জাপানের নিরাপত্তা বিল by এম বজলুর রহমান
সম্প্রতি
জাপানি পার্লামেন্টে নয়া নিরাপত্তা বিল পাস হয়েছে। এ বিলের বিরুদ্ধে
সেখানে প্রবল প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়। আর পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে সদস্যদের
মধ্যে হাতাহাতির মধ্য দিয়েই বিলটি পাস হয়। সেটি এখন উচ্চকক্ষে পাঠানো হবে।
সেখানে পাস হলে আইনে পরিণত হবে। নতুন এ আইন অনুযায়ী জাপানি সৈন্যরা অন্য
দেশের মাটিতে গিয়ে যুদ্ধ করতে পারবে। জাপানের রাজধানী টোকিওতে হাজার হাজার
মানুষ বিলটি পাস না করার দাবিতে বিক্ষোভ করেছিল। যা হোক, নিরাপত্তা বিল
নিয়ে জাপানি জনগণ এখন বিভক্ত। এক পক্ষ বিল পাসের পক্ষে, অপর পক্ষ চায় পাস
না হোক। যারা বিলের পক্ষে তারা জাপানের অতীতের মতো শৌর্য-বীর্যশালী এবং সে
সময়ের মতো জাপানকে পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চান।
জাপান উদিত সূর্যের দেশ। সূর্যের মতোই তাদের দেশ শক্তিশালী হয়ে উঠুক এ
পক্ষের আকাক্সক্ষা তাই। অতীতে জাপান ১৮৭৬ সালে কোরিয়ার বিরুদ্ধে নৌবহর
পাঠিয়ে তাদের পরাজিত করে খানহাস চুক্তি করতে বাধ্য করে। এ চুক্তির ফলে
জাপান কোরিয়ার পুশান ও জেনসান চেমিল পো বন্দরে জাপানি বাণিজ্যিক জাহাজের
বিনা শুল্কে মালামাল খালাসের অধিকার লাভ করে। তারা ১৮৯৫ সালের যুদ্ধে চীনকে
পরাজিত করে মিমোনিশিকাই চুক্তি করতে বাধ্য করে। জাপান চীনের ফরমোজা দ্বীপ
বর্তমান তাইওয়ান দখল করে নেয় এবং চীনকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে জাপানকে ২৫, ১৬০,
২৫৬ পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। ১৯০৫ সালে জাপানিরা মুকদেন যুদ্ধে রাশিয়াকে
পরাজিত করে এবং জাপান সাগরে নৌযুদ্ধেও রুশ নৌবাহিনীকে পর্যুদস্ত করে। পরে
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্টের মধ্যস্থতায় দু’পক্ষের মধ্যে
পোর্টসমাউথ চুক্তি সম্পাদিত হয়। জাপান দক্ষিণ শাখালিন, লাওটাং উপদ্বীপ,
পোর্ট আর্থার ও ডালনি বন্দরের মালিকানা লাভ করে। এভাবে জাপান বিদেশে সৈন্য
পাঠিয়ে যুদ্ধ জিতে সেসব দেশের এককভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করে অর্থনৈতিকভাবে
লাভবান হয়ে ফুলেফেঁপে ওঠে এবং দেশে বড় বড় শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।
জাপান যে শিল্পোন্নত দেশ তার মূল ভিত্তি বিদেশে সৈন্য পাঠিয়ে যুদ্ধজয়।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাপানের সামরিক বিজয় ব্রিটিশ অধিকৃত ভারত, বার্মা, মালয়, ফ্রান্স অধিকৃত ভিয়েতনাম, ডাচ অধিকৃত ইন্দোচীন প্রভৃতি দেশের জনসাধারণের ওপর প্রভাব ফেলে। এসব ছোট ছোট রাষ্ট্রের মানুষ চিন্তার জগতে আলোড়ন ওঠে এভাবে যে, তাদের মতোই ছোট দেশ জাপান যদি বৃহৎ দেশ রাশিয়াকে পরাজিত করতে পারে, তাহলে বিদেশী দখলদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমরাও স্বাধীনতা লাভ করতে পারব। চীন ও রাশিয়াকে সামরিকভাবে পরাজিত করার পর জাপানিরা বিশ্বে তাদের আর্থিক ও ভৌগোলিক সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য কূটনৈতিক ও বাণিজ্য বিস্তারের সংগ্রাম অব্যাহত রাখে। প্রথম মহাযুদ্ধে জাপান সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়নি।
