মিয়ানমারে মুসলিম হত্যা বন্ধে ওবামার আহ্বান
মিয়ানমারের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তবে তিনি সংখ্যালঘু মুসলিমদের হত্যা বন্ধে দেশটির প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গত সোমবার ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে থেইন সেইনের সঙ্গে এক বৈঠকে ওবামা এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দা সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের হত্যা বন্ধ হওয়া দরকার। জবাবে মিয়ানমারের সংস্কারবাদী প্রেসিডেন্ট সাম্প্রদায়িক হানাহানি সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, এর জন্য দায়ীদের আইনের হাতে সোপর্দ করা হবে। থেইন সেইন এক ঐতিহাসিক সফরে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। ৪৭ বছরের মধ্যে এটাই মিয়ানমারের কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর রাখাইন রাজ্যে গত বছর মুসলিম রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৌদ্ধ রাখাইনদের জাতিগত দাঙ্গায় ১৯২ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। রাখাইনদের লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা। অভিযোগ আছে, বৌদ্ধপ্রধান মিয়ানমারের প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী এসব হানাহানিতে রাখাইনদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছে। কোথাও কোথাও সরাসরি তাদের পক্ষ নিয়েছে। থেইন সেইনের সঙ্গে বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ওবামা বলেন, ‘মিয়ানমারের মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি সহিংসতার বিষয়ে আমাদের গভীর উদ্বেগের কথা আমি প্রেসিডেন্ট থেইনকে অবহিত করেছি। মুসলিমদের প্রতি সহিংস আচরণ ও তাদের ঘরবাড়ি ছাড়া করা বন্ধ হওয়া দরকার।’ ওবামা বলেন, প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন, তাঁর দেশের আরও রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন। তা ছাড়া চলমান রাজনৈতিক সংস্কারের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের নেতৃত্বের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কে পরিবর্তন এসেছে। তাঁর হাত ধরেই মিয়ানমারে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের সূচনা হয়েছে। গৃহীত জটিল সংস্কার প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে মিয়ানমারের প্রচেষ্টাকে ‘অনুধাবন ও সহায়তা’ করার জন্য থেইন সেইন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনুরোধ জানান। ছয় মুসলিমের সাজা: গত মার্চে মিয়ানমারের মিকতিলা শহরে জাতিগত দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছয় মুসলিমের সাজা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের ৩৪ বছরের সাজা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে হত্যা করেছেন। বাকি অভিযুক্তদের সাজা হয়েছে দুই বছর থেকে ১৪ বছর।
No comments