‘ঘুম থেকে জেগে দেখি খুন হয়ে গেছি’ -আহমেদুর রশীদ টুটুল by কাজী আনিছ
আহমেদুর রশীদ টুটুল |
‘ঘুম
থেকে জেগে দেখি খুন হয়ে গেছি। কারা কারা যেন আমার কবজি দিয়ে বানানো
কাবাবের দিকে তাকিয়ে কাটা চামচ খুঁজছে। কবজির পাশে ওয়াইনে ভিজিয়ে রেখেছে
আমার স্বপ্নাকাতুর চোখ।...’
গত ৯ জুলাই ফেসবুকে এভাবেই আতঙ্ক আর বীভৎসতার কথা লিখেছিলেন শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর কর্ণধার আহমেদুর রশীদ টুটুল। চার মাস পর আজ শনিবার তিনি প্রায় সেই বীভৎসতার মুখোমুখি। সত্যি সত্যিই আজ তাঁর হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত। মাথা রক্তাক্ত। আজ লালমাটিয়ায় তাঁর কার্যালয়ে ঢুকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে তাঁকে আহত করেছে। আহত করেছে সঙ্গে থাকা আরও দুজনকে।
এ তিনজন যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তখন খবর এল জাগৃতির প্রকাশক ফয়সাল আরেফীন দীপনের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা। বিকেল পাঁচটার দিকে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে ফয়সালের এক আত্মীয় প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফয়সাল ফোন ধরছেন না। রাজধানীর আজিজ সুপার মার্কেটে তাঁর প্রতিষ্ঠানটিও বন্ধ। অথচ ভেতরে চলছে ফ্যান ও লাইট।’
খোঁজ নেওয়া হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হদিস মেলেনি। এরপর ফয়সালের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। কিছুক্ষণ পর জানা গেল, ফয়সাল আর নেই। প্রতিষ্ঠানে ঢুকে দুর্বৃত্তরা তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। যাওয়ার সময় দোকানের দরজাও বন্ধ করে গেছে। রক্তাক্ত উদ্ধার করে ফয়সালকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আহমেদুর ও ফয়সাল দুজনই বইয়ের প্রকাশক। তাঁরা দুজনই দুর্বৃত্তদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হওয়া বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশ করেছেন। তাই আহমেদুরের ওপর হামলার পর ফয়সালের হদিস না পাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন স্বজনেরা। তাঁদের উদ্বেগ করুণভাবেই সত্য হয়ে গেল।
বই প্রকাশনা ছাড়াও ব্লগে লেখালেখি করেন আহমেদুর। তবে আতঙ্ক, প্রতিবাদ, ক্ষোভ ও হতাশার সবকিছুই তিনি প্রকাশ করেছেন ফেসবুকে। ‘আতঙ্কিত’ হওয়ার পাশাপাশি ফেসবুকেই আহমেদুরকে দেখা গেছে প্রতিবাদী ভূমিকায়। তিনি লিখেছেন অভিজিৎকে নিয়ে, অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড নিয়ে। দিয়েছেন বই মেলায় অভিজিতের সঙ্গে কাটানো শেষ মুহূর্তের বিভিন্ন ছবিও। অভিজিৎসহ বিভিন্ন ব্লগার খুনের ঘটনায় প্রকাশ করেছেন তীব্র ক্ষোভ।
১৫ অক্টোবর আহমেদুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘লেখক খুন, ধর্মীয় উন্মাদনা ইত্যাদি ঘটনার প্রতিবাদে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের লেখকেরা তাদের অর্জিত পুরস্কার এবং সম্মাননা ফিরিয় দিয়ে, প্রত্যাখ্যান করে বিবেকের কাছে দায়বদ্ধতার নজির স্থাপন করেছেন।...বাংলাদেশে গত তিন বছরে শুধু লেখার জন্য খুন হয়েছেন বেশ কয়েকজন লেখক। অনেক লেখক খুনের হুমকি নিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। গেল ফেব্রুয়ারিতে বইমেলায় প্রকাশ্যে অভিজিৎ রায় নিহত হওয়ার পর আমাদের বেশির ভাগ পরিচিত লেখকই মুখ খোলেননি, প্রতিবাদ জানাননি। রাজিব হায়দার, ওয়াশিকুর রহমান, অনন্ত বিজয় দাশ, নীলাদ্রি নীল: এদের কারওর জন্যই যাদের করার কথা, তারা কেউ এমন কিছু করেননি যাতে রাষ্ট্রের এবং সমাজের টনক নড়তে পারে। এ দীনতা লজ্জার, খুব আতঙ্কের...’