প্রথম মহাযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে জাপান তার বাণিজ্যিক এবং এশিয়ায় ভৌগোলিক সাম্রাজ্য আরো বিস্তারের লক্ষ্য নিয়ে এশিয়াবাসীর মন জয়ের জন্য দি গ্রেটার ইস্ট এশিয়া কো-প্রসপারিটি ইশতেহার ঘোষণা করে এবং আংশিকভাবে হলেও ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও ডাচ অধিকৃত এলাকাগুলোর মানুষের সমর্থন লাভে সক্ষম হয়। কিন্তু জাপানিদের সামনে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায় ইংল্যান্ড ও আমেরিকার; বিশেষভাবে বিরাট বিরাট এয়ারক্রাফট কেরিয়ার, সাবমেরিন ও যুদ্ধবিমান সজ্জিত আমেরিকার বিশাল নৌবহর। এ প্রতিবন্ধকতা দূর করতেই ছয়টি যুদ্ধজাহাজ, দু’টি বিমানবাহী রণতরী, দু’টি ক্রুজার, এগারোটি ডেস্ট্রয়ার, তিনটি সাবমেরিন এবং ৩০০ যুদ্ধবিমান নিয়ে আমেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌঘাঁটি পার্ল হারবারে ১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বরে আকস্মিক হামলা চালিয়ে সেটি ধ্বংস করে দেয়। ধ্বংস হয় আমেরিকার আটটি রণপোত, ছয়টি ক্রুজার, একটি ডেস্ট্রয়ার, বেশ কিছু ছোট ছোট যুদ্ধজাহাজ এবং ২৭২টি বিমান। জাপানিদের এ সাফল্যে জাপানিরা এবং এশিয়ার ইউরোপীয় অধিকৃত এলাকার জনগণ উল্লসিত হয়। আমেরিকার সামরিক শক্তি খর্ব হয়েছে ধারণা করে জাপান এরপর ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইন্দোচীন, ভিয়েতনাম, বার্মা এবং সুভাস বোসের সহযোগিতায় ব্রিটিশ ভারতের আসামের কিয়দংশ দখল করে নেয়। এসব বিজয় জাপানিদের পৃথিবীতে এক গৌরবোজ্জ্বল স্থানে অধিষ্ঠিত করে। জাপানিদের একটি অংশ তাদের অতীত সেই গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য আবার ফিরে পেতে আগ্রহী বলে মনে হয় এবং তাই তারা নিরাপত্তা বিল পাসের পক্ষে। অপর দিকে, নিরাপত্তা বিলের বিরোধিতাকারীরা স্মরণ করছেন জাপানের গ্লানিকর পরাজয়গুলোকে। ১৯৪৩ সালের শরৎকালে সলোমন ও গিলবার্ট উপকূলে নৌ ও বিমানযুদ্ধে আমেরিকানদের কাছে পরাজিত হয়ে জাপান দ্বীপ দু’টি হারায়। প্রশান্ত মহাসাগরের আইওজিমা দ্বীপ জাপানি নৌ ও বিমানবাহিনীর এক দুর্ভেদ্য ঘাঁটি ছিল। এ ঘাঁটি আমেরিকানদের এশিয়ায় অগ্রসর হওয়ার মূল প্রতিবন্ধক ছিল। আইওজিমার যুদ্ধে জাপান আমেরিকানদের হাতে পরাস্ত হয় এবং সেখানে জাপান ২১ হাজার সৈন্য হারায়। ফিলিপাইন পুনর্দখলের জন্য এরপর মার্কিনিরা আক্রমণ করে। লুজন দ্বীপে সঙ্ঘটিত সে যুদ্ধে জাপান দ্ইু লক্ষাধিক সৈন্য হারিয়ে শোচনীয় পরাজয় বরণ করে এবং ফিলিপাইনের দখল হারায়। এরপর ওকিনাওয়া যুদ্ধেও জাপানিরা পরাজয় বরণ করে। সে যুদ্ধেও জাপানের লক্ষাধিক সৈন্য নিহত হয় এবং বন্দী হয় আরো প্রায় আট হাজার। ১৯৪৫ সালের জুন মাসে আমেরিকা বর্নিও দ্বীপ দখল করে। এর আগে মে মাসে ব্রিটিশ বাহিনী রেঙ্গুনে অবতরণ করে পুরো বার্মা দখল করে নেয়।
এভাবে জাপান যখন চূড়ান্ত পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যানের নির্দেশে ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা দ্বীপে অ্যাটম বোমা ফেলা হয়। নিহত হয় দুই লাখ সাধারণ জাপানি নাগরিক। পরপরই নাগাসাকিতে দ্বিতীয় বোমা নিক্ষেপ করে আরো এক লাখ ২০ হাজার মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে জাপান ১৯৪৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করে। ছয় বছরের যুদ্ধে জাপানের ২০ লাখ সৈন্য নিহত হয়। ১৯৪৬ সালের ৩ মে জাপান সরকারের মন্ত্রী, কর্মকর্তা ও সেনা