ডিগ্রির সঙ্গে লড়াই পরিশ্রমের?
কংগ্রেস ও বিজেপির রাজনৈতিক দ্বৈরথের শনিবারের শিরোনাম যদি রাহুল গান্ধী বনাম নরেন্দ্র মোদি হয়ে থাকে, রোববারে সেই পাল্লায় তৃতীয় চরিত্র হিসেবে ঢুকে পড়লেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম। ইংরেজিতে শিরোনাম হতে পারে ‘হার্ভার্ড বনাম হার্ড ওয়ার্ক’। অর্থাৎ দামি ডিগ্রির সঙ্গে পরিশ্রমের লড়াই। শনিবার মোদি ছিলেন কংগ্রেসের গড় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে, রাহুল ছিলেন মোদি-রাজ্য গুজরাটে। দুই দলের খাসতালুকে দুই শীর্ষ নেতার চাপান-উতোর উপভোগ্যতার যে পর্যায়ে পৌঁছেছিল, রোববার তা আরও উপভোগ্য হয়ে উঠল আসরে চিদাম্বরম এসে পড়ায়। উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে তামিলনাড়ু গিয়ে মোদি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে ‘রিকাউন্ট মন্ত্রী’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গতকাল চিদাম্বরম বলেন, এই রকম আরও ‘মেকি মোকাবিলার’ মাধ্যমে মোদি দেশের মানুষকে হাসাবেন। ২০০৯ সালের ভোটে শিবগঙ্গা কেন্দ্র থেকে চিদাম্বরম জিতলেও তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। প্রতিপক্ষ রিকাউন্ট বা পুনর্গণনার দাবি জানালেও তা গ্রাহ্য হয়নি। সেই প্রসঙ্গটি তুলেই মোদির কটাক্ষ। জবাবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, গণনা আসলে একবারই হয়েছিল। এটাও মোদির ‘ফেক এনকাউন্টার’। মোদির সঙ্গে চিদাম্বরমের এ ধরনের খটাখটির ইতিহাস বেশ পুরোনোই।
উন্নয়নের মডেল নিয়ে তাঁরা পরস্পরকে বিদ্রূপ করে থাকেন। সম্প্রতি ডাভোস সম্মেলনে মোদিকে কটাক্ষ করে চিদাম্বরম বলেছিলেন, মোদির অর্থনীতির জ্ঞানের বহর একটা ডাকটিকিটের পেছনে লিখে ফেলা যায়। বিদ্রূপের জবাব মোদি দেন শনিবার। তিনি বলেন, এই রাজ্য থেকে আপনারাই একজন রিকাউন্ট মন্ত্রী দিয়েছেন। তিনি হার্ভার্ডের কৃতী ছাত্র। কিন্তু তাঁর ঔদ্ধত্য ও অর্থনীতি দেশকে উচ্ছন্নে পাঠিয়েছে। তুলনায় আমি গ্রামের ছেলে। চা বিক্রি করে লেখাপড়া করেছি। আমার কঠিন শ্রম দিয়ে অর্জিত জ্ঞানের মাধ্যমে গুজরাটকে উন্নত থেকে উন্নততর করেছি। গুজরাটের প্রবৃদ্ধি আজ ১০ দশমিক ১ শতাংশ, কংগ্রেসের আমলে দেশের প্রবৃদ্ধি সেখানে কমতে কমতে ৪ দশমিক ৫ শতাংশে ঠেকেছে। দেশের মানুষই ঠিক করবে, হার্ভার্ড না হার্ড ওয়ার্ক কোনটা দেশের পক্ষে প্রয়োজন। ডাকটিকিটের জবাবে এত অল্পে অবশ্য চিদাম্বরমকে ছেড়ে দেননি মোদি। তাঁর কথায়, ‘লোকটা নিজেকে সবজান্তা মনে করেন। ঈশ্বর যখন বুদ্ধি বিলি করছিলেন, তখন লাইনে সবার আগে তিনিই ছিলেন। খামের ওপর ডাকটিকিট না সাঁটলে চিঠি ডেলিভারি হয় না। ডেলিভারিটাই আসল কথা। গুজরাটে উন্নয়নের সেই ডেলিভারি আমি দিয়েছি।’
No comments