ফিলিপিন্সে গণকবরের প্রস্তুতি
দানবীয় ঝড়ে বিধ্বস্ত ফিলিপিন্সের ত্যাকলোবান শহরের সরকারি ভবনের বাইরে বৃহস্পতিবার বিপুলসংখ্যক মৃতদেহ ব্যাগের মধ্যে রাখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ মৃতদেহগুলো গণকবর দেয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এদিকে ছিন্নমূল টাইফুন দুর্গতরা যে কোনো ধরনের সাহায্যের জন্য আবেদন জানাচ্ছে। ফিলিপিন্সে মধ্যাঞ্চলে দেশটির ইতিহাসের প্রলয়ংকরী ঝড়টি আঘাত হানার এক সপ্তাহ পর সরকারি ভবনটির বাইরে সারিবদ্ধভাবে প্রায় ২০০টি মৃতদেহ রাখা হয়েছে। এদের অনেকের পরিচয় জানা যায়নি। ত্যাকলোবানের মেয়র আলফ্রেড রমুয়েলদেজ বলেন, ‘অনেক এলাকায় এখনও অনেক মৃতদেহ রয়েছে।
এটা ভীতিকর।’ তিনি এএফপিকে বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) একটি এলাকার হতে ৫ থেকে ১০টি মৃতদেহ সংগ্রহ করার অনুরোধ আসে। আমরা ওই এলাকায় পৌঁছে দেখতে পাই যে, সেখানে ৪০টি মৃতদেহ রয়েছে।’ ক্রমবর্ধমান এই সংকট মোকাবেলায় সহায়তাকারী সংস্থাগুলো অত্যন্ত ধীরগতিতে কাজ করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এদিকে ফিলিপিন্সে সুপার টাইফুন হাইয়ান আঘাত হানার ছয় দিন পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আমেরিকার সাবেক এশীয় ঔপনিবেশের দুর্গতদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য মার্কিনিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছে, ফিলিপিন্সে দুর্গতদের সহায়তায় বিলম্বে হলেও তারা ত্রাণ সরবরাহ শুরু করেছে। একটি মার্কিন বিমানবাহী জাহাজ দেশটিতে পৌঁছে গেছে। এদিকে জাতিসংঘ স্বীকার করেছে যে ফিলিপিন্সে টাইফুন আঘাত হানার পর সেখানকার দুর্গত মানুষের সহায়তায় সংস্থাটি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। ফিলিপিন্সে দুর্গত ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত মানুষ এখনও কোনো সহায়তা পায়নি। ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনগুলোর মধ্যে অসুস্থ ও আহত মানুষ অসহায়ভাবে শুয়ে আছে। যাদের শরীরে শক্তি অবশিষ্ট রয়েছে তারা এই নরকতুল্য স্থান ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক সংস্থার প্রধান ভ্যালেরি আমোস বলেন, ‘পরিস্থিতি হতাশাজনক।’ বুধবার তিনি ত্যাকলোবান সফর করেন। ম্যানিলার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘যারা ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে চলে যেতে পেরেছেন, তারা চলে গেছেন।
আরও অনেকে সেখান থেকে অন্যত্র চলে যেতে চেষ্টা করছেন। মানুষ মরিয়া হয়ে সাহায্য চাইছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের তাদের কাছে এখনই সাহায্য পাঠানো উচিত। তারা এর মধ্যেই জানিয়েছেন, সেখানে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে। দ্রুত তাদের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করা আমাদের প্রথম কাজ।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেখানকার পরিবেশ ভীতিকর ও হতাশাজনক।’ বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষের এরিয়া ম্যানেজার এফরেন নাগরামা বলেন, ‘শত শত মানুষকে প্রতিদিন বিমানবন্দরে আসতে দেখবেন। মানুষ কোনো কিছু না খেয়ে কয়েকদিন ধরে হেঁটে এখানে পৌঁছেন। তাদের খাবার পেতে কয়েক ঘণ্টা এমনকি কয়েক দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ ত্রাণ সরবরাহকারী বিমান দেখতে পেলেও তাতে চড়তে বা খাবার পায় না। সেখানে বিশৃংখলা চলছে।’ মেয়র রমুয়েলদেজ বলেন, ‘আমাদের আরও লোকবল ও সরঞ্জাম প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ সকালে আমি মৃতদেহ সংগ্রহ করার জন্য কোনো ট্রাক না পেয়ে বিকেলে এটাকে আমি ত্রাণ বিতরণের কাজে ব্যবহার করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আসুন আমরা রাস্তার ওপর থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করি। এগুলো সেখানকার পরিবেশকে ভীতিকর ও হতাশাগ্রস্ত করে তুলছে।’ নগর কর্মকর্তারা জানান, তারা এ পর্যন্ত আনুমানিক দুই হাজার মৃতদেহ সংগ্রহ করেছেন। তবে তারা স্বীকার করেছেন আরও বহু মৃতদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। শুধু ত্যাকলোবান শহরেই ১০ হাজার লোক মারা গেছে বলে জাতিসংঘের আশংকা। প্রেসিডেন্ট বেনিগনো একুইনো এই সংখ্যাকে ‘অনেক বেশি’ বলে অভিহিত করেছেন।