কর্মকর্তাদের টোকিও আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হয়। যুদ্ধাপরাধের দায়ে তাদের সাতজনের মৃত্যুদণ্ড এবং আরো অনেককে সাত বছর থেকে শুরু করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। বিদেশে সৈন্য পাঠিয়ে দেশের এরকম বিপুল অর্থসম্পদ এবং লোকক্ষয়ের কথা স্মরণ করে, ভবিষ্যতে সে রকম পরিস্থিতির শিকার যেন আর হতে না হয় সে জন্য পার্লামেন্টের কিছু সদস্য নিরাপত্তা বিলের বিরোধিতা করছেন। জাপানের সাধারণ মানুষও বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন। এখন আপাতত জাপান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ বিলটি পাস করে কি না সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে। যদি পাস হয়ে যায় তাহলে জাপান কি তার অতীত পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য সেটি ব্যবহার করবে? নাকি শুধু শান্তিরক্ষার দায়িত্বের অংশ নিতে ব্যবহার করবে? তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা সময়েই জানা যাবে।
লেখক : খুলনা বারের প্রবীণ আইনজীবী ও খুলনা মহানগর বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট
রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাপানের সামরিক বিজয় ব্রিটিশ অধিকৃত ভারত, বার্মা, মালয়, ফ্রান্স অধিকৃত ভিয়েতনাম, ডাচ অধিকৃত ইন্দোচীন প্রভৃতি দেশের জনসাধারণের ওপর প্রভাব ফেলে। এসব ছোট ছোট রাষ্ট্রের মানুষ চিন্তার জগতে আলোড়ন ওঠে এভাবে যে, তাদের মতোই ছোট দেশ জাপান যদি বৃহৎ দেশ রাশিয়াকে পরাজিত করতে পারে, তাহলে বিদেশী দখলদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমরাও স্বাধীনতা লাভ করতে পারব। চীন ও রাশিয়াকে সামরিকভাবে পরাজিত করার পর জাপানিরা বিশ্বে তাদের আর্থিক ও ভৌগোলিক সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য কূটনৈতিক ও বাণিজ্য বিস্তারের সংগ্রাম অব্যাহত রাখে। প্রথম মহাযুদ্ধে জাপান সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়নি।
প্রথম মহাযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে জাপান তার বাণিজ্যিক এবং এশিয়ায় ভৌগোলিক সাম্রাজ্য আরো বিস্তারের লক্ষ্য নিয়ে এশিয়াবাসীর মন জয়ের জন্য দি গ্রেটার ইস্ট এশিয়া কো-প্রসপারিটি ইশতেহার ঘোষণা করে এবং আংশিকভাবে হলেও ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও ডাচ অধিকৃত এলাকাগুলোর মানুষের সমর্থন লাভে সক্ষম হয়। কিন্তু জাপানিদের সামনে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায় ইংল্যান্ড ও আমেরিকার; বিশেষভাবে বিরাট বিরাট এয়ারক্রাফট কেরিয়ার, সাবমেরিন ও যুদ্ধবিমান সজ্জিত আমেরিকার বিশাল নৌবহর। এ প্রতিবন্ধকতা দূর করতেই ছয়টি যুদ্ধজাহাজ, দু’টি বিমানবাহী রণতরী, দু’টি ক্রুজার, এগারোটি ডেস্ট্রয়ার, তিনটি সাবমেরিন এবং ৩০০ যুদ্ধবিমান নিয়ে আমেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌঘাঁটি পার্ল হারবারে ১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বরে আকস্মিক হামলা চালিয়ে সেটি ধ্বংস করে দেয়। ধ্বংস হয় আমেরিকার আটটি রণপোত, ছয়টি ক্রুজার, একটি ডেস্ট্রয়ার, বেশ কিছু ছোট ছোট যুদ্ধজাহাজ এবং ২৭২টি বিমান। জাপানিদের এ সাফল্যে জাপানিরা এবং এশিয়ার ইউরোপীয় অধিকৃত এলাকার জনগণ উল্লসিত হয়। আমেরিকার সামরিক শক্তি খর্ব