বিক্ষোভে উত্তাল দ. কোরিয়া, অভিশংসনের মুখে প্রেসিডেন্ট
প্রস্তাবটি বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের প্লেনারি অধিবেশনে উত্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে বিরোধী দলগুলো। এ প্রস্তাবের ওপর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ভোটাভুটি হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলে শুক্রবার বা শনিবার প্রস্তাবটির ওপর ভোটাভুটি হতে পারে।
প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের জন্য দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আইনপ্রণেতার ভোট প্রয়োজন হবে। দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩০০ সদস্যের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ইউনের দলের নিয়ন্ত্রণে আছে ১০৮টি আসন।
পার্লামেন্টে অভিশংসনের প্রস্তাব পাস হওয়ার পর সেটি সাংবিধানিক আদালতে যাবে। সাংবিধানিক আদালতের ৯ বিচারপতির ৬ জন যদি অভিশংসনের পক্ষে সমর্থন দেন, তবে তা কার্যকর হবে।
এদিকে সামরিক আইন জারির সব দায়দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউন। বুধবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিভ্রান্তি ছাড়ানো এবং মানসিক চাপ তৈরি করায় জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
সামরিক আইন জারি নিয়ে তুলকালাম
প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে আজও বিক্ষোভে উত্তাল ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। ভিডিওতে দেখা যায়, হাজারো বিক্ষোভকারী রাজধানী সিউলের কেন্দ্রস্থলে প্রেসিডেন্টের দপ্তরের দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া পার্লামেন্ট চত্বরে সমাবেশের আয়োজন করে বিরোধী দলগুলো।
গত মঙ্গলবার রাতে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে হঠাৎ দেশে সামরিক আইন জারি করেন প্রেসিডেন্ট ইউন। সেনারা তখন পার্লামেন্ট ভবনেও ঢুকে পড়ছিলেন। তবে আইনপ্রণেতারা তাঁদের সেই চেষ্টা রুখে দেন। সামরিক আইন জারির কয়েক ঘণ্টা পর বিক্ষোভের মুখে তা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ইউন।
সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিয়ে ইউন বলেছিলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রের দেশ উত্তর কোরিয়া ও উত্তর কোরিয়াপন্থী রাষ্ট্রবিরোধী বাহিনীগুলো থেকে দেশকে এবং অবাধ সাংবিধানিক শৃঙ্খলাকে সুরক্ষিত রাখতে সামরিক আইন জরুরি।’ তবে তিনি তখন সুনির্দিষ্ট করে কোনো হুমকির কথা উল্লেখ করেননি।
ইউনের এ ঘোষণার পরপরই সিউলে পার্লামেন্ট ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেয়। প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পার্লামেন্টের বাইরে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁদের স্লোগান দিতে শোনা যায়।
হেলমেট পরা সেনারা ভাঙা জানালা দিয়ে পার্লামেন্টে ঢুকে পড়লে এবং আকাশে সেনা হেলিকপ্টারের টহল শুরু হলে পরিস্থিতি আরও বিশৃঙ্খল হয়ে ওঠে।
এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্ট সামরিক আইন প্রত্যাহার করার জন্য সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব পাস করে। এ সময় পার্লামেন্টের ৩০০ সদস্যের মধ্যে ১৯০ জন উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ইউনের দলের ১৮ জন সদস্য ছিলেন। প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট সামরিক আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় আকস্মিক সামরিক আইন জারি করার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতে পার্লামেন্টের সামনে বিক্ষোভ করেন হাজারো মানুষ ছবি: রয়টার্স |
No comments