ভারতের গণমাধ্যমে মোদির বাংলাদেশ সফরের নানা দিক
বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঐতিহাসিক সফরের নানা দিক নিয়ে শিরোনাম করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম। এসব শিরোনামে বিশেষভাবে স্থল সীমান্ত চুক্তির অনুসমর্থনের দলিল বিনিময়, বাস যোগাযোগ উদ্বোধন, তিস্তা সমস্যা সমাধানে মোদির আশাব্যঞ্জক বক্তব্যসহ দু’দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো উঠে আসে। আনন্দবাজার তাদের শিরোনাম করে, ‘পদ্মা পাড়ে তিস্তার বার্তা, ছিটমহলের পথ ধরে সমাধান খুঁজছেন মোদি।’ এ প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছে, বাংলাদেশের ঘড়িতে তখন বিকাল চারটে কুড়ি। ঘড়ির সময় যা-ই বলুক, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে এ সময়টা এক নতুন সূর্যোদয়ের মুহূর্ত। অবশেষে বাস্তবায়িত হল স্থল সীমান্ত চুক্তি। দীর্ঘ ৬৮ বছর ধরে ঝুলে থাকা ছিটমহল সমস্যার সমাধান করে ফেললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক নতুন দিশা পেলেন ছিটমহলবাসী। শেখ হাসিনার কার্যালয়ের শাপলা হলে এ ঐতিহাসিক মুহূর্তকে নয়া মাত্রা দিয়ে মঞ্চে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর পাশে উপস্থিত থাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, শুধু ছিটমহল সমস্যার সমাধান নয়। এদিন আরও একটি দ্বিপাক্ষিক সমস্যা মেটার মঞ্চও প্রস্তুত করে রাখলেন নরেন্দ্র মোদি। এক রকম নিঃশব্দে তিস্তা জলবণ্টনের বিষয়টি উঠে এল। বিবৃতিতে মোদি বলেন, ‘স্থল সীমান্ত চুক্তির ক্ষেত্রে আমরা রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং পারস্পরিক সৌভ্রাতৃত্ব দেখিয়েছি। এ ব্যাপারে আমি আত্মবিশ্বাসী যে, রাজ্য সরকারগুলোর সহায়তা নিয়ে তিস্তা এবং ফেনী নদীর জলবণ্টনের সমাধানও করা যাবে।’ পত্রিকাটি সফর নিয়ে আরও অনেক শিরোনাম করেছে। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হল- ‘কোন কৌশলে মমতাকে পাশে পেলেন মোদি।’ বাস উদ্বোধন নিয়ে প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘পাশাপাশি দুই প্রধানমন্ত্রী, সঙ্গে মমতাও।’ ‘স্বাক্ষরিত হল স্থল সীমান্ত চুক্তি।’ ‘মোদির গাড়িতে সওয়ার হয়ে হাসিনার কাছে মমতা।’ ‘অনর্গল কথা, ঢাকায় মমতাই যেন সুষমা।’ প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘বিকেলে মোদির সঙ্গে বৈঠক, অথচ মমতার সঙ্গে বাংলায় অনর্গল কথা বলে চলেছেন হাসিনা। শুনছেন আর হাসছেন মোদি। একটি বাঙালি মেয়েকে অনুবাদক হিসেবে দিল্লি থেকে নিয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি কখনও সেই কথাবার্তা হিন্দিতে তর্জমা করে দিচ্ছিলেন। ঘাড় নাড়ছিলেন মোদি। সুষমা স্বরাজ যাননি, ঢাকায় মমতাই যেন বিদেশমন্ত্রী। চুক্তি পর্ব মেটার পরে মমতাকে দেখিয়ে হাসিনাকে বললেন মোদি, ‘৮০ ভাগ কাজ কিন্তু উনিই করে দিয়েছেন!’ জিনিউজ তাদের শিরোনাম করে, ‘আমি বাংলায় টুইট করি’, বাংলাদেশ সফরে বাংলায় টুইট করলেন মোদি-মমতা।’ ‘এই সময়’ পত্রিকা তাদের শিরোনাম করেছে, ‘আবার ইতিহাস ঢাকায়, স্থল সীমান্ত চুক্তি সই, রাজ্য পাশে থাকলে সমাধান হবে তিস্তারও, সফর প্রধানমন্ত্রীর, আলোয় মমতাও।’ প্রতিবেদনটিতে রাজ্যের সমর্থন নিয়ে তিস্তা ও ফেনী নদীর স্থলবণ্টন নিয়ে নিরপেক্ষ সমাধানের আশ্বাস, বাংলাদেশকে ২ বিলিয়ন ঋণ সহায়তা, বাস উদ্বোধন, বিদ্যুৎ সহায়তা, ২২ চুক্তি ও বাণিজ্য চুক্তিসহ নানা বিষয়। পত্রিকাটি আরও শিরোনাম করে, ‘বাসে উঠে দিলখোলা মেজাজে মোদি-মমতা।’ ‘মোদির উপহার।’ ‘ওরা এখন ভারতীয়, খুশির ঢেউ তেরঙায়।’ ‘মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের শ্রদ্ধার্ঘ্য প্রধানমন্ত্রীর।’ ‘বর্তমান পত্রিকা’ বিভিন্ন দিক নিয়ে শিরোনাম করেছে, ‘ঢাকায় মমতা ও হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের পরে মোদির আশ্বাস, রাজ্য চাইলেই তিস্তা চুক্তি।’ ‘মোদি-মমতা বাংলাদেশ সফর নিয়ে কটাক্ষ, বামেদের হাতুড়ির তুলনায় ফুলের আঘাত বেশি, তৃণমূল সুপ্রিমোকে তোপ রাহুলের।’
No comments