শেষ স্টেশনের পথে সাতপুরা
এক
হাজার কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ সাতপুরা রেলপথ ছিল ভারতের দীর্ঘতম
ন্যারো-গেজ লাইন। এই পথের ঐতিহ্যবাহী ন্যারো-গেজ ট্রেনটি বন্ধ হতে চলেছে।
স্মৃতিজাগানিয়া এ ট্রেন নিয়ে বিবিসি অনলাইনে লিখেছেন দীর্ঘদিন ভারতে
অবস্থানকারী প্রখ্যাত সাংবাদিক মার্ক টালি
ভারতে
একসময় শতাধিক ন্যারো-গেজ রেলপথ ছিল। এগুলোতে চলা রেলগাড়িকে ‘টয় ট্রেন’
বা খেলনা ট্রেনও বলেন কেউ কেউ। মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুর স্টেশনে ব্রডগেজ
লাইনের ট্রেনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আড়াই ফুট গেজের ওপর সাতপুরা ইঞ্জিনটিকে
খেলনার মতোই মনে হতো।
কিন্তু ভারতে এই ন্যারো-গেজ লাইনটি স্থাপনের উদ্দেশ্যটা ছিল খুব তাৎপর্যপূর্ণ। যাঁরা এর সুফল পেয়েছেন, তাঁদের কাছে এই ট্রেন মোটেও খেলনা গাড়ি ছিল না। ১৮৭৪ সালের মহাদুর্ভিক্ষের সময় মধ্য ভারতের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো জরুরি ছিল। এ কারণেই ব্রিটিশ সরকার সাতপুরা রেলওয়ে চালু করে। এর আগে ওই প্রত্যন্ত এলাকায় যাতায়াতের জন্য অত্যন্ত ধীর গতির মহিষের গাড়িই ছিল একমাত্র বাহন।
এখন আর দুর্ভিক্ষ নেই। সাতপুরা অঞ্চলে আধুনিক রাস্তাঘাটও নির্মিত হয়েছে। তাই ৪০ কিলোমিটার গতিবেগের ন্যারো-গেজ ট্রেন চালু রাখার প্রয়োজনও কমেছে। তবে এই রেলগাড়িতে এখনো প্রচুর যাত্রী হয়। ট্রেনের ভেতরে, খোলা দরজায়, এমনকি ছাদেও গিজগিজ করে মানুষ। কারণ—ভাড়া কম আর প্রতি স্টেশনেই ট্রেন থামে। তা ছাড়া বাসে চড়ার চেয়ে অনেকে এই পুরোনো ট্রেনেই স্বস্তি ও নিরাপদ বোধ করেন।
সাতপুরার ছোট ট্রেনটি বন্ধ হলে এর সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছুই হারিয়ে যাবে। যেমন নানা রকমের খাবার। ট্রেনেই খাওয়া হয়, আর রান্না হয় প্ল্যাটফর্মে। এই যুগের যাত্রীরা তো আগে থেকে রান্না করা খাবার আর নানা ব্র্যান্ডের স্ন্যাক্সই বেশি পছন্দ করেন, যেগুলোর প্যাকেট পরিবেশবান্ধব নয়। কিন্তু এই ‘খেলনা গাড়ি’ যখন বারগি স্টেশনে থামে, যাত্রীরা ছুটে গিয়ে কিনে আনেন হরি সিং ঠাকুরের বিখ্যাত গরম-গরম সমুচা। আরও পরে শিকারা স্টেশনে পাওয়া যায় লক্ষ্মী চাঁদ খাণ্ডেলওয়ালের দোকানের লোভনীয় মিষ্টি।
সব মিলিয়ে বহু ভারতীয়ের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই রেলপথ। আঁকাবাঁকা পথে ট্রেনটি যখন এগিয়ে যায়, চারপাশের অরণ্যের অপরূপ প্রাকৃতিক শোভা দেখার সুযোগ মেলে যাত্রীদের। হয়তো এখন ব্রডগেজ লাইন তৈরির জন্য ধ্বংস করা হবে সেখানকার পাহাড়ি সৌন্দর্য। আর দ্রুতগতির সব ট্রেন নিশ্চয়ই প্রতি স্টেশনে থামবে না, তা স্থানীয় লোকজনের যতই প্রয়োজন থাকুক।