ত্রাণ চাপে একুইনো জাহাজ পাঠাচ্ছে জাপান : প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় হাইয়ানে বিধ্বস্ত ফিলিপিন্সে দুর্গতদের ত্রাণ তৎপরতা জোরদার করা নিয়ে চাপের মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট বেনিগনো একুইনো।
ত্রাণের জন্য মরিয়া হয়ে থাকা মানুষদের জন্য দ্রুত খাবার, পানি ও ওষুধ সরবরাহ করা নিয়ে একুইনোর ওপর চাপ বাড়ছে। একইসঙ্গে স্থানীয় সরকার সচল রাখা এবং আইন-শৃংখলা বজায় রাখা নিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। বুধবার আইন-শৃংখলা রক্ষায় সেনা মোতায়েনের পরও ফিলিপাইনে চালের গুদাম ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী লুটপাট হয়েছে। ফিলিপাইনে ত্রাণ কাজের সহায়তায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার হলেও স্থানীয় পর্যায়ে পর্যাপ্ত লোকবল এবং পরিবহনের অভাবে সুষ্ঠুভাবে ত্রাণ সরবরাহ এবং উদ্ধারকাজও করা যাচ্ছে না। এসব কাজে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জর্জ ওয়াশিংটন ও অন্যান্য জাহাজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই ফিলিপিন্স উপকূলে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা। ওদিকে, জাপানও ফিলিপাইনে ত্রাণ কাজের সহায়তায় ১ হাজার সেনাসহ নৌজাহাজ ও বিমান পাঠাচ্ছে। দুর্গত মানুষদের জন্য খাবার, পানি ও ওষুধ সরবরাহের কাজে সহায়তার জন্য জাপানের সেলফ ডিফেন্স ফোর্স থেকে ফিলিপাইনে ১ হাজার সেনা পাঠানো হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইতসুনোরি ওনোনদেরা। এছাড়া জাপান এরই মধ্যে ফিলিপিন্সকে ১ কোটি ডলার তহবিল সাহায্যসহ ২৫টি জরুরি চিকিৎসাসেবা দল এবং ৫০ সেনা সহায়তা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক এ সহায়তা ত্রাণবিতরণে গতি সঞ্চার করবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোরে বিশ্বে রেকর্ডকৃত সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়গুলোর অন্যতম হাইয়ান ফিলিপিন্সের মধ্যবর্তী উপকূলীয় প্রদেশ লেইতি ও সামার এ আঘাত হানে।
ত্রাণ চাপে একুইনো জাহাজ পাঠাচ্ছে জাপান : প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় হাইয়ানে বিধ্বস্ত ফিলিপিন্সে দুর্গতদের ত্রাণ তৎপরতা জোরদার করা নিয়ে চাপের মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট বেনিগনো একুইনো।
ত্রাণের জন্য মরিয়া হয়ে থাকা মানুষদের জন্য দ্রুত খাবার, পানি ও ওষুধ সরবরাহ করা নিয়ে একুইনোর ওপর চাপ বাড়ছে। একইসঙ্গে স্থানীয় সরকার সচল রাখা এবং আইন-শৃংখলা বজায় রাখা নিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। বুধবার আইন-শৃংখলা রক্ষায় সেনা মোতায়েনের পরও ফিলিপাইনে চালের গুদাম ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী লুটপাট হয়েছে। ফিলিপাইনে ত্রাণ কাজের সহায়তায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার হলেও স্থানীয় পর্যায়ে পর্যাপ্ত লোকবল এবং পরিবহনের অভাবে সুষ্ঠুভাবে ত্রাণ সরবরাহ এবং উদ্ধারকাজও করা যাচ্ছে না। এসব কাজে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জর্জ ওয়াশিংটন ও অন্যান্য জাহাজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই ফিলিপিন্স উপকূলে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা। ওদিকে, জাপানও ফিলিপাইনে ত্রাণ কাজের সহায়তায় ১ হাজার সেনাসহ নৌজাহাজ ও বিমান পাঠাচ্ছে। দুর্গত মানুষদের জন্য খাবার, পানি ও ওষুধ সরবরাহের কাজে সহায়তার জন্য জাপানের সেলফ ডিফেন্স ফোর্স থেকে ফিলিপাইনে ১ হাজার সেনা পাঠানো হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইতসুনোরি ওনোনদেরা। এছাড়া জাপান এরই মধ্যে ফিলিপিন্সকে ১ কোটি ডলার তহবিল সাহায্যসহ ২৫টি জরুরি চিকিৎসাসেবা দল এবং ৫০ সেনা সহায়তা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক এ সহায়তা ত্রাণবিতরণে গতি সঞ্চার করবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোরে বিশ্বে রেকর্ডকৃত সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়গুলোর অন্যতম হাইয়ান ফিলিপিন্সের মধ্যবর্তী উপকূলীয় প্রদেশ লেইতি ও সামার এ আঘাত হানে।
No comments