ঢাকা ফোনের অফিস সিল, চেয়ারম্যান এমডিসহ ৫ জন জেলে- অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা

ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল (ভিওআইপি) করার দায়ে ঢাকা ফোন কোম্পানির কার্যালয় সিল করে দেয়া হয়েছে। রবিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিটিআরসি ও র‌্যাব যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে কোম্পানির চেয়ারম্যান, এমডিসহ ৫ জনকে র্যাব গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতদের সোমবার কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। ঢাকা ফোন কোম্পানি থেকে এক কোটি টাকার অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) জিয়া আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, অবৈধ ভিওআইপির সঙ্গে জড়িত যেই হোক তার বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে ঢাকা ফোন কোম্পানিতে অভিযান চালানো হয়। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ঢাকা ফোন কোম্পানির দিকে গোয়েন্দা এবং বিটিআরসির নজরদারি ছিল। উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এখানে অন্য কোন উদ্ধেশ্য নেই।
সূত্র জানিয়েছে, ২০০৪ সালে ঢাকা ফোন কোম্পানি বিটিআরসি থেকে লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে তাদের ল্যান্ডফোন গ্রাহক সংখ্যা ৭৫ হাজার ৪৬৫ জন। গত ৫ বছরে তারা গ্রাহক বৃদ্ধি প্রতি তেমন কোন আগ্রহ দেখায়নি। কারণ তারা অবৈধ ভিওআইপির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ঢাকা ফোন কোম্পানির মূল মালিক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। জোট সরকারের সময় মন্ত্রিত্বের প্রভাব খাটিয়ে নিয়ম না মেনেই বিটিআরসি থেকে ঢাকা ফোনের লাইসেন্স নিয়েছে বলে অভিয়োগ রয়েছে। জোট আমলে যে কয়জন মন্ত্রী দুর্নীতির শীর্ষে ছিলেন মির্জা আব্বাস ছিলেন সবার ওপরে। ঢাকা ফোন কোম্পানি দিয়ে তিনি কোটি কোটি টাকার ভিওআইপি করেছেন। সংসদে বিরোধীদলীয় চীফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারম্নক সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরম্নদ্ধে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করার যে অভিযোগ করেছেন তার কোন প্রমাণ ছিল না। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য এমন একটি মিথ্য বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু এখন তিনি কী বলবেন। তাঁর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের ঢাকা ফোন কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করে যাচ্ছে। তিনি কি এখন মির্জা আব্বাসের বিচার চাইবেন_ এমন প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
মির্জা আব্বাসের ঢাকা ফোন কার্যালয় রাজধানীর মহাখালী রূপায়ণ সেন্টার থেকে এক কোটি টাকার বেশি ভিওআইপি সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। টেলিকম বিশেষজ্ঞ, বিটিআরসির কর্মকর্তা ও র্যাব ঢাকা ফোনের সুইচ রম্নমে ঢুকে আইএন সার্ভার থেকে কল ডাটা বের করে ব্যাপক অনিয়ম খুঁজে পান। এতে সরকারকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার প্রমাণ মিলেছে। এরপর ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এটিএম হায়াতুজ্জামান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএম শহীদুলস্নাহ, জেনারেল ম্যানেজার (টেকনিক্যাল) হারম্নন আল আতাহার, সিনিয়র ম্যানেজার (টেকনিক্যাল) একরামুল হক এবং সিনিয়র বিলিং ম্যানেজার হরিপদ পোদ্দার অজিতকে গ্রেফতার করা হয়। বিটিআরসি ও র্যাব সদস্যরা ঢাকা ফোন কার্যালয়ে ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় অভিযান পরিচালনা করেন। পরে এ ব্যাপারে বাড্ডা থানায় মামলা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিকে সিল করে দেয়া হয়েছে বলে বিটিআরসির পৰ থেকে জানানো হয়।
এদিকে বিটিআরসির একটি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা ফোনের গ্রাহকদের নিয়ে চিনত্মা করা হচ্ছে তাদের ব্যাপারে কি করা যায়।

No comments

Powered by Blogger.