প্রিয় এই ট্রেনের আসন্ন বিদায়ের খবর শুনে রেলকর্মীরাও অখুশি। নয়নপুর জংশনের স্টেশনমাস্টার বলছিলেন, ‘এত ব্যস্ত একটা রেলপথ কেন বন্ধ করে দিতে হবে?’ দিনে এখনো তাঁকে প্রায় ২০টি ট্রেন সামলাতে হয়।
তবে কর্তৃপক্ষ আশা করছেন, ঐতিহ্য ধরে রাখার স্বার্থে ছোট্ট একটু অংশে হলেও ন্যারো-গেজ ট্রেন চালু রাখা যাবে।
(কিছুটা সংক্ষেপিত)
কিন্তু ভারতে এই ন্যারো-গেজ লাইনটি স্থাপনের উদ্দেশ্যটা ছিল খুব তাৎপর্যপূর্ণ। যাঁরা এর সুফল পেয়েছেন, তাঁদের কাছে এই ট্রেন মোটেও খেলনা গাড়ি ছিল না। ১৮৭৪ সালের মহাদুর্ভিক্ষের সময় মধ্য ভারতের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো জরুরি ছিল। এ কারণেই ব্রিটিশ সরকার সাতপুরা রেলওয়ে চালু করে। এর আগে ওই প্রত্যন্ত এলাকায় যাতায়াতের জন্য অত্যন্ত ধীর গতির মহিষের গাড়িই ছিল একমাত্র বাহন।
এখন আর দুর্ভিক্ষ নেই। সাতপুরা অঞ্চলে আধুনিক রাস্তাঘাটও নির্মিত হয়েছে। তাই ৪০ কিলোমিটার গতিবেগের ন্যারো-গেজ ট্রেন চালু রাখার প্রয়োজনও কমেছে। তবে এই রেলগাড়িতে এখনো প্রচুর যাত্রী হয়। ট্রেনের ভেতরে, খোলা দরজায়, এমনকি ছাদেও গিজগিজ করে মানুষ। কারণ—ভাড়া কম আর প্রতি স্টেশনেই ট্রেন থামে। তা ছাড়া বাসে চড়ার চেয়ে অনেকে এই পুরোনো ট্রেনেই স্বস্তি ও নিরাপদ বোধ করেন।
সাতপুরার ছোট ট্রেনটি বন্ধ হলে এর সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছুই হারিয়ে যাবে। যেমন নানা রকমের খাবার। ট্রেনেই খাওয়া হয়, আর রান্না হয় প্ল্যাটফর্মে। এই যুগের যাত্রীরা তো আগে থেকে রান্না করা খাবার আর নানা ব্র্যান্ডের স্ন্যাক্সই বেশি পছন্দ করেন, যেগুলোর প্যাকেট পরিবেশবান্ধব নয়। কিন্তু এই ‘খেলনা গাড়ি’ যখন বারগি স্টেশনে থামে, যাত্রীরা ছুটে গিয়ে কিনে আনেন হরি সিং ঠাকুরের বিখ্যাত গরম-গরম সমুচা। আরও পরে শিকারা স্টেশনে পাওয়া যায় লক্ষ্মী চাঁদ খাণ্ডেলওয়ালের দোকানের লোভনীয় মিষ্টি।
সব মিলিয়ে বহু ভারতীয়ের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই রেলপথ। আঁকাবাঁকা পথে ট্রেনটি যখন এগিয়ে যায়, চারপাশের অরণ্যের অপরূপ প্রাকৃতিক শোভা দেখার সুযোগ মেলে যাত্রীদের। হয়তো এখন ব্রডগেজ লাইন তৈরির জন্য ধ্বংস করা হবে সেখানকার পাহাড়ি সৌন্দর্য। আর দ্রুতগতির সব ট্রেন নিশ্চয়ই প্রতি স্টেশনে থামবে না, তা স্থানীয় লোকজনের যতই প্রয়োজন থাকুক।
প্রিয় এই ট্রেনের আসন্ন বিদায়ের খবর শুনে রেলকর্মীরাও অখুশি। নয়নপুর জংশনের স্টেশনমাস্টার বলছিলেন, ‘এত ব্যস্ত একটা রেলপথ কেন বন্ধ করে দিতে হবে?’ দিনে এখনো তাঁকে প্রায় ২০টি ট্রেন সামলাতে হয়।
তবে কর্তৃপক্ষ আশা করছেন, ঐতিহ্য ধরে রাখার স্বার্থে ছোট্ট একটু অংশে হলেও ন্যারো-গেজ ট্রেন চালু রাখা যাবে।
(কিছুটা সংক্ষেপিত)
No comments