চট্টগ্রাম বন্দরের অগ্রগতি
শিপিং-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘লয়েডস লিস্ট’-এর তালিকা অনুযায়ী এক বছরে চট্টগ্রাম বন্দর ১১ ধাপ এগিয়েছে। এটি আনন্দের সংবাদ হলেও এই অগ্রগতি ধারাবাহিক নয়। ২০১৪ সালে যেখানে চট্টগ্রাম বন্দর আগের বছরের চেয়ে চার ধাপ এগিয়ে ৮৬তম স্থান করে নিয়েছিল, ২০১৫ সালে এক ধাপ কমে ৮৭-তে নেমে আসে। বন্দরের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৫ সালে এই বন্দর দিয়ে কনটেইনার ওঠানো-নামানো হয় ২০ লাখ ২৪ হাজার ২০৭ একক (প্রতিটি ২০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনার হিসাবে), যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১৭ শতাংশ বেশি। এ বছর আগস্ট পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ একক কনটেইনার পরিবহন করা হয়েছে। বছর শেষে তা ২৩-২৪ লাখে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা যায়। বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সেবার মান বাড়ানোর দিকেও কর্তৃপক্ষকে মনোনিবেশ করতে হবে। এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হবে এগিয়ে থাকার এই ধারাটা অব্যাহত রাখা। যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির অন্যতম পরিমাপক হলো বন্দরের পণ্য খালাসের পরিমাণ বাড়ানো।
চট্টগ্রাম বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর, যেখান দিয়ে নৌপথের ৯৭ শতাংশ পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। আশার কথা, একদা প্রায় অচল হয়ে পড়া মংলা বন্দরে পণ্য খালাসের পরিমাণ বেড়েছে। তৃতীয় সমুদ্রবন্দর পায়রা গত মাসে যাত্রা শুরু করেছে, যদিও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এখনো গড়ে তোলা যায়নি। বন্দরগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি যোগাযোগ–ব্যবস্থাও করতে হবে মসৃণ। অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষও বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করতে উৎসাহী হবে। কনটেইনার পরিবহনে বরাবরের মতো এবারও এক নম্বরে চীনের সাংহাই। দ্বিতীয় অবস্থানে সিঙ্গাপুর বন্দর থাকলেও সেরা ১০টি বন্দরের সাতটিই চীনে অবস্থিত। অতএব, চট্টগ্রাম বন্দরের এই অগ্রগতি নিয়ে আত্মসন্তুষ্টির সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। আমাদের যেতে হবে আরও বহুদূর। গভীর সমুদ্রবন্দরের বিষয়েও যত দ্রুত সম্ভব সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
No comments