বৃটেন নিয়ে অস্বস্তি, লন্ডনে বক্তৃতা করবেন হাসিনা: দূতকে ডাকলেন উপদেষ্টা by মিজানুর রহমান
বৃটেন বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যা বললেন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বুধবারের সংবাদ ব্রিফিংয়ে কথা শুরু করেন এভাবে- ‘বৃটিশ হাইকমিশনারকে আমি ডেকেছিলাম দুটো কারণে, ছোটো ছোটো দুটো ঘটনা ঘটেছে। একটা হচ্ছে, ২ তারিখে বৃটিশ পার্লামেন্টে কয়েকজন এমপি বক্তব্য দিয়েছেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতির ওপরে এবং সেখানে কিছু মিসইনফরমেশন আছে, এটা আমি হাইকমিশনারকে জানিয়েছি এবং বলেছি যে, চারিদিকে যে তথ্যের প্রবাহ চলছে, সেটা থেকে মনে হয় যেন তারা তা নিয়েছেন। আর দুয়েকটা সংগঠন যারা কথাবার্তা বলেছেন, সেগুলো মোটামুটি বৃটেন-বেইজড। এখানে যেটা পরিস্থিতি সেটার প্রতিফলন বৃটিশ পার্লামেন্টে ঘটেনি।’ উপদেষ্টা বলেন, আমি যেটা বলেছি, পার্লামেন্ট মেম্বাররা তো যা ইচ্ছা তা বলবেন। এটাতে কারও-ই কিছু করার নাই, আমাদেরও কিছু করার নেই। কিন্তু আমাদের অবস্থানটা তারা যেন তাদের চ্যানেলে তুলে ধরেন। উনিও (বৃটিশ হাইকমিশনার) বলেছেন, আপনারা আপনাদের মিশনের মাধ্যমে জানান, আমরাও জানাবো। অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের একটা বিবৃতি এসেছে বেশ বড়সড়। সেখানে খুব দুঃখজনকভাবে যেটা এসেছে, আমি বলেছিও তাকে যে আমরা খুবই কষ্ট পেয়েছি। সেখানে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে, ৫ই আগস্টের পরে বেশি মৃত্যু হয়েছে। এ জিনিসটি পুরোপুরি মিথ্যা। ৫ই আগস্টের আগে নিহতের সংখ্যা দেখানো হয়েছে মোট ২৮০ জন! আমি বলেছি বিষয়টা মোটেও তা না। ৫ই অগাস্ট বা তার আগে অন্তত দেড় হাজার ছেলেমেয়ে মারা গেছেন। তার মধ্যে ৭৮০ জনের তো আমরা একেবারে বাই নেইম পরিচয় জানি। বাকি অনেকের পরিচিয় নিশ্চিত করা যায়নি। তবে ডেডবডি পাওয়া গেছে এবং তারা নিহত এতে কোনো সন্দেহ নেই। উপদেষ্টা বলেন, ৫ই আগস্টের পর বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু রিপোর্টটা যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে সেটা একেবারেই সঠিক নয়; বরং দুঃখজনক যে, এখানে জুলাই-আগস্ট জুড়ে এখানে এত বড় বড় ঘটনা ঘটেছে, সেটার কোনো উল্লেখ নেই তাদের রিপোর্টে। এটাও উল্লেখ নেই যে এখানে বিপুলসংখ্যক ছাত্রকে রাস্তাঘাটে গুলি করে মারা হয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি বলেছি, তারা তাদের কথা বলছেন কিন্তু আমাদের তো সত্যটা এবং বাস্তবতাটা জানাতে হবে। আমাদের অবস্থানটা ব্যাখ্যা করার সুযোগ থাকতে হবে। বৃটিশ দূতকে বলেছি আপনি একটু ব্যাখ্যা করুন আপনার সরকারের কাছে এবং আপনার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে। এটাই।’
লন্ডন সমাবেশের আয়োজক আওয়ামী লীগের নেতা যা বললেন: লন্ডন সমাবেশের বিষয়ে জানতে চাইলে আয়োজক যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বলেন, আমরা আশা করছি শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন এবং প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করবেন। তার সঙ্গে তাদের সরাসরি কথা হয়েছে কিনা? অর্থাৎ কীভাবে আমন্ত্রণ জানানো হলো? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিভিন্ন মারফতে যোগাযোগ হয়েছে। ওই সমাবেশের জন্য বৃটিশ গভর্মেন্টের অনুমতি নিয়েছেন কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, হলরুমে অনুষ্ঠানের অনুমতি লাগে না। কেবলমাত্র ১০ ডাউনিং স্ট্রিট এবং পার্লামেন্টের সামনে অনুষ্ঠান করতে অনুমতি লাগে। বাস্তবতাকে অগ্রাহ্য করে শেখ হাসিনাকে তারা এখানো কীভাবে ‘প্রধানমন্ত্রী’ বলে যে প্রচার চালাচ্ছেন? সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যমান সংবিধানে তো অন্তর্বর্তী সরকার বলে কিছু নেই। পরবর্তী নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নেয়া পর্যন্ত তারা এমনটাই বলতে চান বলে জানান ওই নেতা।
No comments