তালেবানের সাড়ার জন্য সরকারের অপেক্ষা
জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) কাছ থেকে জবাবের অপেক্ষায় রয়েছেন তাদের সঙ্গে সংলাপে নেতৃত্ব দেওয়া পাকিস্তান সরকারের আলোচকেরা। বিশেষ করে সংলাপের ব্যাপারে যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে জবাব প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সরকারের গঠিত কমিটির একজন সদস্য গতকাল রোববার বলেন, ‘আমরা দুটি শর্ত দিয়েছি: সংবিধানের গণ্ডির ভেতরেই সংলাপ হতে হবে এবং উপজাতি-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর জঙ্গি-প্রভাবিত এলাকাগুলোতেই তাদের ব্যাপ্তি সীমাবদ্ধ থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, বল এখন তালেবানের কোর্টে। গত বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া সংলাপের ভবিষ্যৎ এখন তালেবানের জবাবের ওপরেই নির্ভর করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংলাপ চলাকালে সংবিধানের পবিত্রতাকে সমুন্নত রাখা।’ সরকারি আলোচক দলের ওই সদস্য জানান, তালেবানের আলোচক দলের সদস্য আবদুল আজিজের ব্যাখ্যা অনুযায়ী জঙ্গিরা সংবিধান মানতে অস্বীকৃতি জানালে উদ্ভূত পরিস্থিতি সরকারকে সীমিত গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ করে ফেলবে। আলোচিত লাল মসজিদের ইমাম আবদুল আজিজ তালেবানের তিন সদস্যের আলোচক দলের অন্যতম সদস্য। গত শুক্রবার তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, সরকার যদি শরিয়া আইন চালু করতে সম্মত হয়, তবেই কেবল তালেবান আলোচনায় অংশ নেবে। তবে সরকারের ওই আলোচক বলেন,
‘আমি আশা করি, তালেবান এমন কোনো শর্ত নিয়ে আসবে না, যা শান্তি-প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করবে। উভয় পক্ষ যাতে কিছু সাধারণ ক্ষেত্র খুঁজে পায়, তালেবানকে তাদের কমিটিকে সেটাই করতে দেওয়া উচিত এবং অবশ্যই তা করতে হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, টিটিপি যদি অস্ত্রবিরতি এবং বন্দী বিনিময়ের দাবি জানায়, তবে সংলাপ অব্যাহত থাকতে পারে। প্রথম দফা সংলাপের সময় টিটিপির আলোচক দলটি সরকারি দলের এখতিয়ারের বিষয়ে পরিষ্কার বক্তব্য জানতে চায়। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী, সেনাপ্রধান ও গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রধানের সঙ্গে বৈঠকেরও দাবি জানিয়েছিল। সরকারের আলোচক দলটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ইরফান সিদ্দিকী, আফগানিস্তানে পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত রুস্তম শাহ মোহমান্দ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রহিমাতুল্লাহ ইউসুফজাই ও আইএসআইয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজর আমির খান। অন্যদিকে, টিটিপির দলটিতে আবদুল আজিজের পাশাপাশি রয়েছেন সামিউল হক ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম। পাকিস্তানে দীর্ঘদিন ধরেই জঙ্গি তৎপরতা চালাচ্ছে টিটিপি। তবে গত নভেম্বর মাসে মার্কিন চালকবিহীন বিমানের (ড্রোন) হামলায় টিটিপির প্রধান হাকিমুল্লাহ মেহসুদ নিহত হওয়ার পর থেকে জঙ্গি সংগঠনটি পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই শুরু করে। গত কয়েক মাসে তাদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু সেনাসদস্যসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পাকিস্তান সরকার তালেবানের সঙ্গে শান্তি-প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকে বিষয়টিকে বিভিন্ন মহল স্বাগত জানালেও এ নিয়ে সমালোচনাও কম নেই। ডন।
No comments