নিজামী, মুজাহিদ আসামি- রাবিতে পুলিশের ওপর হামলা

গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশের ওপর হামলা মামলায় জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ, শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজাউল করিমসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় ৭ নেতাকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।
ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন হত্যাসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় দায়েরকৃত আরও পাঁচটি মামলায় তাঁদের পর্যায়ক্রমে আসামি করা হবে বলে জানা গেছে। এতদসংক্রান্ত আইনী প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। মামলা তদন্তের স্বার্থে জামায়াত-শিবিরের এসব কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেফতারের সম্ভাবনা রয়েছে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কর্মকর্তারা মঙ্গলবার এসব তথ্য জানান।
জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী হল শাখা শিবিরের সভাপতি ইকরাম হোসাইন এবং নগরীর ডাশমারি এলাকার জামায়াত নেতা গিয়াসউদ্দিন ওরফে কাইট্টা গিয়াস আদালতে ১৬৪ ধারায় যে জবানবন্দী দিয়েছে তা পর্যালোচনা করেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। এতদসংক্রান্ত নথি সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিহার থানার এসআই সেলিম রেজা জানান, তদন্তের প্রয়োজনে উর্ধতন কর্তৃপরে অনুমতিসাপে আসামিদের গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে তার আগে রাবি শাখা শিবিরের সভাপতি শামসুল আলম ওরফে গোলাপ এবং সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেনসহ মামলার এজাহার নামীয় আসামি, ঘটনার নেতৃত্বে থাকা আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। শিবিরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার এখন সময়ের ব্যাপার বলেও পুলিশের সংশিস্নষ্ট কর্মকর্তারা আশা করছেন। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, শিবির নেতা গোলাপ ও মোবারকসহ রাবির শীর্ষ নেতারা এখনও উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাননি। তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেয়ার ব্যাপক চেষ্টা-তদ্বির করলেও তা এখন পর্যনত্ম সফল হয়নি। রাবির শাখা শিবিরের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার ও তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে পুলিশ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতাদের সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হতে চায়।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ইতোপূর্বে গ্রেফতারকৃত জামায়াত-শিবিরের অর্ধশত নেতাকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের পর্যায়ক্রমে সকল মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আবারও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অর্থাৎ সকল মামলায় গ্রেফতারকৃতদের পর্যায়ক্রমে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।
আরএমপির মতিহার থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেন, শিবির নেতা ইকরাম হোসাইন ও জামায়াত নেতা গিয়াসউদ্দিন ওরফে কাইট্টা গিয়াস রাজশাহীর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় প্রদত্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় মদদ দেয়ার জন্য জামায়াত-শিবিরের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় ১১ নেতার উল্লেখ করেছেন। যারা বিভিন্নভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত নৃশংসতার মামলায় উস্কানি, হুকুম ও নির্দেশনা দিয়েছে। এ সম্পর্কে পুলিশ আনুষঙ্গিক তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। কিন্তু পুলিশ আরও তদন্ত, যাচাইবাছাই ও সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহের মাধ্যমে ধীরস্থিরভাবে অগ্রসর হতে চায়।

No comments

Powered by Blogger.