গত ৯ জুলাই ফেসবুকে এভাবেই আতঙ্ক আর বীভৎসতার কথা লিখেছিলেন শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর কর্ণধার আহমেদুর রশীদ টুটুল। চার মাস পর আজ শনিবার তিনি প্রায় সেই বীভৎসতার মুখোমুখি। সত্যি সত্যিই আজ তাঁর হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত। মাথা রক্তাক্ত। আজ লালমাটিয়ায় তাঁর কার্যালয়ে ঢুকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে তাঁকে আহত করেছে। আহত করেছে সঙ্গে থাকা আরও দুজনকে।
এ তিনজন যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তখন খবর এল জাগৃতির প্রকাশক ফয়সাল আরেফীন দীপনের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা। বিকেল পাঁচটার দিকে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে ফয়সালের এক আত্মীয় প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফয়সাল ফোন ধরছেন না। রাজধানীর আজিজ সুপার মার্কেটে তাঁর প্রতিষ্ঠানটিও বন্ধ। অথচ ভেতরে চলছে ফ্যান ও লাইট।’
খোঁজ নেওয়া হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হদিস মেলেনি। এরপর ফয়সালের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। কিছুক্ষণ পর জানা গেল, ফয়সাল আর নেই। প্রতিষ্ঠানে ঢুকে দুর্বৃত্তরা তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। যাওয়ার সময় দোকানের দরজাও বন্ধ করে গেছে। রক্তাক্ত উদ্ধার করে ফয়সালকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আহমেদুর ও ফয়সাল দুজনই বইয়ের প্রকাশক। তাঁরা দুজনই দুর্বৃত্তদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হওয়া বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশ করেছেন। তাই আহমেদুরের ওপর হামলার পর ফয়সালের হদিস না পাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন স্বজনেরা। তাঁদের উদ্বেগ করুণভাবেই সত্য হয়ে গেল।
বই প্রকাশনা ছাড়াও ব্লগে লেখালেখি করেন আহমেদুর। তবে আতঙ্ক, প্রতিবাদ, ক্ষোভ ও হতাশার সবকিছুই তিনি প্রকাশ করেছেন ফেসবুকে। ‘আতঙ্কিত’ হওয়ার পাশাপাশি ফেসবুকেই আহমেদুরকে দেখা গেছে প্রতিবাদী ভূমিকায়। তিনি লিখেছেন অভিজিৎকে নিয়ে, অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড নিয়ে। দিয়েছেন বই মেলায় অভিজিতের সঙ্গে কাটানো শেষ মুহূর্তের বিভিন্ন ছবিও। অভিজিৎসহ বিভিন্ন ব্লগার খুনের ঘটনায় প্রকাশ করেছেন তীব্র ক্ষোভ।
১৫ অক্টোবর আহমেদুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘লেখক খুন, ধর্মীয় উন্মাদনা ইত্যাদি ঘটনার প্রতিবাদে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের লেখকেরা তাদের অর্জিত পুরস্কার এবং সম্মাননা ফিরিয় দিয়ে, প্রত্যাখ্যান করে বিবেকের কাছে দায়বদ্ধতার নজির স্থাপন করেছেন।...বাংলাদেশে গত তিন বছরে শুধু লেখার জন্য খুন হয়েছেন বেশ কয়েকজন লেখক। অনেক লেখক খুনের হুমকি নিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। গেল ফেব্রুয়ারিতে বইমেলায় প্রকাশ্যে অভিজিৎ রায় নিহত হওয়ার পর আমাদের বেশির ভাগ পরিচিত লেখকই মুখ খোলেননি, প্রতিবাদ জানাননি। রাজিব হায়দার, ওয়াশিকুর রহমান, অনন্ত বিজয় দাশ, নীলাদ্রি নীল: এদের কারওর জন্যই যাদের করার কথা, তারা কেউ এমন কিছু করেননি যাতে রাষ্ট্রের এবং সমাজের টনক নড়তে পারে। এ দীনতা লজ্জার, খুব আতঙ্কের...’
