে চায় সংস্থাটি। দুর্যোগ-পরবর্তী তাৎক্ষণিকভাবে ওষুধ ও খাদ্য আমদানি, অবকাঠামো নির্মাণসহ যে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজন থাকে, তা মেটাতে বিশ্বব্যাংকের এ তহবিল ব্যবহার করা যাবে। বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকিসূচক অনুযায়ী, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান সারা বিশ্বে ষষ্ঠ। বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩২০ কোটি ডলার বা ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ২ শতাংশ।
২০০০ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশে যত প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়েছে, তাতে সব মিলিয়ে ১ হাজার কোটি ডলার বা প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ত্রাণ, পুনর্বাসন ও পুনর্নির্মাণে এ সময়ে তহবিল মিলেছে মাত্র ২০০ কোটি ডলার। ঋণটি নিতে বাংলাদেশ রাজি থাকলে আগামী তিন বছর দেশে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে তাৎক্ষণিকভাবে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যেমন অর্থ পাওয়া যাবে, পাওয়া যাবে পুনর্বাসন প্রকল্পের জন্যও। বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে প্রস্তাবটি পাওয়ার পরপরই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগকে মতামত দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছে ইআরডি। কোন কোন দুর্যোগে বিশ্বব্যাংকের এ তহবিলের অর্থ ব্যয় করা যাবে, তা ঠিক করতে শিগগির আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকও ডাকা হবে বলে জানা গেছে। ইআরডি সূত্র জানায়, প্রতি তিন বছরের জন্য আইডিএ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সহজ শর্তের ঋণ পায় বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত আইডিএতে বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪৩০ কোটি ডলার। আগামী তিন বছরেও একই পরিমাণ বরাদ্দ থাকবে বলে জানা গেছে। তবে এ ঋণ নির্দিষ্ট প্রকল্পের বিপরীতে পায় বাংলাদেশ। এর পাশাপাশি আরও ২৫ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা হিসেবে দিতে চায় বিশ্বব্যাংক।
No comments