বাংলাদেশে নানা কাজে নানা স্তরে চালু আছে অনেকগুলো ভাষা। সেসব ভাষা নিয়ে এই আয়োজন- চাকমা by মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
বাংলাদেশের নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে জনসংখ্যা ও
অবস্থান বিচারে চাকমা বা চাঙমা অন্যতম। চাকমারা পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়াও
ভারতের মিজোরাম, আসাম, ত্রিপুরা ও অরুণাচল প্রদেশে বাস করে।
এ ছাড়া চাকমাদের একটি শাখা মিয়ানমারেও রয়েছে বলে জানা যায়। এরা মূলত
দইংনাক নামে পরিচিত। চাকমারা নৃতাত্ত্বিকভাবে মঙ্গোলীয়, কিন্তু তাদের ভাষা
ইন্দো-আর্য ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী
নৃ-গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে চাকমা ছাড়া একমাত্র তঞ্চঙ্গ্যাদের ভাষা এ পরিবারের
অন্তর্ভুক্ত।
প্রায় সব ভাষাতাত্ত্বিক চাকমা ভাষাকে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত করেছেন। জর্জ গ্রিয়ারসন চাকমা ভাষাকে ইন্দো-আর্য ভাষাগোষ্ঠীর প্রাচ্য শাখার দক্ষিণ-পূর্বী উপশাখার অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তিনি চাকমা ভাষাকে বলেছেন ‘ব্রোকেন ডায়ালেক্ট অব বেঙ্গলি’। তিনি আরও বলেছেন, পরবর্তীকালে ‘এই ভাষা এতদূর পরিবর্তিত হয়ে গেছে যে একে পৃথক ভাষা বলা যেতে পারে।’ ধ্বনিতাত্ত্বিক দিক থেকে চাকমা ব্যঞ্জনধ্বনি বৈচিত্র্যের সঙ্গে বাংলা ব্যঞ্জনধ্বনি বৈচিত্র্যের পার্থক্য থাকলেও অসমিয়া ভাষার উচ্চারণের সঙ্গে এর সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
চাকমা ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা রয়েছে। চাকমা হরফগুলো অনেকটা বর্মী বা খেঁর লিপির মতো। চাকমা লিপিতে লিখিত নানান পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায়। চাকমাদের প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ আঘর তারা। ১৮৬০ সালে প্রথম খ্রিষ্টান মিশনারিরা এলাহাবাদের একটি প্রেস থেকে চাকমা লিপিতে বাইবেলের অনুবাদ প্রকাশ করেন। নোয়াবাম চাকমা ১৯৫৯ সালে বাংলা ও চাকমা বর্ণে চাকমার প্রথম শিক্ষা নামে একটি শিশুপাঠ্য বই রচনা করেন। চাকমা ভাষা ও সাহিত্যের চর্চা অনেক আগে শুরু হলেও চাকমা বর্ণমালার ব্যবহার বা প্রচলন মোটামুটিভাবে সীমিত।
চাকমাদের অনেকেই এখন নিজের ভাষায় কবিতা লিখছেন। এসব কবিতার মধ্যে চাকমা ঐতিহ্য ও জীবনপ্রণালি বড় সুন্দরভাবে এসেছে। চাকমা ভাষার কবি জগৎ জ্যোতি চাকমার ‘বিযু লিরিক’ কবিতার কয়েকটি লাইন পড়া যাক: ‘বিযু এলে ঝাগেঝাক মিলি গাঙত যেং/ গোঝেনর উধিজে এগামনি ফুল-পাগর ভাজেবং।/ পিনন-খাদি পত্থম পিনি, হাত জানং ন জানং গরি,/ মনাননত লোইনেই রাঙা গাভুরান আদামর পত্থান ধরি।’ অর্থাৎ, ‘বিজু এলে সবে মিলে যাব মোরা নদীতীরে/ ফুলের ডালা ভাসাব স্রষ্টাকে উদ্দেশ করে।/ প্রথম পিনন-খাদি পরে হেঁটে বেড়াব অদক্ষ পায়ে/ রাঙা যুবতীরে বুকে লয়ে উঁচু-নিচু পথ বেয়ে।’
প্রায় সব ভাষাতাত্ত্বিক চাকমা ভাষাকে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত করেছেন। জর্জ গ্রিয়ারসন চাকমা ভাষাকে ইন্দো-আর্য ভাষাগোষ্ঠীর প্রাচ্য শাখার দক্ষিণ-পূর্বী উপশাখার অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তিনি চাকমা ভাষাকে বলেছেন ‘ব্রোকেন ডায়ালেক্ট অব বেঙ্গলি’। তিনি আরও বলেছেন, পরবর্তীকালে ‘এই ভাষা এতদূর পরিবর্তিত হয়ে গেছে যে একে পৃথক ভাষা বলা যেতে পারে।’ ধ্বনিতাত্ত্বিক দিক থেকে চাকমা ব্যঞ্জনধ্বনি বৈচিত্র্যের সঙ্গে বাংলা ব্যঞ্জনধ্বনি বৈচিত্র্যের পার্থক্য থাকলেও অসমিয়া ভাষার উচ্চারণের সঙ্গে এর সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
চাকমা ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা রয়েছে। চাকমা হরফগুলো অনেকটা বর্মী বা খেঁর লিপির মতো। চাকমা লিপিতে লিখিত নানান পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায়। চাকমাদের প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ আঘর তারা। ১৮৬০ সালে প্রথম খ্রিষ্টান মিশনারিরা এলাহাবাদের একটি প্রেস থেকে চাকমা লিপিতে বাইবেলের অনুবাদ প্রকাশ করেন। নোয়াবাম চাকমা ১৯৫৯ সালে বাংলা ও চাকমা বর্ণে চাকমার প্রথম শিক্ষা নামে একটি শিশুপাঠ্য বই রচনা করেন। চাকমা ভাষা ও সাহিত্যের চর্চা অনেক আগে শুরু হলেও চাকমা বর্ণমালার ব্যবহার বা প্রচলন মোটামুটিভাবে সীমিত।
চাকমাদের অনেকেই এখন নিজের ভাষায় কবিতা লিখছেন। এসব কবিতার মধ্যে চাকমা ঐতিহ্য ও জীবনপ্রণালি বড় সুন্দরভাবে এসেছে। চাকমা ভাষার কবি জগৎ জ্যোতি চাকমার ‘বিযু লিরিক’ কবিতার কয়েকটি লাইন পড়া যাক: ‘বিযু এলে ঝাগেঝাক মিলি গাঙত যেং/ গোঝেনর উধিজে এগামনি ফুল-পাগর ভাজেবং।/ পিনন-খাদি পত্থম পিনি, হাত জানং ন জানং গরি,/ মনাননত লোইনেই রাঙা গাভুরান আদামর পত্থান ধরি।’ অর্থাৎ, ‘বিজু এলে সবে মিলে যাব মোরা নদীতীরে/ ফুলের ডালা ভাসাব স্রষ্টাকে উদ্দেশ করে।/ প্রথম পিনন-খাদি পরে হেঁটে বেড়াব অদক্ষ পায়ে/ রাঙা যুবতীরে বুকে লয়ে উঁচু-নিচু পথ বেয়ে।’
No comments