অন্তত শিশুদের কথা ভাবুন by বিমল সরকার
আজ
থেকে পঞ্চাশ বছর আগে মুখস্থ করা রামসুন্দর বসাক প্রণীত বাল্যশিক্ষা বইয়ের
একটি বাক্য আজ আমার খুব মনে পড়ছে। বাক্যটি হচ্ছে- শিশুর মুখ অতুল সুখ।
শিশুর মুখ দেখলে যে সুখানুভূতির সৃষ্টি হয়- এর বুঝি কোনো কিছুর সঙ্গেই
তুলনা চলে না। আর সেই মুখটি যদি হাসিমাখা হয়, তাহলে সুখ বা প্রশান্তির
মাত্রা কী পরিমাণ বেড়ে যায়, তা অবশ্যই অংক বা হিসাব-নিকাশ করে দেখানোর বিষয়
নয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, শিশুরা এবং তাদের কচি মুখের মধুমাখা হাসি সবার
জন্যই অনাবিল সুখ, শান্তি ও বিমল আনন্দের অপরিমেয় আধার। কিন্তু আমাদের
দেশের ক্ষমতালিপ্সু রাজনীতিকদের অদূরদর্শিতা, খামখেয়ালিপনা, সংকীর্ণ
মনোবৃত্তি, চিন্তার দৈন্য, সর্বোপরি একগুঁয়েমির জাঁতাকলে পিষ্ট হতে চলেছে
অন্য অনেক কিছুর মতো শিশুদের মুখের প্রাণোচ্ছল হাসিটুকুও! শিশু-কিশোরদের
মুখ আজ মলিন। তাদের মুখে হাসি নেই। বড়দের মতোই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ওদের মাঝেও
ভর করেছে। ছয় মাস আগে তারিখ ঘোষণা করা হলেও লাগাতার হরতালের কারণে জেএসসি ও
জেডিসি পরীক্ষার সময়সূচিতে ছন্দপতন ঘটেছে। পরীক্ষার্থী কম নয়। প্রায় ২০
লাখ। এছাড়া সামনেই রয়েছে প্রাথমিক ও এবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা। রয়েছে
মাধ্যমিক স্কুল, মাদ্রাসা এবং কারিগরি স্কুল ফাইনাল পরীক্ষা। বিরাজমান
রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে লাখ লাখ শিশু-কিশোর আজ অজানা আতংকে প্রতীক্ষার প্রহর
গুনছে। কেবল শিশু-কিশোর নয়, এরই মধ্যে শুরু হয়েছে দুই শতাধিক
সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজে কয়েক লাখ শিক্ষার্থীর
ভর্তি কার্যক্রমও। যে কোনো স্তরেরই হোক পরীক্ষার সঙ্গে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার
পাশাপাশি আশা-আকাক্সক্ষা বা আবেগ-অনুভূতিরও একটি বিষয় জড়িত থাকে। কিন্তু
রাজনীতিকদের কাণ্ডজ্ঞানের কাছে শিশু-কিশোরদের আকুতি এবং তাদের
আশা-আকাক্সক্ষা ও আবেগ-অনুভূতিটুকুও আজ ভূলুণ্ঠিত! একটি হরতালের মেয়াদ শেষ
হতে না হতেই নতুন করে হরতাল ডাকার আতংকে গোটা জাতি দিশাহারা।
পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর পূর্ব পাকিস্তান মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড স্থাপিত হলে গোটা পঞ্চাশের দশকজুড়ে এসএসসি (প্রবেশিকা) এবং সমমান পরীক্ষা গ্রহণ করতে সময় লাগত ১২-১৩ কিংবা বড়জোর ১৫ দিন। একইভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা ষাটের দশকে পৃথক পৃথক মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড স্থাপিত হলে এসবের অধীন গোটা পাকিস্তান আমলে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষা সম্পন্ন করতেও ১৫-২০ দিনের বেশি সময় কখনও লাগেনি। এছাড়া দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ছিল একটি স্বাভাবিক রেওয়াজ। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ডিগ্রি (পাস) পরীক্ষা নিতে এবং ফলাফল প্রকাশ করতেও নির্দিষ্ট সময়ের বেশি লেগেছে এমন দৃষ্টান্ত বলতে গেলে নেই। টানা নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে সঙ্গত কারণেই কিছু বিশৃংখলা দেখা দেয়। তা সত্ত্বেও শিক্ষাবোর্ডগুলো মাত্র ১৫-১৬ দিনে এসএসসি এবং ২০-২১ দিনে এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে এসবের ফলাফলও জানিয়ে দিতে পেরেছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর আমলে ১৯৭৫ সালের এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল মাত্র ১৫ দিনে (৩০ এপ্রিল থেকে ১৫ মে)।
পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর পূর্ব পাকিস্তান মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড স্থাপিত হলে গোটা পঞ্চাশের দশকজুড়ে এসএসসি (প্রবেশিকা) এবং সমমান পরীক্ষা গ্রহণ করতে সময় লাগত ১২-১৩ কিংবা বড়জোর ১৫ দিন। একইভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা ষাটের দশকে পৃথক পৃথক মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড স্থাপিত হলে এসবের অধীন গোটা পাকিস্তান আমলে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষা সম্পন্ন করতেও ১৫-২০ দিনের বেশি সময় কখনও লাগেনি। এছাড়া দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ছিল একটি স্বাভাবিক রেওয়াজ। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ডিগ্রি (পাস) পরীক্ষা নিতে এবং ফলাফল প্রকাশ করতেও নির্দিষ্ট সময়ের বেশি লেগেছে এমন দৃষ্টান্ত বলতে গেলে নেই। টানা নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে সঙ্গত কারণেই কিছু বিশৃংখলা দেখা দেয়। তা সত্ত্বেও শিক্ষাবোর্ডগুলো মাত্র ১৫-১৬ দিনে এসএসসি এবং ২০-২১ দিনে এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে এসবের ফলাফলও জানিয়ে দিতে পেরেছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর আমলে ১৯৭৫ সালের এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল মাত্র ১৫ দিনে (৩০ এপ্রিল থেকে ১৫ মে)।
No comments