সিইসি’র বক্তব্যে দ্বিমত চার নির্বাচন কমিশনারের
নির্বাচনে
অনিয়ম নিয়ে সিইসি’র দেয়া বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন চার নির্বাচন কমিশনার।
তারা বলছেন, এটা সিইসি’র ব্যক্তিগত অভিমত। সিইসির এ ধরনের বক্তব্য
অনিয়মকারীদের উৎসাহ দেবে। গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনে সাংবাদিকদের এক
প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, বড় বড় নির্বাচনে অনিয়ম হবে না- এমন নিশ্চয়তা
দেয়া যায় না। সিইসি’র এ বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন মাহবুব তালুকদার।
গতকাল এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনি (সিইসি) কোন পরিপ্রেক্ষিতে কেন
এই কথা বলেছেন তা বোধগম্য নয়। এটা তার ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে। আমি
কোনোভাবেই এই বক্তব্য সমর্থন করি না। এই ধরনের বক্তব্য- যারা আগামী জাতীয়
নির্বাচনে অনিয়ম করতে চায় তাদের উস্কে দেবে। অনিয়ম করার ব্যাপারে তারা অনেক
উৎসাহ পাবে বলে আমি আশংকা করি। কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, এটা তার
ব্যক্তিগত অভিমত। আমি ওভাবে মনে করি না। আমরা শপথ নিয়েছি একটা গ্রহণযোগ্য
আইনানুগ নির্বাচন করার জন্য। এটার সঙ্গে এই বক্তব্যের কোনো মিল নাই। আমি
ওটাকে কমিশনের অভিমত বলে মেনে নিতে পারি না। নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা
খানম বলেন, সিইসির বক্তব্যের সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করি। সুষ্ঠু নির্বাচন
করার জন্যই আমি শপথ নিয়েছি। এটা কমিশনের বক্তব্য বলেও আমি মনে করি না। আমরা
যেহেতু জানি না কোন অনুষ্ঠানে তিনি এটা বলেছেন। সুতরাং এর সঙ্গে আমাদের
কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী
বলেন, আমি সিইসির বক্তব্যকে সমর্থন করি না। এটা তার ব্যক্তিগত মতামত।
কমিশনে এমন কোনো আলোচনা হয়নি। সংবিধানের আলোকে আমি শপথ নিয়েছি জেনে শুনেই
যে ভালো নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য। আমি সেটাই ধারণ করি। এদিকে সিইসির এ
বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল
কাদেরও। সিইসিকে সংযত হয়ে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। গতকাল ওবায়দুল
কাদেরের কাছে সিইসি’র বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে
তিনি বলেন, আমাদের দেশের বাস্তবতায় সিইসি হয়ত মনে করেছেন- এটাই সত্যি।
কিন্তু তার বক্তব্যে আরো সংযত হওয়া দরকার, একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে মূল
দায়িত্বে তিনি আছেন। কথাবার্তা অবশ্য তিনি ভালোই বলেন, তবে স্লিপ হতেই
পারে। আমি আশা করি তিনি ভবিষ্যতে এ ধরনের বক্তব্য দেবেন না। গত বছরের
ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করে। কুমিল্লা ও রংপুর
সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের কারণে ব্যাপক প্রশংসা
কুড়িয়েছিল কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সম্প্রতি
অনুষ্ঠিত পাঁচ সিটি নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের কারণে ইসি সমালোচনার মুখে
পড়ে। এর মধ্যে কয়েকটি সিটিতে কারচুপির অভিযোগ এনে পুনঃনির্বাচনের দাবি
জানায় বিএনপি। নির্বাচনে অনিয়মের কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিদেশিরাও।
জাতীয় নির্বাচনের আগে অনিয়মের ঘটনায় ইসির ওপর সকলের আস্থা কমছে বলে
পর্যবেক্ষণ বিশ্লেষকদের।
No comments