হয়েছে ধারণা করে জাপান এরপর ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইন্দোচীন, ভিয়েতনাম, বার্মা এবং সুভাস বোসের সহযোগিতায় ব্রিটিশ ভারতের আসামের কিয়দংশ দখল করে নেয়। এসব বিজয় জাপানিদের পৃথিবীতে এক গৌরবোজ্জ্বল স্থানে অধিষ্ঠিত করে। জাপানিদের একটি অংশ তাদের অতীত সেই গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য আবার ফিরে পেতে আগ্রহী বলে মনে হয় এবং তাই তারা নিরাপত্তা বিল পাসের পক্ষে। অপর দিকে, নিরাপত্তা বিলের বিরোধিতাকারীরা স্মরণ করছেন জাপানের গ্লানিকর পরাজয়গুলোকে। ১৯৪৩ সালের শরৎকালে সলোমন ও গিলবার্ট উপকূলে নৌ ও বিমানযুদ্ধে আমেরিকানদের কাছে পরাজিত হয়ে জাপান দ্বীপ দু’টি হারায়। প্রশান্ত মহাসাগরের আইওজিমা দ্বীপ জাপানি নৌ ও বিমানবাহিনীর এক দুর্ভেদ্য ঘাঁটি ছিল। এ ঘাঁটি আমেরিকানদের এশিয়ায় অগ্রসর হওয়ার মূল প্রতিবন্ধক ছিল। আইওজিমার যুদ্ধে জাপান আমেরিকানদের হাতে পরাস্ত হয় এবং সেখানে জাপান ২১ হাজার সৈন্য হারায়। ফিলিপাইন পুনর্দখলের জন্য এরপর মার্কিনিরা আক্রমণ করে। লুজন দ্বীপে সঙ্ঘটিত সে যুদ্ধে জাপান দ্ইু লক্ষাধিক সৈন্য হারিয়ে শোচনীয় পরাজয় বরণ করে এবং ফিলিপাইনের দখল হারায়। এরপর ওকিনাওয়া যুদ্ধেও জাপানিরা পরাজয় বরণ করে। সে যুদ্ধেও জাপানের লক্ষাধিক সৈন্য নিহত হয় এবং বন্দী হয় আরো প্রায় আট হাজার। ১৯৪৫ সালের জুন মাসে আমেরিকা বর্নিও দ্বীপ দখল করে। এর আগে মে মাসে ব্রিটিশ বাহিনী রেঙ্গুনে অবতরণ করে পুরো বার্মা দখল করে নেয়।
এভাবে জাপান যখন চূড়ান্ত পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যানের নির্দেশে ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা দ্বীপে অ্যাটম বোমা ফেলা হয়। নিহত হয় দুই লাখ সাধারণ জাপানি নাগরিক। পরপরই নাগাসাকিতে দ্বিতীয় বোমা নিক্ষেপ করে আরো এক লাখ ২০ হাজার মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে জাপান ১৯৪৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করে। ছয় বছরের যুদ্ধে জাপানের ২০ লাখ সৈন্য নিহত হয়। ১৯৪৬ সালের ৩ মে জাপান সরকারের মন্ত্রী, কর্মকর্তা ও সেনা কর্মকর্তাদের টোকিও আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হয়। যুদ্ধাপরাধের দায়ে তাদের সাতজনের মৃত্যুদণ্ড এবং আরো অনেককে সাত বছর থেকে শুরু করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। বিদেশে সৈন্য পাঠিয়ে দেশের এরকম বিপুল অর্থসম্পদ এবং লোকক্ষয়ের কথা স্মরণ করে, ভবিষ্যতে সে রকম পরিস্থিতির শিকার যেন আর হতে না হয় সে জন্য পার্লামেন্টের কিছু সদস্য নিরাপত্তা বিলের বিরোধিতা করছেন। জাপানের সাধারণ মানুষও বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন। এখন আপাতত জাপান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ বিলটি পাস করে কি না সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে। যদি পাস হয়ে যায় তাহলে জাপান কি তার অতীত পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য সেটি ব্যবহার করবে? নাকি শুধু শান্তিরক্ষার দায়িত্বের অংশ নিতে ব্যবহার করবে? তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা সময়েই জানা যাবে।
লেখক : খুলনা বারের প্রবীণ আইনজীবী ও খুলনা মহানগর বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট
No comments