ভাঙনের মুখে রিপাবলিকান পার্টি!
কোটিপতি ক্যাসিনো ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদে দলীয় নির্বাচন ক্রমশ অনিবার্য হয়ে ওঠায় রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে কীভাবে ঠেকানো যায়, সেই প্রশ্নে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে। এ পর্যন্ত যতগুলো জনমত জরিপ হয়েছে, তার প্রতিটিতে সম্ভাব্য ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ট্রাম্পকে সহজেই পরাস্ত করছেন। তার চেয়েও ভয়ের কথা, জনমত জরিপ অনুসারে, ট্রাম্প দলীয় প্রার্থী হলে নভেম্বরের নির্বাচনে অনেক রিপাবলিকান সমর্থক ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন। ফলে সিনেটে রিপাবলিকানদের বর্তমান যে নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, তা ফসকে যেতে পারে। সিনেটে নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে ডেমোক্র্যাটদের দরকার চারটি অতিরিক্ত আসন। দলীয় নিয়ম অনুসারে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য বাছাইপর্বের নির্বাচনে একজন প্রার্থীর কমপক্ষে ১ হাজার ২৩৭ জন ডেলিগেটের সমর্থন প্রয়োজন। প্রায় অর্ধেক প্রাইমারি ভোটের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ৬৭৩ ডেলিগেট নিয়ে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিনেটর টেড ক্রুজের চেয়ে ২৬৩ ডেলিগেটে এগিয়ে আছেন। কাঙ্ক্ষিত ১ হাজার ২৩৭ নম্বরে পৌঁছাতে হলে ট্রাম্পকে অবশিষ্ট প্রাইমারিতে নির্ধারিত ডেলিগেটের ৫৫ শতাংশ দখল করতে হবে। ক্রুজের প্রয়োজন পড়বে ৮০ শতাংশ এবং তৃতীয় প্রার্থী গভর্নর কেইসিকের ১১২ শতাংশ। যদি কেউ নির্ধারিত সংখ্যক ডেলিগেটের সমর্থন জোগাতে ব্যর্থ হন, তাহলে জুলাই মাসে দলীয় কনভেনশনে ভোটাভুটিতে প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করতে হবে। কোনো কোনো রক্ষণশীল কৌশলবিদ মনে করছেন, সেখানেই ট্রাম্পকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো সর্বসম্মত প্রার্থী নির্বাচন সম্ভব হবে।
দলীয় নিয়ম অনুসারে, প্রথম ব্যালটের পর ডেলিগেটরা তাঁদের ইচ্ছামতো যেকোনো প্রার্থীকে সমর্থন করতে পারেন। পার্টির কোনো কোনো নেতা মনে করেন, টেবিলের নিচে আপসরফার মাধ্যমে তেমন কোনো প্রার্থী মনোনয়ন সম্ভব। তবে এর ফলে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে বিদ্রোহ দেখা দিতে পারে—এমন ভয়ের কথাও তাঁরা স্বীকার করেছেন। গত কয়েক দিনে ওয়াশিংটন ও ফ্লোরিডায় রিপাবলিকান নেতৃত্ব ও দাতাদের ভিন্ন ভিন্ন বৈঠকে এ নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। অজ্ঞাতনামা সূত্র উদ্ধৃত করে ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ওয়াশিংটনের বৈঠকে ট্রাম্পের বিকল্প হিসেবে একাধিক নাম বিবেচিত হয়। এঁদের একজন নেব্রাস্কার সিনেটর বেন সাসে। তবে সাসে নিজে এক তাৎক্ষণিক বিবৃতিতে আগ্রহী নন বলে জানিয়েছেন। ফ্লোরিডার পাম বিচে অনুষ্ঠিত আরেক গোপন বৈঠকে রিপাবলিকান দাতারা স্পিকার রায়ানের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। রাজনৈতিক ওয়েব পত্রিকা ‘পলিটিকো’ একাধিক সূত্র উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, দাতাদের অনুরোধ সত্ত্বেও স্পিকার রায়ান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগ্রহী নন। তাঁর আপত্তির মুখে কোনো কোনো দাতা হয় ক্রুজ অথবা জন কেইসিকের পেছনে জোট বাঁধার প্রস্তাব রাখেন। ট্রাম্পের প্রার্থিতার প্রতিও কোনো কোনো দাতা সমর্থনে প্রস্তুত বলে ‘পলিটিকো’ জানায়।
No comments