আসাদকে সিরিয়ার ক্ষমতা ছাড়তেই হবে : সৌদি
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে বলে ফের হুশিয়ারি দিয়েছে সৌদি আরব। সে সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত ইরানকেও মেনে নিতে হবে জানিয়েছে তারা। সিরিয়ার চলমান সংকট নিরসনে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় শুক্রবার ১৭ জাতি আলোচনার প্রাক্কালে সৌদি আরব এই মন্তব্য করল। সিরিয়ার চলমান সংকট নিরসনের লক্ষ্যে জাতিসংঘের উদ্যোগে এ ধরনের বৈঠকে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করছে ইরান। বৈঠকে ইরান ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সৌদি আরব, ফ্রান্স, জার্মানি, মিসর, রাশিয়া, জর্ডান, ব্রিটেন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, লেবানন, ওমান ও চীনসহ ১৭টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করছেন। সে সঙ্গে আলোচনায় যোগ দিয়েছেন জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরাও। তবে বৈঠকে সিরিয়ার কোনো প্রতিনিধি নেই। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ একদিনের এ বৈঠকে ইরানি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। শুক্রবারের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরুর আগে বৃহস্পতিবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জারিফ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী যথাক্রমে জন কেরি ও লাভরভের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর আগে জাতিসংঘের উদ্যোগে দুইবার সিরিয়াবিষয়ক আন্তর্জাতিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেনেভা-১ ও জেনেভা-২ নামের ওই দুই বৈঠক সিরিয়া সংকটের সমাধান করতে পারেনি। সম্মেলনে তেহরানের উপস্থিতি বিশ্ববাসীকে আশাবাদী করে তুলেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সিরিয়ায় দীর্ঘ চার বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধ বন্ধে ইরান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন সম্মেলনে ইরানকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সংকট সমাধানে বিশ্ব শক্তিগুলোর প্রতি নেতৃত্বসুলভ এবং নমনীয় আচরণ প্রদর্শন করতে হবে। তিনি বলেন, পাঁচ পরাশক্তির কাছে আমার আহ্বান, তারা নিজেদের জাতীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে নেতৃত্বসুলভ ও নমনীয় আচরণ করবেন। নিজেদের কথা ভেবে আলোচনা দীর্ঘায়িত করলে, সিরিয়া এবং বিশ্ববাসীর ভোগান্তি বাড়বে। লন্ডনের এসওএএস ইউনিভার্সিটির গবেষক লিনা খতিব আল জাজিরাকে বলেন, তেহরান এ ধরনের আলোচনায় অংশ নিচ্ছে, এটা খুবই ভালো খবর। এখন তো সবাই বুঝতে পারছে যে, সামরিক শক্তি দিয়ে সিরিয়া সমস্যা মোকাবিলা করা যাবে না। এ গৃহযুদ্ধ সামাল দিতে হলে বিবাদমান সব পক্ষকে আলোচনার টেবিলে কথা বলতে হবে, ছাড় দিতে হবে। তবে সিরিয়ার বিরোধী দলগুলো এ আলোচনায় অংশ না নেয়ায় আশাহত তিনি। সিরিয়ায় ২০১১ সালের মার্চ মাস থেকে গৃহযুদ্ধ চলছে। এ যুদ্ধে এ পর্যন্ত দুই লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং ১০ লাখের বেশি লোক আহত হয়েছে। এছাড়া, শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে ৭৬ লাখ সিরীয়বাসী। জাতিসংঘ বলেছে, সিরিয়ার অন্তত এক কোটি ২২ লাখ মানুষের জরুরি মানবিক সাহায্য প্রয়োজন। এসব মানুষের মধ্যে রয়েছে ৫৬ লাখ শিশু। এএফপি।
No comments