‘জিডি’র কথা জানে না পুলিশ!
জীবননাশের হুমকি-ধমকির কথা জানিয়ে শুদ্ধস্বরের কর্ণধার আহমেদুর রশীদ টুটুল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। কিন্তু পুলিশ বলছে, তারা এ ব্যাপারে কিছু জানে না।
আজ শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে লালমাটিয়ায় প্রকাশনা সংস্থা শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে ঢুকে আহমেদুরসহ তিনজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা। তিনজনই এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালের বিছানায় আহমেদুর সাংবাদিকদের বলেন, অনেক দিন ধরেই তিনি হুমকি-ধমকি পেয়ে আসছিলেন। এ কথা বলার কিছুক্ষণ পরই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
পরে হাসপাতালে আহমেদুরের স্ত্রী শামীম রুনা সাংবাদিকদের বলেন, অনেক দিন ধরে আহমেদুরকে অনুসরণ করা হচ্ছিল। হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছিল। এ কারণে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি মোহাম্মদপুর থানায় একটি জিডি করেছিলেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জিডির কথা শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। থানার নথিপত্র ঘেঁটে দেখছি।’
পুলিশ সূত্র জানায়, মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় বিভিন্ন স্থান ভাগ করে (বিট) সেখানে নিয়মিত টহলসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করার জন্য নির্দিষ্ট করে একেকজন পুলিশ কর্মকর্তা দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ওই কর্মকর্তার সঙ্গে থাকে আরও পাঁচ ছয়জন পুলিশ। ঘটনাস্থল এলাকাটি মোহাম্মদপুরের তিন নম্বর বিট।
ঘটনার পর এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওসি জামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ওই এলাকায় ছিল বলে খবর পেয়ে অল্প সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থলে যেতে পেরেছে।
জীবননাশের হুমকি-ধমকির কথা জানিয়ে শুদ্ধস্বরের কর্ণধার আহমেদুর রশীদ টুটুল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। কিন্তু পুলিশ বলছে, তারা এ ব্যাপারে কিছু জানে না।
আজ শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে লালমাটিয়ায় প্রকাশনা সংস্থা শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে ঢুকে আহমেদুরসহ তিনজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা। তিনজনই এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালের বিছানায় আহমেদুর সাংবাদিকদের বলেন, অনেক দিন ধরেই তিনি হুমকি-ধমকি পেয়ে আসছিলেন। এ কথা বলার কিছুক্ষণ পরই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
পরে হাসপাতালে আহমেদুরের স্ত্রী শামীম রুনা সাংবাদিকদের বলেন, অনেক দিন ধরে আহমেদুরকে অনুসরণ করা হচ্ছিল। হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছিল। এ কারণে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি মোহাম্মদপুর থানায় একটি জিডি করেছিলেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জিডির কথা শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। থানার নথিপত্র ঘেঁটে দেখছি।’
পুলিশ সূত্র জানায়, মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় বিভিন্ন স্থান ভাগ করে (বিট) সেখানে নিয়মিত টহলসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করার জন্য নির্দিষ্ট করে একেকজন পুলিশ কর্মকর্তা দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ওই কর্মকর্তার সঙ্গে থাকে আরও পাঁচ ছয়জন পুলিশ। ঘটনাস্থল এলাকাটি মোহাম্মদপুরের তিন নম্বর বিট।
ঘটনার পর এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওসি জামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ওই এলাকায় ছিল বলে খবর পেয়ে অল্প সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থলে যেতে পেরেছে।
No comments